সুখি দাম্পত্য জীবনের সন্ধানে – পর্ব ১
Table of Contents
সুখি দাম্পত্য জীবনের সন্ধানে
আমরা প্রায়শঃই দেখে থাকি নারী ও পুরুষের দাম্পত্যভুবনে ভালোবাসার মানুষটিকে আর ভাল লাগছে নাহ। দিনের পর দিন একই সাথে, একই ছাদের নিচে থাকার পরও সবচেয়ে কাছের মানুষটির উপর বিরক্তবোধ কাজ করছে। আর দাম্পত্য জীবন হয়ে ওঠছে একঘেয়ে এবং অশান্তিময়। যার ফলে সঙ্গীর সঙ্গে ক্রমশঃ দুরত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমতাবস্থায় দাম্পত্য জীবন সুখী ও সুন্দর করতে অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যান।
মূলতঃ পুরুষ ও নারীর দাম্পত্য জীবনকে সুন্দর মধুময় করে তোলার প্রধান অস্ত্র হচ্ছে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আচরণ। দু’টি তরুন-তরুনীর তাজা প্রাণের জীবন সংগ্রামে মিশে থাকে অজস্র সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্না ও বেদনা। এসবেরই চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে বিয়ে পরবর্তী দাম্পত্য জীবনে।
বর্তমান সমাজে অধিকাংশের দাম্পত্য জীবন নিরানন্দ একঘেয়ে। প্রকৃত দ্বীনী দাম্পত্য শিক্ষার অভাবে সংসার আজ অপ্রীতি ও নানা মনোমালিন্যের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আর দাম্পত্য জীবন সুখময় করে তোলার উপায় না জানার জন্য বহু দম্পতি দাম্পত্য জীবনে সুখী হ’তে পারছেন না। এজন্য পৃথিবীর বুকে সুখী দম্পতির সংখ্যা দিনের পর দিন কমেই আসছে। ফলে মানুষের মাঝে ক্রমশঃ বিয়েভীতির পাশাপাশি বিয়েতে আগ্রহের অভাব বড়ই স্পষ্ট হয়ে দেখা দিচ্ছে।
তবে একদল আছেন যাঁরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন বিয়ে মানেই হচ্ছে যৌন মিলনের ছাড়পত্র আর দাম্পত্য মানেই হচ্ছে যৌনতা আর যৌনতা! নারী ও পুরুষের বিবাহিত জীবনের স্বকীয়তাকে প্রথম দৃষ্টি থেকেই ভুল ভাবে দেখতে শুরু করার কারণে প্রকৃত দাম্পত্য সুখ এদের অধরাই থেকে যায়।
মূলতঃ সুখী ও সুন্দর দাম্পত্য জীবন গঠনে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে ভূমিকা রাখতে হয়। উভয়কেই পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল ও শ্রদ্ধাশীল হতে হয়। একে অপরের সুবিধা ও সমস্যাগুলো বাস্তবতার নিরিখে অনুধাবন করতে হয়। স্বামী যদি অসহযোগীতা করে, স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব পালন না করে- তাহলে “সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে” এই নীতিবাক্যে সুখ আসবে না।
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَآئِكُمْ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ عَلِمَ اللّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ فَالآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُواْ مَا كَتَبَ اللّهُ لَكُمْ وَكُلُواْ وَاشْرَبُواْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّواْ الصِّيَامَ إِلَى الَّليْلِ وَلاَ تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ تِلْكَ حُدُودُ اللّهِ فَلاَ تَقْرَبُوهَا كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে।
[সূরা আল বাকারা: ১৮৭]
মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ বলেছেন,
‘স্ত্রীরা তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরাও স্ত্রীদের জন্য পোশাক স্বরূপ।’
অর্থাৎ মহান সৃষ্টিকর্তা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করেছেন যে, সুখময় দাম্পত্য জীবন গঠনে উভয়ের ভূমিকা ও দায়িত্ব সমান গুরুত্বপূর্ণ।
অপর এক আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন,
وَالْمُطَلَّقَاتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلاَثَةَ قُرُوَءٍ وَلاَ يَحِلُّ لَهُنَّ أَن يَكْتُمْنَ مَا خَلَقَ اللّهُ فِي أَرْحَامِهِنَّ إِن كُنَّ يُؤْمِنَّ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِي ذَلِكَ إِنْ أَرَادُواْ إِصْلاَحًا وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ وَاللّهُ عَزِيزٌ حَكُيمٌ
আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। আর যদি সে আল্লাহর প্রতি এবং আখেরাত দিবসের উপর ঈমানদার হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ যা তার জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন তা লুকিয়ে রাখা জায়েজ নয়। আর যদি সদ্ভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে। আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীরদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।
[সূরা আল বাকারা: ২২৮]
‘স্বামীর যেমন স্ত্রীর থেকে ভালো ব্যবহার পাওয়ার অধিকার আছে, তেমনি স্ত্রীরও অধিকার আছে স্বামী থেকে ভালো ব্যবহার পাওয়ার।’
