বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে সমকামিতা নামক প্রকৃতিবিরুদ্ধ ও নিকৃষ্ট কাজটির প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এর প্রচার-প্রসারে পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে হাবুডুবু খাওয়া কিছু পথভ্রষ্ট মানুষ বিভিন্ন ভাবে কাজ করছে। এরা বিভিন্ন এনজিও এর ছাত্র ছায়ায় যুবকদেরকে এই অন্যায় কর্মে লিপ্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ইতোমধ্যে বহু যুবক-যুবতী তাদের খপ্পরে পড়ে শুধু তাদের দ্বীনদারী ও চরিত্রকে ভূলুণ্ঠিত করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং পুরো জীবনটাকেই এক গন্তব্যহীন অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। সে কারণে আমাদের যুব সমাজকে রক্ষা করতে এ বিষয়ে সচেতনতা খুবই জরুরি।
যাহোক, নিম্নে সমকামিতার ভয়াবহতা, ইসলামি ও প্রচলিত আইনে এর শাস্তি এবং এ থেকে পরিত্রাণের উপায় সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ আলোচনা করা হল:
ইসলামে সমকামিতা (homosexuality) তথা পুরুষের সাথে পুরুষ অথবা নারীর সাথে নারীর যৌনকর্মে লিপ্ত হওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, কবিরা গুনাহ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এটি জিনার থেকেও নিকৃষ্ট। কেননা তা প্রকৃতি বিরুদ্ধ যৌনাচার এবং মানবতা বিধ্বংসী আচরণ।
মানবজাতির পরিবার গঠনের স্বাভাবিক নিয়ম হল, একজন পুরুষ একজন নারীকে বৈধভাবে বিয়ে করার পর তারা দাম্পত্য জীবন গঠন করবে। অত:পর স্বামী-স্ত্রী মধুর মিলনে স্ত্রী গর্ভধারণ করবে ও সন্তান জন্ম দিবে। অতঃপর বাবা-মা সন্তানের পরিপালনের দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নিবেন। এই তো একটি সুন্দর মানবজীবন। এভাবে মানব সন্তানের বংশ বিস্তার ঘটবে এবং ফুলে-ফলে সুশোভিত হবে এই সুন্দর বসুন্ধরা। কিন্তু সমকামিতা হল, প্রকৃতি বিরুদ্ধ ও ধ্বংসাত্মক কাজ এবং মানবজাতির বংশ বিস্তারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক।
Table of Contents
কেন মানুষ সমকামী হয়?
বিজ্ঞানীরা সমকামিতার প্রকৃত কারণ জানেন না কিন্তু তারা তাত্ত্বিকভাবে ধারণা করেন যে, জিনগত, হরমোন গত এবং পরিবেশগত কারণসমূহের এক জটিল আন্তক্রিয়ার ফলে এটি ঘটে থাকে। (উইকিপিডিয়া) তবে কিছু মানুষ স্বাভাবিক যৌন চাহিদা তথা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি স্বাভাবিক যৌন আকর্ষণ থাকার পরও বিকৃত মানসিকতার কারণে ইচ্ছাকৃত ভাবে সমকামিতায় লিপ্ত হয়।
ইসলাম সমকামিতার পথ বন্ধ করেছে যেভাবে
ইসলাম সমকামিতার পথ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে যে নির্দেশনা প্রদান করেছে তা হল,
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لاَ يَنْظُرُ الرَّجُلُ إِلَى عَوْرَةِ الرَّجُلِ وَلاَ الْمَرْأَةُ إِلَى عَوْرَةِ الْمَرْأَةِ وَلاَ يُفْضِي الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ وَلاَ تُفْضِي الْمَرْأَةُ إِلَى الْمَرْأَةِ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ.
আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “এক পুরুষ অপর পুরুষের লজ্জাস্থানের প্রতি তাকাবে না। তেমনি এক নারী অপর নারীর লজ্জাস্থানের প্রতি তাকাবে না। দু জন পুরুষ একটি কাপড়ের নীচে শয্যা গ্রহণ করবে না। তেমনি দুজন নারী একটি কাপড়ের নীচে শয্যা গ্রহণ করবে না।” (মুসলিম, মিশকাত হা/৩১০০; বাংলা ৬ষ্ঠ খণ্ড, হা/২৯৬৬ ‘বিবাহ’ অধ্যায়)।
অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ ابْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ تُبَاشِرُ الْمَرْأَةُ الْمَرْأَةَ فَتَنْعَتْهَا لِزَوْجِهَا كَأَنَّهُ يَنْظُرُ إِلَيْهاَ.
