Writing

কমন মিস্টেকস ইন রামাদান – নিয়ত

রমজান মাসে সাধারণত যে ভুলগুলো হয় তার মধ্যে একটি হল সিয়ামের নিয়ত সম্পর্কিত। আর এই নিয়ত নিয়ে নানান রকম বিতর্ক আছে, যেমন নিয়ত কি জোরে বলতে হয়? নিয়ত আসলে জোরে বলা উচিত নয়, মনে মনে নিয়ত করলেই হয়। রোজার নিয়ত কি প্রতিদিন করতে হয়, নাকি পুরা রমজান মাসের জন্য একবার করলেই হয়?
এই ধরনের বিতর্ক তো চলতেই থাকে।

কিন্তু আমি যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি সেটা হলো নিয়তের পিছনের পুরো বিষয়টির দিকে মনোযোগ দেওয়া। আপনি যখন রমজান মাসে রোজা রাখার নিয়ত করেন তখন আপনাকে আরও গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে, শুধু এই চিন্তা করলে হবে না যে আগামীকাল আমি রোজা রাখবো।

রোজা রাখার পেছনে আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আমরা রোজা রাখছি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য, তাঁর কাছে এর বিনিময়ে পুরস্কৃত হওয়ার জন্য এবং গুনাহ মাফ হওয়ার জন্য।

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র রাস্তায় একদিন সিয়াম রাখে, আল্লাহ্‌ ঐ দিনের বিনিময়ে জাহান্নামকে তার মুখমন্ডল থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে দেন।
[সুনান ইবনে মাজাহ: ১৭১৭]

এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে আপনি যখন রোজার নিয়ত করবেন তা আপনার সিয়ামকে আরো নিখুঁত করে তুলবে। রোজার রাখার আগে নিয়তের দিক থেকে আপনি যখন রসূলের (সা.) পাদঙ্ক অনুসরণ করবেন, এর জন্যও আপনাকে পুরস্কৃত করা হবে।

রোজার নিয়ত করার সময় আপনি যখন চিন্তা করবেন যে আপনি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার কাছে আত্মসমর্পণ করছেন, তাঁর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখছেন, রোজা রাখার মাধ্যমে আপনি আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করছেন, এবং আপনি তাদের অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছেন যারা রাইয়্যানের প্রতিশ্রুত দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে – যতই আপনি এই বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন ততই আপনার পুরস্কার বৃদ্ধি পেতে থাকবে বহুগুনে ইনশাআল্লাহ।

এই কারণেই উলামা এবং ফুকাহারা বলেছেন, আপনি আপনার নিয়ত দিয়ে যতদূর পৌঁছতে পারেন আপনার আমল দিয়ে ততদূর পৌঁছতে পারেন না। ধরুন আপনি পুরো রমজান মাস রোজা রাখার নিয়ত করলেন, আল্লাহ না করুক এর মধ্যে আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন এমনকি আপনার মৃত্যুও হতে পারে, তারপরেও আপনি কিন্তু পুরো রমজান মাস রোজা রাখার সোয়াব পেয়ে যাবেন।

আপনি যখন ভোররাতে রোজার নিয়ত করেন তখন কি হয়?
আপনি কিন্তু তখন শুধু রোজাই রাখছেন না, আপনি আপনার উপবাসকে নিখুঁত করার চেষ্টা করছেন, আপনি আপনার বাধ্যবাধকতাকে পরিপূর্ণ করার চেষ্টা করছেন, আপনি হারাম এবং মাকরুহ থেকে দূরে থাকছেন, আপনি রাত জেগে তারাবির নামাজ পড়ছেন। আপনি যখন নিয়ত করছেন তখন আপনি মনেপ্রাণে এই সবগুলো কাজ একসাথে করার চেষ্টা করছেন। আর এই কারণে আল্লাহ আপনাকে এই সবগুলো কাজের জন্যই উত্তম প্রতিদান দিবেন।

এভাবে আপনি যদি রোজার নিয়ত সম্পর্কে চিন্তা করেন, তাহলে আপনার প্রতিদিনের রমজানের ব্যাপারে আরো ভালো পরিকল্পনা আপনি করতে পারবেন। আর এটাই আপনার রোজার পূর্বে নিয়তের মূল লক্ষ্য। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা যেন আমাদের সবার কাছ থেকে কবুল করে নেন।

মূল: শাইখ ওয়ালীদ বাসাইউনি

লিখেছেন

Picture of ফাহমিনা হাসানাত

ফাহমিনা হাসানাত

কিছুটা লেখালেখি করি, ইসলামিক লাইনে কিছুটা পড়াশোনা করি। তাজউইদ, গ্রামার এবং কুরআন মেমোরাইজেশন এর ক্লাস করছি আলহামদুলিল্লাহ।
নিজে শিখছি, অন্যকেও শিখাচ্ছি। লেখালেখিটাও ঠিক এরকম। নিজে জানার জন্য মনের আনন্দে লিখি, শেয়ার করি।

লেখকের অন্যান্য সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন

কিছুটা লেখালেখি করি, ইসলামিক লাইনে কিছুটা পড়াশোনা করি। তাজউইদ, গ্রামার এবং কুরআন মেমোরাইজেশন এর ক্লাস করছি আলহামদুলিল্লাহ।
নিজে শিখছি, অন্যকেও শিখাচ্ছি। লেখালেখিটাও ঠিক এরকম। নিজে জানার জন্য মনের আনন্দে লিখি, শেয়ার করি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture