সালাত পড়ার জন্য কি আজান হওয়া জরুরি
মূলত সালাত সময়ের সাথে সম্পৃক্ত; আজানের সাথে নয়। সুতরাং সালাতের সময় হওয়ার সাথে সাথে সালাত আদায় করলে তা শুদ্ধ হবে ইনশাআল্লাহ-যদিও কোন কারণে আজান দিতে কিছু বিলম্ব হয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا
“নিশ্চয় মুমিনদের উপর ফরজ করা হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।”
[সূরা নিসা: ১০৩]
সুতরাং সালাতের সময় হয়ে গেলে কেউ যদি সফর, ব্যস্ততা, জরুরি কাজ ইত্যাদি কোন কারণে জামাআতের জন্য অপেক্ষা করতে না পারে এবং আজানের পূর্বে একাকী সালাত আদায় করে নেয় তাহলে তার সালাত শুদ্ধ হবে ইনশাআল্লাহ। তবে সাধারণত: সালাতের সময় হওয়ার পরই আজান দেওয়া হয়। কেননা আজানের উদ্দেশ্যই হল, সালাতের সময় হয়ে গেছে এ কথা মানুষকে জানানো।
সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটিকে প্রশ্ন করা হয় যে, আজানের আগে সালাত পড়লে কবুল হবে কি না?
তারা জবাবে বলেন,
تصح صلاة الفرض بعد دخول وقتها ولو كان ذلك قبل الأذان ولا يجوز للشخص أن يصلي قبل دخول الوقت، وإذا صلى قبل دخول الوقت فصلاته غير صحيحة،
“সময় হওয়ার পর ফরজ সালাত আদায় করা বিশুদ্ধ হবে, যদিও তা আজানের আগে পড়া হয়। কারোও জন্যে ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগে সালাত আদায় করা জায়েজ হবে না। যদি কেউ ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগে সালাত পড়ে তাহলে তার সালাত অশুদ্ধ হবে।” [ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা (ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী ফতোয়া কমিটি) প্রশ্ন নং ৩৭৮৫, আল মুগনী ২/৪৫]
একাকী ফরজ সালাত আদায়ের সময় কি আজান দিতে হবে?
আপনি যদি পাহাড়, মরুভূমি, সাগর, জঙ্গল বা শহর থেকে দূরে এমন স্থানে থাকেন যেখানে আজানের আওয়াজ পৌঁছে না এবং আশেপাশেও এমন কেউ নাই যাকে নিয়ে সালাত আদায় করবেন তাহলে এ অবস্থায়ও আজান অত:পর ইকামত দিয়ে সালাত আদায় করা উত্তম।
উকবা বিন আমের রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
يَعْجَبُ رَبُّكَ مِنْ رَاعِي غَنَمٍ فِي رَأْسِ شَظِيَّةِ الْجَبَلِ يُؤَذِّنُ بِالصَّلَاةِ وَيُصَلِّي فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوا إِلَى عَبْدِي هَذَا يُؤَذِّنُ وَيُقِيمُ الصَّلَاةَ يَخَافُ مِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي وَأَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ
“তোমার পালনকর্তা বিস্মিত হন এমন ছাগলের রাখালের কাজে যে, পাহাড়ের চুড়ায় আজান দিয়ে সালাত আদায় করে। আল্লাহ বলেন, দেখো আমার এই বান্দাকে, সে আমাকে ভয় করে সালাতের জন্য আজান ও ইকামত দিচ্ছে! আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে জান্নাতে প্রবেশ করালাম।”
[আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, হা ৩/১১৫-সহিহ]
আল্লাহু আলাম।