স্বামীর সাথে এক বিছানায় শোয়া যাবে?
প্রসূতি নারী কত দিন নাপাক থাকে? এ সময় কি স্বামীর সাথে এক বিছানায় শোয়া যাবে? সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পরে একজন প্রসূতি নারী কত দিন পর্যন্ত নাপাক থাকে? এ সময় সে যদি তার স্বামীর সাথে এক বিছানায় শোয় তাহলে স্বামীও কি নাপাক হবে?
১. সন্তান জন্মের পরে প্রসূতি মহিলাদের নেফাসের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৪০ দিন। এই সময় একজন মহিলা নাপাক অবস্থায় থাকে। উম্মে সালামা রা. বর্ণিত হাদিসে এসেছে:
كانتِ النُّفساءُ على عهدِ رسولِ اللَّهِ صلَّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ تقعدُ بعدَ نفاسِها أربعينَ يومًا أو أربعينَ ليلةً
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে নেফাস তথা প্রসূতি নারীরা চল্লিশ দিন বিরতি নিত”। (সহিহ আবু দাউদ, হা/৩১১-আলবানি)
২. এই নাপাক অবস্থায় তার জন্য, সালাত, সিয়াম, কাবা ঘরের তওয়াফ, স্বামী সহবাস করা ইত্যাদি বৈধ নয়।
৩. এ অবস্থায় স্বামী সহবাস ছাড়া স্বামী-স্ত্রী পাশাপাশি শোয়া, একে অপরকে স্পর্শ করা, আদর-সোহাগ ও আনন্দ-বিনোদন করা সবাই জায়েজ। এতে স্বামী নাপাক হবে না। এ সময় তার সাংসারিক সকল কাজ করাই বৈধ। প্রসূতি মহিলা রান্নাবান্না বা বাড়ির কোন কাজ করতে পারবে না…এটা কুসংস্কার। ইসলামে কুসংস্কারের স্থান নাই।
৪. এই সময় ছুটে যাওয়া নামাজগুলো কাজা করার প্রয়োজন নেই তবে ফরজ রোজা গুলো পরবর্তীতে স্বাভাবিক অবস্থায় কাজা করে নিতে হবে।
হাদিসে এসেছে:
كانت المرأةُ من نساءِ النبيِّ تَقعُدُ في النِّفاسِ أربعين ليلةً لا يَأمُرُها النبيُّ بقضاءِ صلاةِ النِّفاسِ
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের কারো নিফাস হলে চল্লিশ দিন বিরতি নিতেন। তিনি তাকে নিফাস অবস্থার সালাত কাজা করার নির্দেশ দিতেন না”। (ইরওয়াউল গালিল, হা ২০১-হাসান)
৫. ৪০ দিনের আগে যখনই রক্ত বন্ধ হয়ে হবে তখনই গোসল করে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে এবং যথারীতি নামায, রোযা ইত্যাদি শুরু করতে হবে।
৬. ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও যদি স্রাব চালু থাকে তাহলে তা রোগ হিসেবে গণ্য হবে। এ সময় সে নিম্নাংশে একটা কাপড় বেঁধে বা আন্ডার ওয়্যার পরিধান করে নিবে- যেন রক্তস্রাব পা দিয়ে নিচে গড়িয়ে না পড়ে এবং প্রত্যেক ওয়াক্তে আলাদাভাবে করে ওযু করে সালাত আদায় করবে। এক ওয়াক্তের ওযু দ্বারা একাধিক ওয়াক্তের সালাত আদায় করবে না।
আল্লাহু আলাম।