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “এক নারী অপর নারীর চামড়ার সাথে চামড়ার লাগাবে না। কারণ সে তার স্বামীকে ঐ নারীর অঙ্গের বিবরণ দিতে পারে তখন তার স্বামী ঐ নারীকে যেন অন্তরের চোখে দেখবে।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪০৯৯; বাংলা ৮ম খন্ড, হা/৩৯২১ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়)।
এ দুটি হাদিসে ইসলাম সমকামিতার মত ভয়াবহ ও ঘৃণিত অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছে।
ইসলামের দৃষ্টিতে সমকামিতার ভয়াবহতা
নি:সন্দেহে সমকাম ধ্বংসাত্মক ও অভিশপ্ত পাপকর্ম, আল্লাহর শাস্তির কারণ ও মানবতা বিধ্বংসী অপরাধ।
নিম্নে কুরআন-সুন্নাহ ও প্রচলিত আইনের আলোকে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হল:
১. সমকাম আল্লাহর আজাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ
লুত সম্প্রদায়ের লোকজন সমকামিতায় লিপ্ত হলে মহাশক্তিধর আল্লাহ তাদেকে কিভাবে ধ্বংস করেছেন তা ফুটে উঠেছে এই আয়াতে:
فَلَمَّا جَاءَ أَمْرُنَا جَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهَا حِجَارَةً مِّن سِجِّيلٍ مَّنضُودٍ
“অতঃপর যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছল, এরপর যখন আমার সিদ্ধান্ত কার্যকর হল, তখন আমি জনপদের উপরিভাগ নিচে এবং নিম্নভাগ উপরে উঠালাম এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর-পাথর বর্ষণ করলাম।” (সুরা হুদ: ৮২)
ইতিহাসে এই ভয়াবহ ঘটনার নীরব সাক্ষী হয়ে আজও বিদ্যমান রয়েছে জর্ডানে অবস্থিত ‘ডেড সি’ (The Dead Sea) বা মৃত সাগর।
২. সমকামিতা একটি অভিশপ্ত কর্ম
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন,
لَعَنَ اللَّهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ ، لَعَنَ اللَّهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ ، ثَلاثًا -(حسنه شعيب الأرنؤوط في تحقيق المسند)
“যে ব্যক্তি লুতের সম্প্রদায়ের কাজে (সমকামে) লিপ্ত হবে তার প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত।যে ব্যক্তি লুতের সম্প্রদায়ের কাজে (সমকামে) লিপ্ত হবে তার প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত।” এ কথা তিনি তিনবার বলেছেন। (মুসনাদ আহমদ ২৯১৫/শাইখ শুআইব আরনাবুত হাদিসটিকে হাসান বলেছেন)
৩. তাছাড়া সমকামিতাকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীগণ প্রাণঘাতী এইডস সহ নানা জটিল ও কঠিন রোগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
ইসলামি আইনে সমকামিতার শাস্তি
ইসলামের ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী সমকামিতার শাস্তি হল, মৃত্যুদণ্ড:
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنهما قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( مَنْ وَجَدْتُمُوهُ يَعْمَلُ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ فَاقْتُلُوا الْفَاعِلَ وَالْمَفْعُولَ بِهِ ) وصححه الألباني في صحيح الترمذي .
