স্বামী স্ত্রীর মহাব্বতের জীবন
আমার কাছের কিছু আত্মীয়াদেরকেই দেখেছি,তাদের স্বামী যখন কাজ থেকে ঘরে ফিরে আসে তাঁরা তখনই তাদের অভিযোগ নিয়ে হাজির হতেন,অনেকেতো দরজাটা খুলে রুমে প্রবেশ করার আগেই অভিযোগনামা পেশ করা শুরু করেন।আপনার শখ পূরণে ব্যর্থ হলে, সামান্য বিলাসিতার দাসী হয়ে নিজের স্বামীকে কটু কথা শোনান,অন্য পুরুষের সাথে তুলনা করেন যেটা খুবই জঘন্য কাজ।
এটা খুবই বাজে অভ্যাস সাথে একজন ক্লান্ত মানুষের মেজাজ বিগড়ে দেওয়ার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট৷ এতে করে নিজের কথার দাম কমাচ্ছেন, নিজের সম্মান হারাচ্ছেন। আপনি নিজেকে তাঁর অবস্থানে বসিয়ে ভাবুনতো,সারাদিন পরিশ্রমের পর বিশ্রাম নিতে ঘরে ফিরে আসবেন আর সেখানে যখন অশান্তির বাণী ঝরতে থাকবে তখন এই ঘর কি আপনার কাছে জাহান্নাম তুল্য মনে হবেনা?
অনেকেই ননদ,শাশুড়ী নিয়ে অভিযোগ করেন অথচ একপক্ষের দ্বারা কখনোই ঝগড়া হওয়া সম্ভব নয়, প্রতিত্তোরে কেবল ঝগড়া-ই হয়, কাউকে পাল্টা কথা শুনিয়ে বড় হওয়া যায় না৷ এতে আপনি আত্মতুষ্টি পেলেও আপনার আত্মসম্মানই হারালেন,প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আপনাকেও বিপক্ষীয় ব্যক্তির পর্যায়েই নামতে হলো৷
তাই এর সমাধান হলো,
যা শুনতে আপনার ভালো লাগবেনা তা আপনার কানে আসলেও ভাববেন আপনি কিছুই শুনেননি,এটা আপনাকে বলেনি,বললেও হয়তো বলার মতো কোনো কারণ ছিল, আর কারণ না থাকলেও চুপ থাকুন এতে অপবাদকারী থেকে অপবাদের বিনিময়ে সওয়াব পাচ্ছেন, সাথে ধৈর্য ধারণের পুরষ্কারও পাচ্ছেন।
কথাগুলা বোনদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সাধারনত মা-বাবা মেয়েদদের টাকা-ওয়ালা, ভালো জব ইত্যাদি এসব দেখে বিয়ে দিতে চান সুখের জন্য, আসলেই কি টাকার মাঝেই প্রকৃত সুখ নিবার্য?
সংসারটা আমরা মেয়েরা করবো বোন, চাহিদা-বিলাসীতা পূরণের জন্য আমরা ভালো চাকুরী-জীবি ছেলে খুজে বেড়ায়, আচ্ছা একটা কথা বোন, বলুনতো আপনার husband যদি আপনাকে টাকা দিয়ে আপনার সকল চাহিদা-বিলাসীতা পূরন করলো কিন্তু আপনাকে সময় দেয়না,ভালো মন্দ খোজ-খবর, টেক-কেয়ার নেয়না, তাহলে কি হবে এই এই নিত্য-নতুন জিনিস দিয়ে?যদি ভালোবাসাটাই না থাকে! আমি যতদূর জানি মেয়েদের বিয়ে নিয়ে অর্থাৎ husband নিয়ে অনেক স্বপ্ন থাকে, যে হাসব্যান্ড খুব-বেশি টেক-কেয়ার করবে, ভালোবাসবে,সবসময়েরর জন্য একজন সাপোর্টার হয়ে থাকবে।আপুমনি টাকা দিয়ে সব কিনা গেলেও সুখ নামক জিনিসটা কখনোই কিনা যায়না বোন, সুখটা আসলে আমাদের নিজের কাছে যদি আমরা অল্পতে সন্তুষ্ট হতে পারি,যদি আমরা ভালোবাসার মানুষের জন্য & নিজের জন্য একটু ত্যাগ স্বীকার (দুনিয়াবি বিলাসীতা)করতে পারি. এতে করে এই দুনিয়াতেও প্রকৃত সুখ পাওয়া সম্ভব সাথে করে আখিরাতেও।
সব বোনদের বলছি বেশি কিছুনা জাস্ট দুনিয়াবি ভোগ-বিলাস বাদ দিয়ে নিচের দিকে তাকান, নবী-রাসূলদের দিনের কথা ভাবুন তারা কিভাবে চলতো! তাহলেই দেখবেন আপনার দুনিয়া চেন্জ, আপনিই সুখি।এতে করে ভাইদের জন্যও বিয়েটা সহজ হয়ে যাবে, সংসার একটা অভিযোগক্ষেত্র কিন্তু স্থান,কাল ভুলে গিয়ে নিজের মন হালকা করতে গিয়ে অন্যের কান ভারী করার পন্থা খুবই নিচু স্তরের কাজ। কিছু সমস্যা নিজে একা একা সমাধানের চেষ্টা করতে হয়,মাঝেমাঝে কিছু সমস্যাসহ মানিয়ে নিতে হয়।
আমি কাউকে হেয় করার জন্য বলছি না তবে এটাই সত্যি যে অকারণ কিংবা খুবই তুচ্ছ বিষয়ে অযথা বকবক করাও আমাদের নারীসুলভ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে অন্যতম একটা বৈশিষ্ট্য!
অথচ এতে নিজের মস্তিষ্কে চাপ পড়ছে, ক্যালরি খরচ হচ্ছে বিনিময়ে অপরজনের বিরক্তির খরিদদার হচ্ছেন।
আপনি যখন কম কথা বলবেন তখন আপনার প্রতিটা কথা অন্যরা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং যথাযথ মূল্যায়ন করবে৷
শুধু নিজে ভালো থাকার চেষ্টা না করে আশেপাশের কারো ভালো না থাকার কারণ না হওয়ার চেষ্টা করুন তখন তারা-ই আপনার ভালো থাকার কারণ হবে।
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি নিজের জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে, আমি তার জান্নাতের জিম্মাদারি নিবো।’
কাউকে কটু কথার বাণে আঘাত করার চর্চা বন্ধ করুন, এতে গৌরবের কিছু নেই, নিজের সংকীর্ণ মানসিকতারই পরিচয় মিলে৷
সংসার সাজান এমনটা করে “দুটি মানুষ আর অনেকগুলা ভালোবাসা , আর আল্লাহ্র দয়া করে একটু আশ্রয় আর খাদ্যবস্তু দিয়ে সাহায্য করলেই হলো,এভাবে দুনিয়াকে পাড়ি দিয়ে আল্লাহ্ সন্তুষ্টি অর্জনের সাথে জান্নাতেও জেনো থাকতে পাড়েন__