ফজরের নামাজের সময় হয়ে গেছে। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এখনো মসজিদে আসেননি। ঐদিকে সূর্যও উঠে যাচ্ছে। আর দেরি করলে ওয়াক্ত চলে যাবে।
এমন সময় সাহাবীরা কী করবেন এই নিয়ে দোটানায় থাকলে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন নামাজের ইমামতি করতে।
আব্দুর রহমান ইবনে আউফ নামাজের ইমামতি করেন।
দুই রাকআত নামাজ শেষ হলো।
নামাজ শেষে সাহাবীরা পেছনে তাকিয়ে দেখলেন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামআতে এক রাকআত নামাজ মিস করেছেন, এজন্য ঐ রাকআত নামাজ পড়ার জন্য দাঁড়িয়েছেন।
সাহাবীরা ভয় পেয়ে গেলেন।
এ কী হলো?
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুক্তাদি হয়ে নামাজ পড়লেন, সাহাবী তাঁর ইমামতি করলেন!?
সাহাবীরা ভয়ে ‘সুবহানাল্লাহ’ পড়তে থাকলেন।
এদিকে আব্দুর রহমান ইবনে আউফ এতোটা বিব্রতবোধ করলেন যে, তিনি ভয়ে কাঁপছেন! এতো বড়ো দুঃসাহস দেখালেন? নবিজী ‘ওয়াশরুমে’ গিয়েছিলেন, দেরি হচ্ছে দেখে নামাজ পড়ানো শুরু করবেন?
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর এক রাকআত নামাজ শেষে সালাম ফেরালেন।
ভীত-তটস্থ সাহাবীদের অবস্থা দেখে বুঝতে পারলেন তাদেরকে সান্ত্বনা দিতে হবে।
তিনি বললেন, “(ভয় পাবার কিছু নেই) তোমরা তো সঠিক কাজই করেছো।”
সাহাবীদের মন থেকে ভীতি দূর করতে তিনি হাসলেন। হেসে বললেন, “তোমরা নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করেছো।”
এর মাধ্যমে আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রথম সাহাবী হবার মর্যাদালাভ করেন, যিনি নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্ণ এক রাকআত নামাজের ইমামতি করেছেন।
তথ্যসূত্র:
সহীহ মুসলিম, হাদীস নাম্বার ৮৩৮।
আব্দুর রহমান ইবনে আউফ ছাড়াও আরেকজন সাহাবীর পেছনে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ আদায় করেছেন। তিনি হলেন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু।
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সাথে দুইবার এমন ঘটে।
তবে, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর পেছনে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্ণ এক রাকআত নামাজ আদায় করেছেন কি-না এই নিয়ে দ্বিমত আছে। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী এটাকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।