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যাদেরকে তোমরা লুতের সম্প্রদায়ের কাজে (সমকামে) লিপ্ত দেখবে তাদের উভয়কেই হত্যা করো। (তিরমিজি: ৪/৫৭; আবু দাউদ: ৪/২৬৯; ইবনে মাজা: ২/৮৫৬-’শাইখ আলবানি হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন)
আল্লামা বিন বায রহঃ বলেন,
أن حكمه القتل الذي عليه أصحاب الرسول ﷺ وقد أجمعوا جميعًا على قتل اللوطي مطلقًا سواء كان بكرًا أو ثيبًا، بعض الفقهاء قالوا: إنه كالزاني يرجم المحصن ويجلد البكر مائة جلدة ويغرب عامًا، ولكنه قول ضعيف
“সমকামিতার শাস্তি হল, হত্যা। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবিদের সম্মিলিত অভিমত রয়েছে। তারা সকলেই একমত যে, সমকামীকে হত্যা করা হবে চাই যে বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত হোক।
কতিপয় ফকিহ বলেন যে, সমকামিতার ক্ষেত্রে জিনার মতই বিবাহিত হলে, তার শাস্তি পাথর মেরে হত্যা আর অবিবাহিত হলে এক একশ চাবুক ও একবছর দেশান্তর (জেল বা নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেয়া)। কিন্তু এটি দুর্বল কথা।” [শাইখের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট]
অবশ্য যদি কারও সাথে জোরপূর্বক সমকামিতা করা হয় বা যার সাথে এই অন্যায় করা হয়েছে সে যদি অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু বা পাগল হয় তাহলে তার উপর শাস্তি প্রয়োগ করা হবে না।
প্রচলিত আইনে সমকামিতার শাস্তি
অধিকাংশ সমাজে এবং সরকার ব্যবস্থায় সমকামী আচরণকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। উদাহরণ স্বরূপ: বাংলাদেশ (দশ বছরের থেকে শুরু করে আমরণ সশ্রম কারাদণ্ড) সহ দক্ষিণ এশিয়ার ৬ টি দেশের সংবিধানে ৩৭৭ ধারা এবং ১৯টি দেশে সমপর্যায়ের ধারা এবং সম্পূরক ধারা মোতাবেক সমকামিতা ও পশুকামিতা প্রকৃতি বিরোধী যৌনাচার হিসেবে শাস্তিযোগ্য ও দণ্ডনীয় ফৌজদারি অপরাধ।
বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা মোতাবেক পায়ু মৈথুন শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ, যার শাস্তি দশ বছর থেকে শুরু করে আজীবন কারাদণ্ড এবং সাথে জরিমানাও হতে পারে। এ আইনে বলা হয়েছে:
৩৭৭. প্রকৃতিবিরুদ্ধ অপরাধ: কোন ব্যক্তি যদি স্বেচ্ছায় কোন পুরুষ, নারী বা পশু প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে যৌন সঙ্গম করে, তবে তাকে আজীবন কারাদণ্ড দেয়া হবে, অথবা বর্ণনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কালের কারাদণ্ড প্রদান করা হবে যা দশ বছর পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে, এবং এর সাথে নির্দিষ্ট অঙ্কের আর্থিক জরিমানাও দিতে হবে।
ব্যাখ্যা: ধারা অনুযায়ী অপরাধ প্রমাণে যৌনসংগমের প্রয়োজনীয় প্রমাণ হিসেবে লিঙ্গ প্রবেশের প্রমাণ যথেষ্ট হবে।
৩৭৭ ধারার ব্যাখ্যায় পায়ু সঙ্গম জনিত যে কোন যৌথ যৌন কার্যকলাপকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একারণে, পরস্পর সম্মতিক্রমে বিপরীতকামী মুখকাম ও পায়ু মৈথুনও উক্ত আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে। [মুক্ত বিশ্বকোষ, বাংলাদেশে সমকামীদের অধিকার]
কেউ যদি জন্মগত ভাবে সম লিঙ্গের দিকে আকর্ষণ অনুভব করে তাহলে তার কী করণীয়?
