মৃত্যুর কথা মনে পড়লে ঈমান বৃদ্ধি পায়
মৃত্যুর কথা মনে পড়লে ঈমান বৃদ্ধি পায়, গুনাহ করার ইচ্ছা কমে যায়। এজন্য শয়তান কোনোদিনও মৃত্যুর কথা মনে করতে দিবেনা। প্রতিদিন কয়েকবার মৃত্যুর কথা মনে করে দেখেন কি পরিমান নফসের এসলাহ বা সংশোধন হয়।
ইবনুল জাওযী রাহিমাহুল্লাহ বলেন-“তুমি কিভাবে পরকাল (পরকালীন সফলতা) চাও?
অথচ তোমার অন্তর দুনিয়ার ভালোবাসায় মগ্ন!”
রমাদান মাস আমাদের জন্য এক বিরাট সুযোগের মাস। এ মাসে আল্লাহ্ তা’আলা বান্দার জন্য তার রহমতের ভান্ডার উজার করে দেন।
আসুন রমাদান মাসের কিছু করণীয় নিয়ে কথা বলা যাকঃ
১. তওবা করা। আল্লাহ্ তা’আলা রমাদান মাসে রহমত, মাগফিরাতের ডালা খুলে দেন। তাই সবার আগে নিজেদের গোনাহ মাফ করিয়ে নেয়া উচিত।
২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মত এবং পুরুষদের জন্য জামাতের সাথে আদায় করা।
৩. বেশি থেকে বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা। যাদের তিলাওয়াত শুদ্ধ নেই তাদের জন্য এই মাসটা তেলাওয়াত সহীহ করে নেয়ার জন্য খুবই উপযোগী। যারা শুদ্ধভাবে পড়তে পারেন তারা চেষ্টা করবেন দৈনিক কমপক্ষে যেন ১ পারা তিলাওয়াত করা যায়।
৪. বেশি বেশি সদাকা করা। রমাদানে একটি আমলে কমপক্ষে ৭০ গুণ বেশি নেকি হয়। আপনি ১ টাকা দান করলে ৭০ টাকা দানের সওয়াব পাবেন। যাদের উপর যাকাত ফরজ হয়েছে তারা যাকাত আদায় করে ফেলতে পারেন।
আপনার যাকাত আদায়ের সময় অন্য মাসে হলেও অগ্রীম রমাদানে আদায় করে পরবর্তীবার থেকে রমাদান টু রমাদান হিসাব করতে পারেন।
৫. গীবত, হারাম কাজ, চোখের গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা। রমাদান মাস অর্জনের মাস, তাই সমস্ত গোনাহ বর্জন করা দরকার।
৬. নিয়মিত তারাবীহ এবং তাহাজ্জুদ পড়া। তারাবীহ ৮ রাকাত না ২০ রাকাত এসব বিতর্কে যাবেন না। যেখানে দীর্ঘসময় ধরে তারতিলের সাথে কোরআন পড়া হয় সেখানে পড়ুন। তাহাজ্জুদে রাকাত লম্বা করার চেষ্টা করা দরকার। বাড়ীর সবাইকে নিয়ে একসাথে কিয়ামুল লাইল পড়তে পারেন।
৭. ইফতার করানো। যে ব্যক্তি একজন রোজাদারকে ইফতার করায় সেই রোজাদারের সওয়াব সে পেয়ে যায়। তাই যথাসম্ভব বেশি লোককে ইফতার করান। বাসায় ইফতারি তৈরিতে সাহায্য করুন। একটি খেজুর খাইয়ে ইফতার করালেও পূর্ণ সওয়াব পেয়ে যাচ্ছেন।
৮. অতিভোজন থেকে বিরত থাকা। রমাদান মাস আমলের মাস, পনাহার কম করার মাস। ইফতার ও সাহরীতে অধিক খাওয়া দেহ এবং আত্মা উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। বেশি খেলে আমলও বেশি করা যায় না। তাই অতিভোজন থেকে বিরত থাকুন।
৯. বেশি বেশি যিকির ও ইস্তিগফার করা। যিকির করার দ্বারা আমরা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে পারি। ইস্তিগফার আর দরূদ দ্বারা আমাদের জিহবা সিক্ত করার জন্য রমাদানের চেয়ে উত্তম আর কোন মাস হতে পারে?
১০. রাতের শেষভাগে, ফরজ নামাজের পর, ইফতারের আগে দুই হাত তুলে আল্লাহর দরবারে দুয়া করা। দুয়া করার কোনো বিকল্প নেই। রমাদান মাসে বেশি থেকে বেশি দুয়া করে নিজেদের হালাল চাহিদাগুলো পূরণ করা উচিত। আপনার দুয়ায় উম্মাহকে ভুলবেন না।
আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের একটি আমলে পরিপূর্ণ ও গোনাহমুক্ত রমাদান পালন করার তৌফিক দিন।