সাফিয়্যাহ রদ্বীয়াল্লাহু আনহা
খন্দক, মতান্তরে উহুদ যুদ্ধের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিম মহিলাদেরকে কবি হাসসান ইবনে ছাবিত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফারে’ দুর্গে নিরাপত্তার জন্য রেখে যান। এই ফারে’ দুর্গকে ‘উতুম’ দুর্গও বলা হত। তাদের সাথে হযরত হাসসানও ছিলেন। এই মহিলাদের মধ্যে সাফিয়্যা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাও ছিলেন।
একদিন এক ইহুদীকে তিনি দুর্গের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে দেখলেন। তিনি প্রমাদ গুনলেন, যদি সে মহিলাদের অবস্থান জেনে যায় তাহলে ভীষণ বিপদ আসতে পারে। কারন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বাহিনীসহ তখন জিহাদের ময়দানে অবস্থান করছেন।
বিপদের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে হাসসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, এই ইহুদীকে হত্যা কর। তা না হলে সে আমাদের অবস্থানের কথা অন্য ইহুদীদের জানিয়ে দেবে। হাসসান বললেন, আপনার জানা আছে আমার নিকট এর কোন প্রতিকার নেই। আমার মধ্যে যদি সেই সাহস থাকত তাহলে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথেই থাকতাম।
সাফিয়্যা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা নিজে তাঁবুর একটি খুঁটি নিয়ে দুর্গের প্রধান ফটকের নিকট এলেন। সুযোগ বুঝে সর্বশক্তি দিয়ে মাথায় আঘাত করে ইহুদীটিকে হত্যা করলেন। তারপর হাসসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, যাও এবার তার সঙ্গের জিনিসগুলো নিয়ে এসো। যেহেতু আমি নারী, আর সে পুরুষ তাই এ কাজটি আমার দ্বারা হবেনা। এ কাজটি তোমাকে করতে হবে। হাসসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ঐ জিনিসের প্রয়োজন নেই।
অতঃপর সাফিয়্যা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা ইহুদীর মাথা কেটে এনে দুর্গের নিচে ছুড়ে ফেলেন। আর এতে নিচের ঢালে অবস্থানরত ইহুদীরা ভয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
ঐতিহাসিকদের মতে, তিনিই প্রথম মুসলিম নারী যিনি একজন কাফির পুরুষকে হত্যা করেছেন।
(আসহাবে রাসূলের জীবনকথা, নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবনী)