১০০ কবিরা গুনাহ – ২য় পর্ব
Table of Contents
২৫-২৬. পুরুষ বেশধারী নারী ও দাইয়ুস (অসতী স্ত্রীর স্বামী):
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ثَلاثٌ لا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ : الْعَاقُّ لِوَالِدَيْهِ ، وَالدَّيُّوثُ ، وَرَجُلَةُ النِّسَاءِ
“তিন শ্রেণির লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তারা হল, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, দাইয়ুস (অসতী স্ত্রীর স্বামী)এবং পুরুষ বেশধারী নারী।”
[সহিহুল জামে-আলবানি, হা/৩৬৩]
দাইয়ুস কাকে বলে?
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
الدَّيُّوثُ الَّذِي يُقِرُّ فِي أَهْلِهِ الْخَبَثَ
“ঐ ব্যক্তিকে দাইয়ুস বলা হয়, যে তার পরিবারের কুকর্ম (জিনা-ব্যভিচার, অশ্লীলতা)কে স্বীকৃতি দেয়।” [মুসনাদ আহমদ, নাসাঈ]
২৭-২৯. বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক, অহংকারী দরিদ্র:
রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ثَلاثَةٌ لا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ : شَيْخٌ زَانٍ ، وَمَلِكٌ كَذَّابٌ ، وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ
“আল্লাহ কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে পীড়া দায়ক শাস্তি। তারা হল, বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক এবং অহংকারী দরিদ্র। [মুসলিম, হা/১০৭]
৩০. কঠোর প্রকৃতি ও কটুভাষী লোক এবং যে ব্যক্তি মানুষের কাছে এমন বিষয় নিয়ে গর্ব-অহংকার প্রকাশ করে বেড়ায় প্রকৃতপক্ষে যা তার নিকট নেই:
রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ الْجَوَّاظُ ، وَلَا الْجَعْظَرِيُّ
“কঠোর প্রকৃতি ও কটুভাষী লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” [আবু দাউদ, হা/৪৮০১, সহিহ- আলবানি]
৩১. মুয়াহিদ তথা মুসলিম সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাবে বসবাসকারী অমুসলিমকে হত্যা করা:
রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرِحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ ، وَإِنَّ رِيحَهَا تُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا
“যে ব্যক্তি কোন মুয়াহিদ তথা মুসলিম সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাবে বসবাসকারী কোন অমুসলিমকে হত্যা করবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের পথের দূরত্ব থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।” [সহিহ বুখারি হা/৩১৬৬]
৩২. বিশ্বাসঘাতক শাসক:
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
مَا مِنْ عَبْدٍ يَسْتَرْعِيهِ اللَّهُ رَعِيَّةً ، يَمُوتُ يَوْمَ يَمُوتُ وَهُوَ غَاشٌّ لِرَعِيَّتِهِ إِلا حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ
“যাকে আল্লাহ তায়ালা জনসাধারণের শাসনকর্তা হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, কিন্তু সে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং বিশ্বাসঘাতক অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন।”
[সহিহ মুসলিম, হা/১৪২]
৩৩-৩৪. মানুষকে প্রহার করা ও মহিলাদের পর্দাহীনতা:
রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ ، لَمْ أَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ ، وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلَاتٌ مَائِلَاتٌ ، رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ ، لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلَا يَجِدْنَ رِيحَهَا ، وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا
“দু শ্রেণির মানুষ জাহান্নামে যাবে যাদের আমি এখনো দেখি নি। (অর্থাৎ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে তাদের আত্মপ্রকাশ হয় নি)
ক. এমন কিছু লোক যাদের হাতে থাকবে গরুর লেজের মত লাঠি। এরা তা দিয়ে জনগণকে প্রহার করবে।
খ. উলঙ্গ-অর্ধ উলঙ্গ নারী
এবং ঐ সকল উলঙ্গ-অর্ধ উলঙ্গ নারী যারা (নিজেদের চলাফেরা ও বেশ-ভূষায়) মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং নিজেরাও অন্য মানুষের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথায় উটের মত উঁচু এবং একপাশে ঝুঁকে থাকা চূড়ার মতো কেশ রাশি শোভা পাবে। এসমস্ত নারী জান্নাতে তো যাবেই না বরং জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না অথচ এত এত দূর থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।”
[সহিহ মুসলিম, হা/২১২৮]
অন্যান্য ধ্বংসাত্মক কবিরা গুনাহ:
৩৫. পেশাব থেকে পবিত্র না থাকা:
مَرَّ النبيُّ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ علَى قَبْرَيْنِ فَقالَ: إنَّهُما لَيُعَذَّبَانِ وما يُعَذَّبَانِ مِن كَبِيرٍ ثُمَّ قالَ: بَلَى أمَّا أحَدُهُما فَكانَ يَسْعَى بالنَّمِيمَةِ، وأَمَّا أحَدُهُما فَكانَ لا يَسْتَتِرُ مِن بَوْلِهِ.
“রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা দুটি কবরের নিকট দিয়ে অতিক্রম কালে বললেন, এ দুই কবর বাসীর শাস্তি হচ্ছে। কিন্তু বড় ধরণের কোন পাপের কারণে এই শাস্তি হচ্ছে না। অতঃপর বললেন, হ্যাঁ এদের একজন পেশাব থেকে বাঁচত না আর অন্যজন লোকসমাজে চুগলখোরি করে বেড়াত।”
[বুখারি ও মুসলিম]
৩৬. মিথ্যা কসম খাওয়া:
الكَبائِرُ: الإشْراكُ باللَّهِ، واليَمِينُ الغَمُوسُ
“কবিরা গুনাহ হলো, আল্লাহর সাথে শিরক (অংশী স্থাপন) করা ও মিথ্যা কসম খাওয়া।” [বুখারি]
৩৭. মিথ্যা কথা বলা:
রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
آيَةُ المُنافِقِ ثَلاثٌ: إذا حَدَّثَ كَذَبَ
“মুনাফিকের আলামত তিনটি। কথা বললে মিথ্যা বলে।”
অন্য হাদিসে এসেছে, জাহান্নামে যাবে পাঁচ শ্রেণির লোক, (তার মধ্যে একজন হল) মিথ্যাবাদী। [সহিহ মুসলিম]
৩৮. জিনা-ব্যভিচার করা:
মহান আল্লাহ বলেন,
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا ۖ إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا
“তোমরা জেনার ধারে কাছেও যেও না। কারণ, এ এক অশ্লীল কর্ম যার পরিণাম খুব মন্দ।” [ইসরা: ৩২]
৩৯. সমকামিতা:
মহান আল্লাহ লুত (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সম্প্রদায়ের বিকৃত রুচি সম্পন্ন লোকদের লক্ষ্য করে বলেন,
أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِّنَ الْعَالَمِينَ
“তোমরা (সমকামিতার মত এ ধরনের) নির্লজ্জ কর্মে লিপ্ত হচ্ছে?! ইতোপূর্বে সমগ্র বিশ্বে তোমাদের মত এ কাজ আর কেউ করেনি।”
[আরাফ: ৮০]
৪০. সুদ খাওয়া:
রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ رَسولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عليه وسلَّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤْكِلَهُ، وَكَاتِبَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَقالَ: هُمْ سَوَاءٌ
নবি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুদ গ্রহীতা, দাতা, লেখক এবং সাক্ষীকে অভিশাপ করে বলেন, এরা সবাই সমান (গুনাহগার)।” [সহিহ মুসলিম]
৪১. জাকাত আদায় না করা:
রসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ما من رجلٍ لا يؤدي زكاةَ مالِه إلا جُعل يومَ القيامةِ صفائحُ من نارٍ يُكوى بها جبينُه وجبهتُه وظهرُه في يومٍ كان مقدارُه خمسين ألفَ سنةً
“কোন ব্যক্তি তার সম্পদের জাকাত আদায় না করলে আল্লাহ উক্ত সম্পদকে আগুণের তক্তা বানিয়ে তার কপাল ও পৃষ্ঠদেশে ছেক দিবেন। আর এই শাস্তি প্রদান করা হবে এমন এক দিন যা (দুনিয়ার) পঞ্চাশ হাজার দিনের সমান লম্বা।”
[সহিহ মুসলিম]
৪২. মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনাকারী:
আল্লাহর নবি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَن تَحَلَّمَ بحُلْمٍ لَمْ يَرَهُ كُلِّفَ أنْ يَعْقِدَ بيْنَ شَعِيرَتَيْنِ، ولَنْ يَفْعَلَ
“যে ব্যক্তি বাস্তবে দেখেনি এরূপ স্বপ্নের কথা বর্ণনা করে তাকে দু টি চুলে গিরা বাধতে বলা হবে কিন্তু তা সে পারবে না।” [সহিহ মুসলিম]