সৃষ্টিগত ভাবে কারো মধ্যে সমলিঙ্গের দিকে আকর্ষণ থাকলে তাকে বিশ্বাস করতে হবে যে, আল্লাহ তাকে এমনটি করেছেন তার প্রতি পরীক্ষা হিসেবে। যেমন অনেক প্রতিবন্ধী মানবিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কারও চোখ নাই, কারও কথা বলার ক্ষমতা নাই, কেউ বা কানে শুনে না ইত্যাদি। ঠিক তেমনি সেও নারীর প্রতি স্বাভাবিক যৌন আকর্ষণ বোধ থেকে বঞ্চিত।
যাহোক, কোন ব্যক্তি যদি ব্যক্তি সমলিঙ্গের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করে তাহলে এ থেকে বাঁচার জন্য তার জন্য নিম্নে ৮টি করণীয় তুলে ধরা হল:
১) সে আল্লাহর ভয় ও জাহান্নামের শাস্তির কথা চিন্তা করে ধৈর্য ধারণ করবে এবং এ জঘন্য গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করবে। কোনভাবেই সম লিঙ্গের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করবে না। যদি সে ধৈর্য ধারণ করতে পারে তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে আখিরাতে মহা পুরস্কারে ভূষিত করবেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
أُولَـٰئِكَ يُجْزَوْنَ الْغُرْفَةَ بِمَا صَبَرُوا وَيُلَقَّوْنَ فِيهَا تَحِيَّةً وَسَلَامًا خَالِدِينَ فِيهَا ۚ حَسُنَتْ مُسْتَقَرًّا وَمُقَامًا
"তাদেরকে তাদের ধৈর্যের প্রতিদানে জান্নাতে কক্ষ দেয়া হবে এবং তাদেরকে তথায় দেয়া হবে সম্ভাষণ ও সালাম। তথায় তারা চিরকাল বসবাস করবে। অবস্থানস্থল ও বাসস্থান হিসেবে তা কত উত্তম!"
(আল ফুরকান: ৭৫ ও ৭৬)
২) সর্বদা আল্লাহর ভয় অন্তরে জাগ্রত রাখবে। মনে রাখা দরকার যে, আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কিয়ামতের মাঠে আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হয়ে দাঁড়াবে। তখন আমরা যত অন্যায় ও পাপকর্ম করেছি সব কিছুই প্রকাশিত হয়ে যাবে।
আল্লাহ বলেন,
يَوْمَ تَشْهَدُ عَلَيْهِمْ أَلْسِنَتُهُمْ وَأَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
“যেদিন প্রকাশ করে দেবে তাদের জিহবা, তাদের হাত ও তাদের পা, যা কিছু তারা করত।”
(সূরা নূর: ২৪)
৩) যদি বিপরীত লিঙ্গের প্রতি মোটেই আকর্ষণবোধ না থাকার কারণে বিয়ে করা সম্ভব না হয় অথচ প্রচণ্ড যৌন বাসনা অনুভব করে তাহলে করণীয় হল, রোজা রাখা। কেননা রোজার মাধ্যমে যৌন বাসনা নিয়ন্ত্রিত থাকে।
৪) কখনো একাকী নিভৃতে না থাকা। কেননা একাকীত্ব যৌন চিন্তা জাগ্রত করে। বরং যে কোন দীন বা দুনিয়ার উপকারী কাজে সময়কে কাজে লাগাতে চেষ্টা করতে হবে। যেমন: নেক আমল করা, কুরআন তিলাওয়াত করা, কুরআনে তাফসির পড়া, কুরআন মুখস্থ করা, জিকির করা, নামায পড়া, ইসলামি বই পড়া, ভালো আলেমদের লেকচার শোনা, শিক্ষণীয় ও উপকারী কোন কোর্স করা, জনকল্যাণ মূলক কাজ আঞ্জাম দেয়া, শখের কাজ করা (যদি তা হারাম না হয়) ইত্যাদি।
৫) পাপিষ্ঠ ও খারাপ লোকদের সংশ্রব থেকে দূরে থাকা। কারণ মানুষ সঙ্গ দোষে অন্যায় ও অশ্লীল পথে পা বাড়ায়।
৬) যৌন উদ্দীপক মুভি, মিউজিক ভিডিও, গান, টিভি শো ইত্যাদি না দেখা এবং অশ্লীল গল্প-উপন্যাস না পড়া।
৭) যৌন বাসনাকে উদ্দীপ্ত করে এমন খাওয়া-দাওয়াও সীমিত করা দরকার। কেননা এসব খাদ্যের প্রভাবে শরীরে যৌন চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
৮) তারপরও মনে খারাপ চিন্তা জাগ্রত হলে তৎক্ষণাৎ শয়তানের প্ররোচনা থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা তথা আউযুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম পাঠ করা কর্তব্য।
৯) সর্বোপরি মহান আল্লাহর নিকট নিজের সমস্যা থেকে মুক্তি চেয়ে দুআ ও আরাধনা করা।
আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে সকল প্রকার পাপাচার ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে রক্ষা করুন।
আমিন।