শুক্রবার জুমুআর আযান শুনামাত্রই কা’ব ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু একজন সাহাবীর জন্য দু’আ করতেন। এই কাজটি তিনি প্রতি শুক্রবার করতেন।
একদিন তাঁর ছেলে আব্দুর রহমান ইবনে কা’ব রাহিমাহুল্লাহ বাবাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আব্বা, আপনাকে দেখি প্রতি জুমুআর আযান শুনে আস’আদ ইবনে জুরারা রাদিয়াল্লাহু আনহুর জন্য দু’আ করতে। আপনি কেনো তাঁর জন্য এতো দু’আ করেন?”
আব্দুর রহমান ইবনে কা’ব জানতেন না আস’আদ ইবনে জুরারা রাদিয়াল্লাহু আনহুর লিগ্যাসী কী, জুমুআর নামাজের সাথে তাঁর সংশ্লিষ্টতা কী।
কা’ব ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন- আস’আদ ইবনে জুরারা রাদিয়াল্লাহু আনহু হলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি জুমু’আর নামাজের জন্য সাহাবীদেরকে একত্রিত করেন। তাঁর মাধ্যমে সাহাবীরা জুমু’আর নামাজ পড়ে।
কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় আস’আদ ইবনে জুরারা রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রথম জুমু’আর নামাজের ইমামতি করেন, কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় মুসআব ইবনে উমাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু।
তবে, সামগ্রিক ব্যবস্থা যে আস’আদ ইবনে জুরারা রাদিয়াল্লাহু আনহু করেছিলেন, এটা নিশ্চিত।
ঘটনাটি নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের পূর্বের। নবিজী তখনো জুমুআর নামাজ পড়েননি।
ইসলামের কিছু আমল আছে যা নবিজী করার আগে সাহাবীরা করেছেন। সেসব আমলের মধ্যে অন্যতম হলো জুমু’আর নামাজ। নবিজী জুমু’আর নামাজ পড়ার কয়েক মাস বা বছরখানেক পূর্বে সাহাবীরা মদীনায় জুমুআর নামাজ পড়েন।
এই ঘটনায় দেখা যায় একজন সাহাবী পূর্বের একজন সাহাবীর নামোল্লেখ করে দু’আ করছেন, তাঁর অবদান স্মরণ রাখছেন।
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে ইসলাম প্রচার, ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আজ থেকে আটশো বছর পূর্বে যেসব মনীষী আগমন করেছিলেন, তাদেরকে কি আমরা মনে রাখি?
আমরা কি শাহজালাল, শাহ মাখদূম, বখতিয়ার, শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামা, নূর কুতুবুল আলম সহ বাংলায় ইসলাম আমাদের পর্যন্ত পৌঁছার ক্ষেত্রে যারা অবদান রাখেন, তাঁদের কথা স্মরণ করি? তাঁদের জন্য দু’আ করি?
আমাদের পূর্বপুরুষ নিয়ে পড়াশোনা করি। সাহাবীরা তাঁদের পূর্বপুরুষদের ভুলে যেতেন না, আমরা ভুলে গেছি!
আমরা যেমন সাহাবী-সালাফদের জীবনী পড়বো, তেমনি এই অঞ্চলে আমাদের পর্যন্ত ইসলাম পৌঁছে দেয়ায় যারা অবদান রাখেন, তাঁদেরকেও পড়বো।