৪৩. নিজেদের কথা অন্য কাউকে শোনাতে আগ্রহী নয় এরূপ লোকদের কথোপকথন যে ব্যক্তি গোপনে কান লাগিয়ে শোনার চেষ্টা করে:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
من استمع إلى حديثِ قومٍ وهم له كارِهونَ صُبَّ في أذنهِ الآنُكُ يومَ القيامةِ
“যে ব্যক্তি এমন লোকদের কথা কান লাগিয়ে শুনে যারা নিজেদের কথা তাকে শোনাতে চায় না অথবা তারা এর থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে- কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা সে ব্যক্তির কানে সীসা ঢেলে দিবেন।”
[মুসলিম]
৪৪. ছবি প্রস্ততকারক:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
إنَّ أشدَّ النَّاسِ عذابًا عندَ اللَّهِ المصَوِّرونَ
“ছবি প্রস্তুতকারীদেরকে কেয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি প্রদান করা হবে।” [মুসলিম]
৪৫-৪৬. যে হিলা এবং যার জন্যে হিলা করা হয়:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ اللهُ الْمُحِلَّ والْمُحَلَّلَ لَهُ
“যে হিলা করে এবং যার জন্য করা হয় আল্লাহ তায়ালা উভয়কে অভিসম্পাত করেছেন।”
[আবু দাউদ, তিরমিযি ও ইবনে মাজাহ-সহিহ]
হিলা অর্থ: তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীকে হালাল করার উদ্দেশ্যে চুক্তি ভিত্তিক বিয়ে করা।
৪৭. পোষ্যকে ভরণ-পোষণ না দিয়ে তার ক্ষতি সাধন করা:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
كَفَى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يُضَيِّعَ مَنْ يَقُوتُ
“মানুষ পাপী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার পোষ্যকে ভরণ-পোষণ না দিয়ে তার ক্ষতি সাধন করে।” [আহমদ ৬৪৫৯, ৬৭৮০, আবু দাউদ ১৬৯২]
এ শব্দে হাদিসটি দুর্বল। তবে এর বিকল্প সহিহ হাদিস রয়েছে। যেমন: সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
كَفَى بِالمَرْءِ إثْمَاً أنْ يحْبِسَ عَمَّنْ يَمْلِكُ قُوتَهُ
“মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে যার খাদ্যের মালিক, তার খাদ্য সে আটকে রাখে।”
[মুসলিম, হা/২৩৫৯]
৪৮. ঘুষ লেনদেন:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ الرَّاشِي وَالْمُرْتَشِي
“ঘুষ প্রদানকারী এবং ঘুষ গ্রহণকারী উভয়ের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন।”
[আহমদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ-সহিহ]
৪৯-৫০. বংশ মর্যাদায় আঘাত করা এবং মৃতের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
اثنتانِ في الناسِ هما بهم كفرٌ : الطعنُ في الأنسابِ ، و النِّياحةُ على الميِّتِ
“মানুষের মাঝে দু টি কাজ কুফরি: বংশ মর্যাদায় আঘাত হানা এবং মৃতের জন্য উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা।” [সহিহ মুসলিম]
৫১. মুসলিম জামাত থেকে বের হয়ে যাওয়া:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
من فارق الجماعةَ قَيْدَ شِبرٍ فقد خلع رِبقةَ الإسلامِ من عُنُقِهِ وَمَنْ دَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ فَهُوَ مِنْ جُثَى جَهَنَّمَ وَإِنْ صَامَ وَصَلَّى وَزَعَمَ أَنَّهُ مُسْلِمٌ
