কোন আমানত যা আসমান জমিন পাহাড়-পর্বত গ্রহণ করতে রাজি হয় নি
কোন সে আমানত যা আসমান, জমিন, পাহাড়-পর্বত গ্রহণ করতে রাজি হয় নি কিন্তু মানুষ গ্রহণ করেছে?
আসমান, জমিন ও পাহাড়-পর্বত সেই আমানত নিতে রাজি হলো না বরং তারা ভয়ে কাঁপতে লাগলো। মানুষ সেই আমানত নিয়ে নিলো। কী সে আমানত?
আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّا عَرَضْنَا الْأَمَانَةَ عَلَى السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ وَالْجِبَالِ فَأَبَيْنَ أَن يَحْمِلْنَهَا وَأَشْفَقْنَ مِنْهَا وَحَمَلَهَا الْإِنسٰنُ ۖ إِنَّهُۥ كَانَ ظَلُومًا جَهُولًا
"আমি এ আমানত পেশ করেছিলাম আকাশমণ্ডলী পৃথিবী, পাহাড়গুলোর নিকট, তারা তা বহন করতে অস্বীকার করল এবং তা গ্রহণ করতে ভয় পেল, কিন্তু মানুষ তা বহন করল; নিশ্চয়ই সে অতিশয় জালিম, বড়ই অজ্ঞ।"
[সূরা আহযাব: ৭২]
তাফসির:
ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আমানত “أمانة দ্বারা উদ্দেশ্য হল, الطاعة বা আনুগত্য।
অন্য বর্ণনায়, আমানত বলতে الفرائض বা ঐ সকল শরয়ী আদেশ, ফরয ও ওয়াজিব কর্মসমূহকে বুঝানো হয়েছে যা পালন করলে নেকি ও সওয়াব লাভ হয় এবং তা হতে বিমুখ হলে বা তা অস্বীকার করলে গুনাহ হয় এবং এর জন্য শাস্তির অধিকারী হতে হয়।
কাতাদা বলেন, আমানত দ্বারা উদ্দেশ্য হর, الدين والفرائض والحدود “দীন, ফরজ কার্যাবালী এবং হদুদ বা দণ্ডবিধি।” [তাফসিরে ত্ববারি]
মোটকথা, আমানতের ব্যাখ্যায় বর্ণিত সকল মুফাসসিরের উক্তি প্রায় সমর্থবোধক।
আল্লাহ তাআলা বলেন যে, এ শরিয়তের আমানত প্রথমে আকাশ-জমিন ও পর্বতমালার নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা বহন করতে অস্বীকার করেছে এভাবে যে, যদি তা যথাযথভাবে বহন করতে না পারে তাহলে শাস্তি ভোগ করতে হবে। অবশেষে মানুষ (আদম আ.) এ দায়িত্ব বহন করতে স্বীকৃতি জানাল এবং এ দায়িত্ব গ্রহণ করল। কারণ মানুষ জাতি একটু ত্বরাপ্রবণ, তাই তারা শাস্তির দিকটা না ভেবে প্রতিদান ও পুরস্কার লাভের লোভে উক্ত আমানত কবুল করে নিলো।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা এর কারণ বর্ণনা করেছেন যে, এর মাধ্যমে মুনাফিক, মুশরিক ও মুমিন চিহ্নিত হয়ে যাবে। চিহ্নিত হয়ে যাবে কারা সত্যবাদী আর কারা মিথ্যাবাদী। ফলে তিনি সত্যবাদীদেরকে পুরস্কার দান করবেন এবং মিথ্যাবাদীদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন।”
[তাফসিরে ইবনে কাসির]
মহান আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের তাওফিক দান করুন।
আমিন।