Q/AAbdullahil Hadi

গোপন পাপকর্ম জনসম্মুখে প্রকাশ করার ভয়াবহ পরিণতি

প্রকাশ্য পাপাচার এবং গোপন পাপকর্ম জনসম্মুখে প্রকাশ করার ১০টি ভয়াবহ পরিণতি: যা জানলে আমাদেরকে অবশ্যই নতুন করে ভাবতে হবে। মহাশক্তিধর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পূর্ববর্তী জাতিসমূহকে তাদের পাপাচারের ফলে কী ভয়ানক শাস্তি দিয়েছেন তার চিত্র ফুটে উঠেছে নিম্নোক্ত আয়াতটিতে:
আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَكُلًّا أَخَذْنَا بِذَنبِهِ ۖ فَمِنْهُم مَّنْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِ حَاصِبًا وَمِنْهُم مَّنْ أَخَذَتْهُ الصَّيْحَةُ وَمِنْهُم مَّنْ خَسَفْنَا بِهِ الْأَرْضَ وَمِنْهُم مَّنْ أَغْرَقْنَا ۚ وَمَا كَانَ اللَّـهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَـٰكِن كَانُوا أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
“আমি প্রত্যেককেই তার অপরাধের কারণে পাকড়াও করেছি। তাদের কারও প্রতি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচণ্ড ঝড়, কাউকে আঘাত করেছে বজ্র নিনাদ, কাউকে আমি বিলীন করেছি ভূগর্ভে এবং কাউকে করেছি পানিতে নিমজ্জিত। আল্লাহ তাদের প্রতি অবিচার করার ছিলেন না; কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি অবিচার (পাপাচার) করেছিলো।”
(সূরা আনকাবুত: ৪০)

আর পাপকাজ যখন প্রকাশ্যে করা হয় বা গোপনে সংগঠিত পাপাচার জনসমাজে প্রকাশ করা হয় তখন তা আল্লাহর নিকট পাপ করার চেয়েও বড় অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। তিনি এটিকে ক্ষমা করবেন না বলে ঘোষণা প্রদান করেছেন। আল্লাহ তা মোটেও পছন্দ করেন না।
আল্লাহ তাআলা বলেন:

لَّا يُحِبُّ اللَّـهُ الْجَهْرَ بِالسُّوءِ مِنَ الْقَوْلِ إِلَّا مَن ظُلِمَ ۚ وَكَانَ اللَّـهُ سَمِيعًا عَلِيمًا
“আল্লাহ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ শ্রবণকারী, বিজ্ঞ।”
(সূরা নিসা: ১৪৮)

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: ” كُلُّ أُمَّتِي مُعَافًى إِلَّا المُجَاهِرِينَ، وَإِنَّ مِنَ المُجَاهَرَةِ أَنْ يَعْمَلَ الرَّجُلُ بِاللَّيْلِ عَمَلًا، ثُمَّ يُصْبِحَ وَقَدْ سَتَرَهُ اللَّهُ عَلَيْهِ، فَيَقُولَ: يَا فُلاَنُ، عَمِلْتُ البَارِحَةَ كَذَا وَكَذَا، وَقَدْ بَاتَ يَسْتُرُهُ رَبُّهُ، وَيُصْبِحُ يَكْشِفُ سِتْرَ اللَّهِ عَنْهُ
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, “আমার সকল উম্মত মাফ পাবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয়ই পাপাচার প্রকাশের একটি দিক হল, কোনও ব্যক্তি রাতে অপরাধ করলো যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে ভোর হলে বলে বেড়াতে লাগলো, হে অমুক! আমি আজ রাতে এমন এমন কর্ম করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত অতিবাহিত করলো যে, আল্লাহ তার কর্ম গোপন রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর পর্দা খুলে ফেলল”।
(মুত্তাফাকুন আলাইহি/সহিহ বুখারী-মুসলিম)