“যে ব্যক্তি মুসলিম জামাত থেকে এক বিঘত পরিমাণ বের হয়ে গেল সে ইসলামের রশি তার গলা থেকে খুলে ফেলে দিল এবং যে ব্যক্তি জাহেলিয়াত (তথা বিজাতীয় মতবাদ)-এর প্রতি আহবান জানাল সে নামাজ-রোজা করলেও জাহান্নামের ইন্ধন হবে।” [আহমদ, ইবনে খুযায়মা, তিরমিযি]
৫২. জুয়া ও মদ:
মহান আল্লাহ বলেন,
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا “তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাস করে। বলুন, এ দুটি বড় পাপের কাজ।” [সূরা বাকারা:২১৯]
৫৩. কোনও মুসলিমকে গালি দেওয়া, তার সাথে লড়াই বা মারামারিতে লিপ্ত হওয়া:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
سِبَابُ المُسْلِمِ فُسُوقٌ، وقِتَالُهُ كُفْرٌ
“মুসলিমকে গালাগালি করা ফাসেকি এবং তার সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়া কুফরি কাজ।” [বুখারি]
৫৪. রসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নামে মিথ্যা হাদিস বর্ণনা করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
من كذب عليَّ مُتعمِّدًا ، فلْيتبوَّأْ مقعدَه من النَّارِ
“যে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার নামে মিথ্যা কথা বর্ণনা করল সে জাহান্নামে তার আবাসস্থল নির্ধারণ করে নিলো।” [বুখারি]
৫৫. চুরি করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ اللَّهُ السَّارِقَ، يَسْرِقُ البَيْضَةَ فَتُقْطَعُ يَدُهُ
“চোরের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত। একটা ডিম চুরির অপরাধে যার হাত কাটা হয়।” [মুসলিম]
৫৬. খেলার ছলে কোন প্রাণীকে নিক্ষেপণ যোগ্য অস্ত্রের লক্ষ্য বস্তু বানানো:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لعن من اتَّخَذ شيئًا فيه الرُّوحُ غَرَضًا
“যে ব্যক্তি কোন প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানাল তার উপর আল্লাহর অভিসম্পাত।” [মুসলিম]
৫৭. কোন অপরাধীকে আশ্রয় দানকারী:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ولعنَ اللَّهُ مَن آوى مُحدِثًا
“যে ব্যক্তি কোন অপরাধী বা দুষ্কৃতিকারীকে আশ্রয় দেয় তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ।” [মুসলিম]
المحدث هو فاعل الجريمة
‘মুহদিস’ অর্থ: অপরাধ কারী।
৫৮. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবেহ করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعنَ اللَّهُ مَن ذبحَ لغيرِ اللَّهِ
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবেহ করে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ।” [মুসলিম]
৫৯-৬০. নিজের পিতা ব্যতিরেকে অন্যকে পিতা বলে দাবী করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ ادَّعَى إلى غَيْرِ أَبيهِ ، أوْ تَوَلَّى غيرَ مَوَالِيهِ ؛ فَعليهِ لَعْنَةُ اللهِ والملائكةِ والناسِ أجمعينَ
“যে ব্যক্তি অন্য কাউকে পিতা বলে দাবি করে অথবা তার মনিবকে ছেড়ে দিয়ে অন্য মনিবের নিকট পালিয়ে যায় তার উপর আল্লাহ, ফিরিশতাগণ এবং সকল মানুষের অভিশাপ।”
[সহিহ বুখারি ও মুসলিম]