এ আয়াতেও সদাচারণের আদেশ উভয়কে সমানভাবে করা হয়েছে। তবে সূরা নিসার ১৯ নম্বর আয়াতে বিশেষভাবে শুধু স্বামীকে আদেশ করা হয়েছে, ‘তোমার স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো।’ অর্থাৎ এ আয়াতে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, সংসারের মিল-মহব্বত, সুখ-শান্তি ধরে রাখার পেছনে স্বামীর আচরণ ও ভূমিকাটাই মূখ্য।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَرِثُواْ النِّسَاء كَرْهًا وَلاَ تَعْضُلُوهُنَّ لِتَذْهَبُواْ بِبَعْضِ مَا آتَيْتُمُوهُنَّ إِلاَّ أَن يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ فَإِن كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا
হে ঈমাণদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহন করা তোমাদের জন্যে হালাল নয় এবং তাদেরকে আটক রেখো না যাতে তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ তার কিয়দংশ নিয়ে নাও; কিন্তু তারা যদি কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতা করে! নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন।
[সূরা নিসার-১৯]
একজন পুরুষের একগুঁয়েমিতা, অসাড়তা এবং অতিমাত্রায় কর্তৃত্বপরায়ণতা দাম্পত্য জীবনকে দুঃখ-কষ্টে ভরিয়ে তোলে। তবে দৈনন্দিন জীবনের অসংখ্য সংঘাতের দুর্বিপাক থেকে স্বামীকে কিছুটা আড়াল করবার জন্যে স্বামীর সঙ্গে ছায়ার মতো থেকে নারীকে হতে হবে সখী। স্বামীর কর্মব্যস্ততাকে নিজের জীবনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবার জন্যে সে হবে সহধর্মিনী। স্বামীর নিপুণ সেবার ভার সে নিজ হাতে তুলে নিতে সে হবে প্রেমিকা। সে যখন স্বামীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে মেতে উঠবে তখন সে হবে বিশ্বস্ত ও প্রানোচ্ছ্বল।
সুখী দাম্পত্য জীবনে এটা প্রত্যেক নারীর অন্যতম হাতিয়ার। পুরুযরা স্বভাবগতভাবেই একঘেয়েমিকে সহ্য করতে পারে না। এজন্য তার একঘেয়েমী দূর করে তার সামনে নানা রূপে নিজেকে উপস্থাপন করে দাম্পত্য জীবনকে মধুময় করে তুলতে হবে।
বয়স যাই হোক না কেন, সব সময়ই ভাবতে হবে দু’জনে যেন দু’টি নবীন প্রেমিক আর প্রেমিকা। দু’জনের কথার মাঝে ফুটিয়ে তুলুন নূতন প্রেমিক-প্রেমিকার কথার সুর।
এই পর্বে নিজের দ্বীন চর্চা ও সমাজ গবেষণার বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে পুরুষ ভাইদের জন্য কিছু পরামর্শ শেয়ার করছি যেগুলো অনুশীলনের ফলে দাম্পত্য জীবনকে সুখময় করে তোলার ক্ষেত্রে আপনি একজন দায়িত্বশীল ও সফল স্বামীরূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবেন ইনশা-আল্লাহ্!
বাহিরের লোকজনের জন্য নয় জীবনসঙ্গীর জন্য নিজেকে সাজান
আপনার জীবনসঙ্গীনীর জন্য আপনি নিজে সুন্দর পোশাক পরিধান করুন, সুগন্ধি ব্যবহার করুন। যেভাবে স্বামী চায় তার স্ত্রী তার জন্য সেজে থাকুক, ঠিক সেভাবেই স্ত্রীও চায় তার স্বামী তার জন্য সেজে থাকুক। মনে রাখবেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা ঘরে এসে মেসওয়াক করতেন, আতর-সুগন্ধি ব্যবহার করতেন।
জীবনসঙ্গীনীর জন্য সুন্দর একটা নাম নির্বাচন করুন
আপনার জীবনসঙ্গীনীকে ডাকার জন্য খুব সুন্দর একটা উপনাম নির্বাচন করুন। কখনও তাকে কোনো বাজে নামে বা মন্দ শব্দে ডাকবেন না। আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রীদের এমন নামে ডাকতেন যে নামে ডাকা তারা পছন্দ করত। তাই তার জন্য তার মনের মতো একটি সুন্দর নাম নির্ধারণ করুন। যে নাম ধরে ডাকলেই খুশিতে তার মন ভরে উঠবে।
স্ত্রীর গুণের মূল্যায়ন করুন
অধিকাংশ পরিবারে স্ত্রী সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পরেও স্বামীর মন পায় না। এমনকি এত কিছু করার পরেও সামান্য ত্রুটি করা মাত্রই স্বামী তা কঠিনভাবে ধরে বসে। স্ত্রীর সঙ্গে এমনটি কখনও করবেন না। এটা চরম অন্যায় ও জুলুম। স্ত্রীর ভালো গুণ ও পরিশ্রমের মূল্যায়ন করুন। খুঁত খোঁজা নয় শুধুমাত্র তার গুণগুলোর প্রতি আপনার মনোযোগ ও দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন।
স্ত্রীর ছোটখাটো ভুলগুলো এড়িয়ে যান
আপনার জীবনসঙ্গীনীকে কোনো ভুল করতে দেখলে তা সযত্নে এড়িয়ে চলুন। মারাত্মক কোন ভুল না হলে চেপে যান। নাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রীদেরকে অপছন্দের কিছু করতে দেখলে চুপ থাকতেন। যদিও খুব কম সংখ্যক স্বামীই এ গুণের অধিকারী হতে পারেন।
স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসুন
সে যখনই আপনার সামনে আসবে তখনই তাকে মুচকি হাসি দিয়ে সম্ভাষণ জানান। বেশিরভাগ সাক্ষাতের সময়, বিদায়ের সময় নিবিড় আলিঙ্গন করুন। ভেবে দেখুন, আপনার স্ত্রী যদি সবসময় আপনাকে হাসি-খুশি দেখে তাহলে আপনার জীবন কেমন সুখময় হবে!
স্ত্রীর কৃতজ্ঞতা আদায় করুন
আপনার জন্য, আপনার সংসারের জন্য সে যে কাজগুলো করছে বা করেছে সেগুলোর জন্য সরাসরি বিনাশর্তে উদার মনে তার কৃতজ্ঞতা আদায় করুন। যোগ্যতা অনুযায়ী তার মেধা ও মননের স্বীকৃতিও দিন। তার কাজের ভুল ধরার পরিবর্তে শুধরে দিন, তার সমালোচনার পরিবর্তে সহযোগিতা করার চেষ্টা করুন।
জীবনসঙ্গীনীকে খুশি করুন
জীবনসঙ্গীনীকে বলুন, সে যেন এমন দশটি কাজের কথা আপনাকে বলে যেগুলো আপনি তার জন্য করলে তার ভালো লাগবে- সে খুশি হবে। তার থেকে জেনে নিয়ে তাকে খুশি করার জন্য আপনি সেগুলো মাঝে মধ্যেই করুন। নিজের জীবনসঙ্গীনীর সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা-মজা করুন। কৌতুকপ্রদ কথা বলে তার মন ভালো করে দিন।
স্ত্রীর সুযোগ-সুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখুন
জীবনসঙ্গীনীর সুযোগ সুবিধার বিষয়টিকে ছোট মনে করবেন না, তাকে সুখী করার চেষ্টা করুন। অনেক স্বামী নিজের স্ত্রীর আগ্রহের প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ করে না, একে কোনো বিষয়ই মনে করে না। স্ত্রীকে একজন মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করে এমন ভুল করা হতে বিরত থাকবেন।
গৃহস্থালীয় কাজে স্ত্রীকে সহযোগিতা করুন
কর্মব্যস্ত থাকা সত্বেও যখনই বাসায় আসবেন তখন একটু সময় বের করে চেষ্টা করুন স্ত্রীর কাজে সহযোগিতা করার। বিশেষকরে ছুটির দিনটি দুজনে শেয়ার করে নিন ঘরের কাজ।
স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম ও ভদ্রোচিত আচরন করুন
নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানুষ সে যে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে সবচেয়ে ভালো ব্যবহার করে। আমি আমার স্ত্রীদের সঙ্গে সবচেয়ে ভালো ব্যবহার করি।’ সবসময় মনে রাখবেন, স্ত্রীর সঙ্গে যা-ই করছেন মৃত্যু পরবর্তী জীবনে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নিকট তার জবাব দিতে হবে। সুতরাং স্ত্রীকে নিজের বন্ধু ভাবতে শিখুন।
একান্ত ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপনে স্ত্রীর ইচ্ছাকেও প্রাধান্য দিন
দাম্পত্য জীবনে মানসিক ও শারীরীক প্রশান্তির জন্য সুস্থ্য ও স্বাভাবিক যৌন সম্পর্কের বিকল্প নেই। তবে তা যেন একতরফা না হয়। বরং একান্ত ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপনে আপনার ইচ্ছের পাশাপাশি স্ত্রীর ইচ্ছা ও মতামতকে অবশ্যই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করুন। তার মন ও শরীর সায় না দিলে ধৈর্য্য ধারণ করুন। কখনোই গৃহপালিত পশুর মত বা ক্রীত-দাসীর মত তাকে একতরফা ব্যবহারের চেষ্টা করবেন না।
স্ত্রীর জন্য সামর্থানুযায়ী ভরণপোষণের ব্যবস্থা করুন
স্ত্রীর জন্য খরচ করার ব্যাপারে কিপ্টেমি করা যাবে না। ইসলামে তো ডিভোর্স দেয়ার সময়েও নারীকে গিফট দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কাজেই, স্ত্রী থাকাকালীন সময় যে গিফট দিতে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাকে রিক্ত হস্ত করে না রেখে সাধারণ ও জরুরী প্রয়োজন মেটানোর জন্য কিছু অর্থ সবসময় তাঁর হাতে দিয়ে রাখুন।
চলমান
পর্ব – ২