বাচ্চাদেরকে প্রহার করা চড়-থাপ্পড় দেয়ার হুকুম
বাচ্চাদেরকে কিভাবে শাসন করা উচিত? অনেক সময় দেখা যায়, বাচ্চা খেতে চায় না বা অনেক দুষ্টামি করে তখন তাদেরকে থাপ্পর মারলে কি গুনাহ হবে?
বাচ্চাদেরকে আদব শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে তাদের পিতামাতা, বড় ভাই-বোন বা যে তাদের দেখাশোনা করে সে যদি হালকা কিছু চড়-থাপ্পর মারে বা শক্ত কথা বলে তাহলে তাতে কোন দোষ নেই যদি আশা করা যায় যে, এতে তার উপকার হবে। তাই সন্তান প্রতিপালন বিশেষজ্ঞগণ বাচ্চাদেরকে ভালোমন্দ বুঝার বয়সের (প্রায়৭/৮ বছর বয়স) আগে প্রহার করতে নিষেধ করেছেন।
কেননা, এর আগে প্রহার করা হলে তাতে কোন উপকার হয় না যেহেতু এখনও তার ভালোমন্দ বুঝার বয়স হয় নি। কেউ কেউ বলেন, ১০ বছরের আগে প্রহার করা যাবে না। কারণ হাদীসে কেবল ১০ বছরের বাচ্চাকে সালাতের জন্য প্রহার করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
যাহোক এই প্রহার হতে হবে হালকাভাবে। তা যেন তার শারীরিক ক্ষয়-ক্ষতির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।
কিন্তু দূর্ভাগ্য যে, অনেক অবিভাবক, ছোট বাচ্চাকে রাগের বশবর্তী হয়ে নির্মমভাবে প্রহার করে! অনেকে দুধের বাচ্চাকেও মারতে পিছপা থাকে না! এতে কেবল রাগের বর্হিপ্রকাশ ঘটে কিন্তু কোন উপকার হয় না।
যদি প্রহার ছাড়া অন্য কোন উপায়ে কিংবা হালকা শাস্তি দিয়ে বাচ্চাদেরকে আদব শিক্ষা দেয়া সম্ভব হয় তাহলে তাই অধিক উত্তম।
চেহারায় আঘাত করা বা প্রহার করা হারাম:
চেহারা মানুষের সবচেয়ে সংবেদনশীল ও সুন্দরতম স্থান। তাই ইসলামে যুদ্ধের ময়দানেও শত্রুর চেহারায় আঘাত করা তো দূরে থাক থাপ্পড় মারাকেও নিষেধ করা হয়েছে। যেমন সহীহ মুসলিমে হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেন:
إذا قاتل أحدُكم أخاه ، فلا يلطُمنَّ الوجهَ
“কেউ যদি তার ভায়ের সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হয় সে যেন চেহারায় থাপ্পড় না মারে।”
[সহীহ মুসলিম, হা/২৬১২]
তিনি আরও বলেছেন,
إذا قاتل أحدكم فليجتنب الوجه
“তোমাদের কেউ লড়াই করলে যেন চেহারায় আঘাত করা থেকে বিরত থাকে।”
[সহীহ বুখারী]
ইমাম নওবী রহ. বলেন, “আদব শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে স্ত্রী, সন্তান বা দাস-দাসীর চেহারায় মারাও এর অন্তর্ভূক্ত।” অর্থাৎ হারাম।
সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যা গ্রন্থ ফাতহুল বারীর গ্রন্থকার ইবনে হাজার আসকালানী বলেন, “মানুষের চেহারায় মারা হারাম।”
আল্লাহু আলাম