সাধারণের ভেতর অসাধারণত্ব
জুম্মার নামাজ শেষে বেশিরভাগ মসজিদে টাকা তোলা হয়। দান বক্স মুসল্লিদের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়, টাকার থলি নিয়ে যাওয়া হয়। মুসল্লিদের টাকা দেবার একটি বিশেষ দৃশ্য আমার খুব ভালো লাগে।
একই টাকা দুইজন দুইভাবে দান বাক্সে দেয়ায় দুই ধরণের সওয়াব পাবে বলে আমার বিশ্বাস। অর্থাৎ, একজন ১০ টাকা দিলো, আরেকজনও ১০ টাকা দিলো। দুজনের ১০ টাকা দানের সওয়াব দুই ধরণের হতে পারে।
কিভাবে?
মনে করুন, আমি আমার পকেট থেকে ১০ টাকা দান করলাম। যেভাবে দান করা উচিত, সবকিছু মেনেই আমি দান করেছি। আশা করা যায় আমি ১০ টাকা দানের সওয়াব পাবো।
অন্যদিকে, আরেকজন ব্যক্তি আমার মতো ১০ টাকা দান করেই আমার চেয়ে বেশি সওয়াব পেতে পারে। এমন একটা দৃশ্য আজকে আমার পাশের জনকে দেখে মনে হলো। এই দৃশ্যটি খুব পরিচিত। ছোটোবেলায় আমাদের প্রায় সবার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে।
লোকটি পকেট থেকে ১০ টাকা বের করে তার ছোট্ট ছেলেকে দিলো। ছেলেটা দান বক্সে টাকা রাখলো। একই পরিমাণ দান, কিন্তু এখানে দুটো আমল হলো।
১. দানের আমল।
২. দান করা শেখানোর আমল।
বাবা তার ছেলকে শেখালেন কিভাবে দান করতে হয়। এটাকে বলা হয় ‘Teaching by examples’ বা দৃষ্টান্তমূলক শিক্ষা। যেসব বাবা শুধুমাত্র দান করার ফযিলতই বর্ণনা করেন, আর যেসব বাবা ছেলেকে টাকা দিয়ে বলেন ‘দান করো’; এই দুই বাবার সন্তানের মধ্যে কোন সন্তান বড়ো হয়েও দান করবে?
যে বাবা উদাহরণের মাধ্যমে শেখালেন, তার সন্তানই বড়ো হয়ে দানশীল হবে এই সম্ভাবনা বেশি। হতে পারে বাবা অবচেতন মনে কাজটি করলেন, সন্তানের প্রতি মমতাবশত টাকা দিলেন। কিন্তু, সন্তান এটা থেকে গুরুত্বপূর্ণ লেসন শিখে নিলো।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এরকম অনেক ছোটো ছোটো স্বাভাবিক ঘটনাগুলো একটু ভিন্ন আঙ্গিকে দেখলেই দেখতে পাবো, সাধারণের পেছনে কতো অসাধারণত্ব লুকিয়ে আছে।
সাধারণের ভেতর অসাধারণত্ব