পাপের প্রকাশ তিনভাবে ঘটে থাকে।

যথা:
ক) কোন অন্যায়-পাপকর্ম গোপনে করা। যা সে ছাড়া আর কেউ জানত না। পরে তা তার বন্ধু, সহপাঠী, সহকর্মী ও সঙ্গী-সাথীদের সাথে নিকট প্রকাশ করা বা গর্বের সাথে বলা অথবা বিভিন্ন মিডিয়া যেমন: এফএম রেডিও, ইউটিউব, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ করা।

বর্তমানে কিছু এফএম রেডিওতে ‘জীবনের গল্প’ জাতীয় অনুষ্ঠানে কিছু অর্বাচিন যুবক তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া নানা পাপাচার, অশ্লীলতা ও নোংরামির দিকগুলো খুব রঙ-রস মাখিয়ে গর্বের সাথে উপস্থাপন করে। আবার সেগুলো ইউটিউব ও ফেসবুকে ব্যাপক প্রচার করা হয়!
আফসোস এসব নির্বোধ যুবকদের জন্য!। তাদের জন্য আল্লাহর নিকট হেদায়েত কামনা করছি।

খ) পাপাচার করে অনুরূপ পাপাচার কারীদের সাথে এসব বিষয়ে আলোচনা করা।

গ) প্রকাশ্যেই পাপাচার ও অন্যায়-অপকর্ম করা। আমাদের সমাজে এর উদাহরণের অভাব নাই।
নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পাপাচারের উদাহরণ তুলে ধরা হল:

  • প্রকাশ্যে ধূমপান করা,
  • দাড়ি মুণ্ডন করা বা ছোট করা।
  • পুরুষদের টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে এবং মহিলাদের টাখনুর উপরে উঠিয়ে কাপড় পরা।
  • নারীদের পর্দাহীনতা ও সুগন্ধি মেখে বাইরে চলাফেরা করা।
  • উচ্চ আওয়াজে গান-বাজনা করা, শোনা বা বিভিন্ন কনসার্টে অংশ গ্রহণ করা।
  • নাটক, সিনেমা, পর্ণগ্রাফি, অশ্লীল ম্যাগাজিন ও পত্র-পত্রিকা।
  • স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় সহশিক্ষা এবং অফিস, আদালত ইত্যাদিতে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা।
  • সুদি ব্যাংক ও সুদি কারবারের ছড়াছড়ি।
  • তথাকথিত থার্টি ফাস্ট নাইট, ভ্যালেন্টাইন দিবস ইত্যাদি উদযাপন।
  • বিভিন্ন বার, নাইট ক্লাব, পার্ক ইত্যাদিতে প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের নোংরামি।
  • প্রকাশ্যে শিরক, বিদআত ও নানা ধরণের অপসংস্কৃতি চর্চা… ইত্যাদি।

এগুলো সব প্রকাশ্য পাপাচারের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন।

প্রকাশ্য পাপাচার এবং গোপন পাপকর্ম জনসম্মুখে প্রকাশ করার ভয়াবহ পরিণতি: (১০টি)

১) পাপাচার নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা-পর্যালোচনা করা অথবা প্রকাশ্যে পাপ ও অন্যায় করার ফলে সমাজে অশ্লীলতা, নোংরামি ও অন্যায়-অপকর্মের বিস্তার ঘটে। কেননা এর ফলে দুর্বল ঈমান ও রুগ্ন হৃদয়ের মানুষেরা পাপাচার করাকে সহজ ভাবতে শুরু করে। আল্লাহ তাআলা বলেন:

إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ
“যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতা প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।”
(সূরা নূর: ১৯)

যারা কেবল অশ্লীলতার প্রসার লাভ করাকে পছন্দ করে তাদের জন্য যদি এই শাস্তির হুমকি হয় তাহলে তারা তা প্রচারে লিপ্ত তাদের কী পরিণতি হবে তা সহজেই অনুমেয়। আল্লাহ তুমি ক্ষমা করো। আমীন।

