Writing

সফরকালে নামায পড়তে চাইলে করণীয়

অযু-ইস্তিঞ্জা করে গা‌ড়িতে উঠুন।
গা‌ড়িতে ওঠার আগেই নামাযের সময় থাকলে আগে নামায পড়ুন, পরে টি‌কিট কাটুন।

য‌দি আগে নামায পড়তে না পারেন, তা হলে গা‌ড়িতে ওঠার আগে কর্তৃপক্ষের সাথে নামাযের বিষয়‌টি পরিস্কার করুন। বলুন, যথাসময়ে আমাকে নামায পড়ার বির‌তি দিতে হ‌বে।

যেসব গা‌ড়ি নামাযের বির‌তি দেয়, সেসব গা‌ড়ি‌ প্রাধান্য দিন। নামাযী যাত্রীরা নামাযের বিষয়ে কাউন্টারে বারাবার জিজ্ঞাসা করলে এক‌দিন নিজেরাই নামাযের সুযোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করবে এবং টি‌কিটে তা লিখে দিবে।

নামাযের সময় হলে সাহস করে নামাযের কথা স্মরণ ক‌রিয়ে দিন। নিজেকে একাকী মনে হলেও আল্লাহ আপনার সঙ্গে আছেন। আপ‌নি একজন গা‌ড়ি থামালে বহু যাত্রীকে নামায প‌ড়ার জ‌ন্য পেয়ে যাবেন।

বেনামাযী ও বে‌দীন‌রা কে কী বলবে, সেটা পরোয়া করা করার প্রয়োজন নেই।

টিকেটে নামাযের বির‌তির কথা লেখা থাকলে সেকথা তাদের স্মরণ ক‌রিয়ে দিন।

নামাযের‌ বিষয়‌টি কর্কশভাবে নয়, কোমল স্বরে বলুন। ঝগড়ায় নয়, শান্তভাবে বু‌ঝিয়ে বলুন। প্রয়োজনে চালক ও পরিচালককে ‌বোঝা‌নোর জন্য সা‌মনে ইঞ্জিন-কভারে গিয়ে বসুন এবং নামাযের দাওয়াত দিন।

তাদেরকে সু‌বিধাজনক স্থানে গা‌ড়ি থামানোর সুযোগ দিন। সবর করুন এবং অপেক্ষা করুন। বারবার বলে বিরক্ত করবেন না।

নামাযের বির‌তি দিলে দ্রুত সময়ের‌ ভেতর নামায শেষ করুন। তবে তাড়াহুড়ে করে নয়।

নামাযের আগের ও প‌রের সুন্নাতগু‌লো সফরকালে প‌রিহার করুন।

মস‌জি‌দের নির্ধা‌রিত জামাআতের দে‌রি হ‌লে অ‌পেক্ষা না ক‌রে মস‌জি‌দের কো‌ণে বা বারান্দায় ‌গি‌য়ে একাকী প‌ড়ে নিন।

আপনার নামায যে কসর, চার রাকাআতের স্থ‌লে দুই রাকাআত, সে কথা ম‌নে রাখুন।

শুধুমাত্র নামা‌যের বির‌তি হ‌লে শুধু নামাযই পড়ুন। এ বির‌তি‌কে অন‌্যকা‌জে লাগা‌বেন না।

নামা‌যের বির‌তির সু‌যো‌গে অ‌ন্যেরা টি‌পিন বা অন্য কা‌জে ব্যস্ত হ‌য়ে পড়লেও আপ‌নি সবার আগে গা‌ড়িতে চড়ে বসুন। যেন লোকেরা বুঝ‌তে পারে, নামাযীরা নয়, বেনামাযীরাই দে‌রি করে।

গা‌ড়িতে জ্বালানী নেওয়া বা খাবারদাবারের বির‌তিতে নামা‌য আদা‌য়ের সুযোগ থাক‌লে সেটাকে কা‌জে লাগা‌ন। নামাযের জন্য আলাদা বির‌তি নি‌তে বিরত থাকুন।

জ্যামের ম‌ধ্যে বা দুর্গম স্থা‌নে নামা‌যের বির‌তি চাওয়া থে‌কে নিবৃত থাকুন।

দীর্ঘ জ্যামে পড়লে কিবলা ঠিক করে সড়কে দাঁ‌ড়িয়ে নামায আদায় করে‌ নিন। অযু থাকলে তো ভালো কথা, নতুবা বোতলের পা‌নিতে শুধুমাত্র অযুর ফরযগু‌লো একবার ক‌রে আদায় করে অযু সম্পন্ন করুন। অসুস্থতা নাহলে এবং পা‌নি পাওয়ার আশা থাক‌লে এ স্থ‌লে তায়াম্মুম করা যা‌বে না।

গন্ত‌ব্যে গি‌য়ে যথাসম‌য়ে নামায আদা‌য়ের সু‌যোগ থাক‌লে প‌থে গা‌ড়ি থামা‌নো থে‌কে বিরত থাকুন।

ন‌ামা‌যের স্থায়ী সময়সূ‌চি স‌ঙ্গে রাখুন। নামা‌যের ওয়াক্তগু‌লির শুরু ও‌ শেষ জেনে রাখুন। নামায আদায় কর‌তে আযা‌নের অ‌পেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। শুধু সময় হ‌লেই হ‌লো।

আসর ও মাগ‌রি‌বের সময়‌ দুটি সফ‌রে বে‌শি গুরুত্বপূর্ণ। আস‌রের অযু ‌দি‌য়ে মাগ‌রিব আদায় করার চেষ্টা করুন।

এশার সময় অ‌নেক দীর্ঘ। গন্ত‌ব্যে গি‌য়ে এশা পড়ার সু‌যোগ থাক‌লে রা‌তের সফ‌রে এশার জন‌্য বিরক্ত করা থে‌কে বিরত থাকুন।

ত‌বে জ্বালানী বা অন‌্যকার‌ণে বির‌তি দি‌লে কসর ক‌রে নাম‌ায প‌ড়ে নিন। কারণ বা‌ড়ি‌তে গি‌য়ে অলসতা বা ব‌্যস্ততায় নামায নষ্ট হ‌‌য়ে যেতে পা‌রে। তা ছাড়া বা‌ড়ি‌তে গে‌লে কস‌রের সু‌বিধাও হাতছাড়া হ‌য়ে যাবে।

প‌থিম‌ধ্যে নামায আদা‌য়ের যথাযথ চেষ্টা করার পরেও য‌দি যথাসম‌য়ে নামায পড়‌তে না প‌া‌রেন, তা হ‌লে অবশ‌্যই গন্ত‌ব্যে গি‌য়ে নামায প‌ড়ে নিন। এতে আপ‌নি অব‌হেলার গোনাহ থে‌কে বেঁ‌চে যা‌বেন।

এক‌টি আয়াত ও এক‌টি হাদীস ম‌নে রাখুন :

اِنَّ الصَّلٰوۃَ کَانَتۡ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ کِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا
নিশ্চয় নির্ধারিত সময়ে সালাত কায়েম করা মুমিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য।
(সূরা‌ নিসা : ১০৩)

إِنَّ بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكَ الصَّلَاةِ “.
মানুষ ও কুফর‌শির‌কের মা‌ঝে বড় বাধা হ‌লো নামায। (সহীহ মুস‌লিম : ১৩৪)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল‌কে সফনে ও ঘরে নামায কায়েমকারী বা‌নিয়ে দিন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture