وَأَوۡحَيۡنَآ إِلَىٰٓ أُمِّ مُوسَىٰٓ أَنۡ أَرۡضِعِيهِۖ فَإِذَا خِفۡتِ عَلَيۡهِ فَأَلۡقِيهِ فِى ٱلۡيَمِّ وَلَا تَخَافِى وَلَا تَحۡزَنِىٓۖ إِنَّا رَآدُّوهُ إِلَيۡكِ وَجَاعِلُوهُ مِنَ ٱلۡمُرۡسَلِينَ
আর আমি মূসার মায়ের প্রতি নির্দেশ পাঠালাম, ‘তুমি তাকে দুধ পান করাও। অতঃপর যখন তুমি তার ব্যাপারে আশঙ্কা করবে, তখন তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ করবে। আর তুমি ভয় করবে না এবং চিন্তা করবে না। নিশ্চয় আমি তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করব’।
[সূরা আল-কাসাস-২৮: আয়াত-৭]
এই আয়াতে আল্লাহ তা’আলা মুসার (আ:) মাকে বলছেন, যদি তিনি মুসার ব্যাপারে ভয়ের আশঙ্কা করেন তাহলে তিনি যেন তাকে নদীতে নিক্ষেপ করেন। আল্লাহ তা’আলা মুসাকে (আ:) রাসুলদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর মাকে বলছেন তিনি যেন ভীত এবং দুঃখিত না হন।
আমাদের স্বাভাবিক প্রবণতা হল যখন আমরা কোন কিছু নিয়ে ভয় পাই তখন সেই জিনিসটাকে আমরা সযত্নে খুব শক্তভাবে আঁকড়ে ধরি, কিন্তু এই আয়াতে আল্লাহ তা’আলা মুসার (আ:) মাকে বলছেন তাঁর প্রাণপ্রিয় সন্তানকে ছেড়ে দিতে। আল্লাহর নির্দেশে মুসার (আ:) মা মুসাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন নিরাপদ ও স্থিতিশীল কোন জায়গায় নয়, বরং বিপদসংকুল ও অনিশ্চিত জায়গায়, ফেরাউনের হাতে যাকে তিনি সবচেয়ে বেশি ভয় করতেন। বস্তুগত সব নিরাপত্তাকে বাতিল করে তাঁকে কেবলমাত্র নির্ভর করতে হয়েছিল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার উপর।
কেবলমাত্র ছেড়ে দিয়েই সেদিন তিনি তাঁর সন্তানকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন। নদীর অনিয়ন্ত্রিত জোয়ারে শিশুটি নিরাপদ ছিল, শত্রুর বাহুতে থেকেই সে নিশ্চিত মৃত্যু এড়াতে পেরেছিল।
তাই আসুন, আমরা ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্টের বেড়াজাল কেটে নিজেদেরকে প্রশ্ন করি আল্লাহ আসলে আমাদেরকে কোথায় আশ্রয় নিতে বলছেন- মুসার (আ:) সেই ঠুনকো ঝুড়িতে, নাকি নূহের (আ:) পলকা নৌকায়? এই সেই জায়গা যেখানে আমাদের অহংবোধ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। মূসার মাকে আক্ষরিক অর্থে বলা হয়েছে মূসাকে নদীতে “নিক্ষেপ” করতে, নিরাপদ কোন জায়গায় নয়। তাই আসুন আমরা ঈশ্বরের অভয়ারণ্যে আশ্রয় নেই, নিজেদেরকে নিক্ষেপ করি তাঁর আলিঙ্গনের নির্ভরতায়।
মূল: ডালিয়া মোগাহেদ