২) এটি আল্লাহ, রাসূল এবং সৎকর্ম শীল ঈমানদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার শামিল।
যেমন: ইবনে বাত্তাল বলেন:
في الجهرِ بالمعصية استخفافٌ بحقِّ الله ورسوله، وبصالحي المؤمنين، وفيه ضرْبٌ مِن العناد لهم، وفي الستر بها السلامة من الاستخفاف
“পাপাচার প্রকাশ করার মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসূলের অধিকারকে এবং নেককার ও সৎলোকদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করাা হয়। এটা এক প্রকার ধৃষ্টতা প্রদর্শন। অথচ তা গোপন রাখা হলে হেয় প্রতিপন্ন করা থেকে রক্ষা পেত।”

৩) যে ব্যক্তি উক্ত পাপাচার সম্পর্কে জানত না তাকে পাপের রাস্তা দেখিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং যত মানুষ তার দেখানো পথে চলে অন্যায়ে জড়িত হবে কিয়ামত পর্যন্ত তাদের সমপরিমাণ গুনাহ তার আমলনামায় জমা হতে থাকবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
مَنْ سَنَّ سُنَّة سَيِّئَة فعَلَيْهِ مِثْل وِزْر كُلّ مَنْ عمل بِهَا إِلَى يَوْم الْقِيَامَة
‘‘যে ব্যক্তি কোন খারাপ কাজ (আল্লাহর নাফরমানী, পাপ, অন্যায়-অপকর্ম, বিদআত ইত্যাদি) চালু করলো কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ সে কাজ করবে তাদের সমপরিমাণ গুনাহ তার উপর পতিত হতে থাকবে।
(সহিহ মুসলিম: ১৬৯১)

৪) যে সমাজে জিনা-ব্যভিচার, অশ্লীলতা ও আল্লাহর নাফরমানী মূলক কাজ ছড়িয়ে পড়ে তারা নানা রোগ-ব্যাধি ও আল্লাহর আজাবের মুখোমুখি হয়। যেমন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ أَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ ‏ “‏ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ خَمْسٌ إِذَا ابْتُلِيتُمْ بِهِنَّ وَأَعُوذُ بِاللَّهِ أَنْ تُدْرِكُوهُنَّ لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِي قَوْمٍ قَطُّ حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا إِلاَّ فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ وَالأَوْجَاعُ الَّتِي لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِي أَسْلاَفِهِمُ الَّذِينَ مَضَوْا ‏.‏ وَلَمْ يَنْقُصُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ إِلاَّ أُخِذُوا بِالسِّنِينَ وَشِدَّةِ الْمَؤُنَةِ وَجَوْرِ السُّلْطَانِ عَلَيْهِمْ ‏.‏ وَلَمْ يَمْنَعُوا زَكَاةَ أَمْوَالِهِمْ إِلاَّ مُنِعُوا الْقَطْرَ مِنَ السَّمَاءِ وَلَوْلاَ الْبَهَائِمُ لَمْ يُمْطَرُوا وَلَمْ يَنْقُضُوا عَهْدَ اللَّهِ وَعَهْدَ رَسُولِهِ إِلاَّ سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ فَأَخَذُوا بَعْضَ مَا فِي أَيْدِيهِمْ ‏.‏ وَمَا لَمْ تَحْكُمْ أَئِمَّتُهُمْ بِكِتَابِ اللَّهِ وَيَتَخَيَّرُوا مِمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ إِلاَّ جَعَلَ اللَّهُ إلَّا جعَلَ اللهُ بأْسَهم بينهم
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আগমন করে বললেন:

হে মুহাজিরগণ, তোমরা (পাঁচটি কাজ করলে) পাঁচটি বিপদের সম্মুখীন হবে। (আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও।)

  • যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয় এবং এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।
  • যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, জিনিসপত্রের অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি এবং শাসকদের পক্ষ থেকে জুলুম-নির্যাতন।
  • যখন যাকাত আদায় করে না তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভূ-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না।
  • যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন। তখন তারা তাদের সহায়-সম্পদ কেড়ে নেয়।
  • যখন তাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক শাসনকার্য পরিচালনা করে না এবং আল্লাহর নাযিল কৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেন।”

(সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৩০/ কলহ-বিপর্যয় (كتاب الفتن), পরিচ্ছদঃ ৩০/২২. অপরাধের শাস্তি, হাদিস নম্বরঃ [4019])
পাবলিশারঃ তাওহীদ পাবলিকেশন

৫) ভয়ানক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি:
ইমরান রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
فِي هَذِهِ الْأُمَّةِ خَسْفٌ وَمَسْخٌ وَقَذْفٌ . فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ الْمُسْلِمِينَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ، وَمَتَى ذَاكَ؟ قَالَ : إِذَا ظَهَرَتْ الْقَيْنَاتُ وَالْمَعَازِفُ وَشُرِبَتْ الْخُمُورُ
এই উম্মতের মধ্যে ভূমিধ্বস, আকার-আকৃতির বিকৃতি সাধন এবং আকাশ থেকে শিলাবৃষ্টি। তখন মুসলিমদের মধ্যে এক ব্যাক্তি জিজ্ঞেস করলো: হে আল্লাহর রাসূল, সেটা কখন হবে?
তিনি বললেন: যখন গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র প্রকাশ ঘটবে এবং মদপান করা হবে।”
[সুনানে তিরমিযী হা/২১৩৮, শাইখ আলবানী হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
অন্য সহিহ বর্ণনায় আছে: وَلُبِسَ الْحَرِيرُ “যখন রেশমি কাপড় পরিধান করা হবে।”
অন্য একটি বর্ণনায় আছে: إذا ظهر الخبث “যখন অশ্লীলতা, নোংরামি ও বদ চরিত্র ইত্যাদি প্রকাশ পাবে।”

৬) প্রকাশ্য পাপাচার শুরু হলে সমাজ থেকে শান্তি-শৃঙ্খলা বিদায় নেয়, চতুর্দিকে হাহাকার, বরকত শুণ্যতা দেখা যায়।

৭) প্রকাশ্যে ও নির্ভয়ে আল্লাহর নাফরমানি ও পাপাচার নিয়ে আলোচনা করা আল্লাহর নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের মনোভাব হালকা করে দেয়।

৮) একজন মানুষ পাপ করার পরে আল্লাহর নিকট কায়মনোবাক্যে ক্ষমা চাইলে তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মানুষের নিকট প্রকাশ করা হলে তারা কখনোই তা ভুলে না। এই কথাটি তারা সুযোগ পেলে পরবর্তীতে ওই ব্যক্তির দিকে ছুঁড়ে মারে এবং তার ক্ষতি করার চেষ্টা করে।

৯) বিশেষ করে এফএম রেডিওর মাধ্যমে এসব নোংরা ও পাপাচার প্রচারের ফলে একসাথে হাজার হাজার বা লক্ষ লক্ষ শ্রোতাকে বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাল পরিক্রমায় অগণিত মানুষকে এই অন্যায়ের সাক্ষী বানিয়ে দেওয়া হয়।

১০) গোপনে অন্যায় অপকর্ম করার পর তা প্রকাশ করা হলে এতে দুদিক থেকে গুনাহ হয়। যথা:
ক. পাপাচার ও অন্যায় অপকর্ম করার গুনাহ
খ. সেগুলো প্রকাশ করার গুনাহ। (যেমনটি আমরা উপরের হাদিস থেকে জেনেছি)

আল্লাহ আমাদেরকে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল প্রকার আল্লাহর নাফরমানি থেকে হেফাজত করুন এবং আমাদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করুন।
আমীন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture