রাগের মাথায় তালাক দিলে কি তালাক হবে?
রাগ করে তিন তালাকের পর স্ত্রীর সঙ্গে সংসার কি জায়েজ?
তালাক তো দেওয়াই হয় রাগ হয়ে। কয়জন আছে, শান্তভাবে তালাক দেয়? আসলে তো এমনই হওয়া উচিত ছিল যে, যদি বাস্তবসম্মত ও অনিবার্য প্রয়োজনে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হয় তাহলে বড়দের সঙ্গে পরামর্শ করে একে অন্যের কল্যাণকামী হয়ে বুঝে-শুনে, সঠিক মাসআলা জেনে নিয়ে মাসআলা অনুযায়ী তালাক প্রদানের মাধ্যমে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে।
রাগের তিনটি অবস্থা হতে পারে:
প্রথম অবস্থা: এত তীব্র রাগ উঠা যে, ব্যক্তি তার অনুভুতি হারিয়ে ফেলা। পাগল বা উন্মাদের মত হয়ে যাওয়া। সকল আলেমের মতে, এ লোকের তালাক কার্যকর হবে না। কেননা সে বিবেকহীন পাগল বা উন্মাদের পর্যায়ভুক্ত।
দ্বিতীয় অবস্থা: রাগ তীব্র আকার ধারণ করা। কিন্তু সে যা বলছে সেটা সে বুঝতেছে এবং বিবেক দিয়ে করতেছে। তবে তার তীব্র রাগ উঠেছে এবং দীর্ঘক্ষণ ঝগড়া, গালি-গালাজ বা মারামারির কারণে সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেনি। এগুলোর কারণেই তার রাগ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ লোকের তালাকের ব্যাপারে আলেমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। অগ্রগণ্য মতানুযায়ী, এ লোকের তালাকও কার্যকর হবে না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “ইগলাক এর অবস্থায় তালাক কিংবা দাস আযাদ নেই”। [সুনানে ইবনে মাজাহ (২০৪৬), শাইখ আলবানী ‘ইরওয়াউল গালিল’ কিতাবে হাদিসটিকে ‘সহিহ’ আখ্যায়িত করেছেন] ইগলাক শব্দের অর্থে আলেমগণ বলেছেন: জবরদস্থি কিংবা কঠিন রাগ।
তৃতীয় অবস্থা: হালকা রাগ। স্ত্রীর কোন কাজ অপছন্দ করা কিংবা মনোমালিন্য থেকে স্বামীর এই রাগের উদ্রেক হয়। কিন্তু এত তীব্র আকার ধারণ করে না যে, এতে বিবেক-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলে কিংবা নিজের ভাল-মন্দের বিবেচনা করতে পারে না। বরং এটি হালকা রাগ। আলেমগণের সর্বসম্মতিক্রমে এ রাগের অবস্থায় তালাক কার্যকর হবে।
রাগাম্বিত ব্যক্তির তালাকের মাসয়ালায় বিস্তারিত ব্যাখ্যামূলক এটাই সঠিক অভিমত। ইবনে তাইমিয়া ও ইবনুল কাইয়্যেম এভাবে বিশ্লেষণ করেছেন।