সংসারে ঝামেলা থেকে মুক্তির সহজ উপায়
সংসারে কতইনা ঝামেলা হয়, তাইনা?
স্বামী স্ত্রীর ঝগড়াঝাঁটি, শাশুড়ী ননদদের প্যারা, কাজের প্রেসার, বাচ্চার দুষ্টামি ইত্যাদি…
নিজের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। অসহায়ত্ব চেপে বসে, হতাশ লাগে। কান্না পায়, কিছুই ভালো লাগেনা, মনে হয় জীবনটা শেষ হয়ে গেলো বুঝি!
আমি এমন কিছু দ্বীনিবোনদের চিনি যারা রিতীমত মানসিকভাবে সমস্যাগ্রস্ত হয়ে গেছে, আল্লাহুম্মাগফিরলী।
তাদের যে কাউন্সেলিং প্রয়োজন তারাই ফীল করতে পারছেনা। যাই হোক, সবক্ষেত্রে কাউন্সেলিং লাগেওনা কিছু ব্যাপার মেনে নিলে।
যারা এমন সমস্যাগ্রস্ত তাদের জন্য আমি কিছু পরামর্শ দিচ্ছি।
বিশ্বাস করুন, সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
Table of Contents
সার্বক্ষণিক জিকিরে থাকা
১) সার্বক্ষণিক জিকির :-
সবসময়ই জিকিরে রত থাকবেন। ছোটো ছোটো জিকিরঃ সবচাইতে উত্তম হল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ! টয়লেট ছাড়া সব স্থানে জিকির করা যাবে। বাচ্চা ঘুম পাড়াবেন সুরে সুরে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ জিকির করে। বাসন ধুতে, রান্না করতে, ঘর গুছাতে সবসময় লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ চলতে থাকবে।
এছাড়া হাসবুনাল্লাহ ওয়া নি’মাল ওয়াকীল, দুরুদ, ইস্তেগফার ও জারি রাখবেন। মুখস্ত তিলাওয়াতগুলো করতে চেষ্টা করবেন। অন্তত বাচ্চাকে নিয়ে মোবাইলের এ্যাপ থেকে কুরআন তিলাওয়াতটা করার চেষ্টা করবেন রোজ ৫ মিনিট হলেও। আর রোজ ঘরে তিলাওয়াত অবশ্যই বাজাবেন। বাচ্চাকে বাদ্যবিহীন নাশীদ ও তিলাওয়াত শোনাবেন।
আল্লাহর সাথে গল্প
২) আল্লাহর সাথে গল্প :-
আপনার খারাপ লাগছে?
আল্লাহর সাথে গল্প করুন।
কাজ করছেন?
নাপাক আছেন?
কোনো সমস্যা নাই। বাসন ধুতে ধুতে, রান্না করতে করতে বলুনঃ আল্লাহ দেখছো আমার কত কষ্ট হচ্ছে, তুমিতো সব পারো, দাওনা আমার কষ্টটা দূর করে….
কেউ কষ্ট দিয়েছে?
আল্লাহকে বলুনঃ আল্লাহ দেখছো আমি কত কষ্ট পাচ্ছি?
আমার মনটা ভালো করে দাওনা…
মনে মনেই বলুন।
সারা দিন গল্প করতে থাকুন। আল্লাহকেই কথা বলার সাথী বানিয়ে নিন, বন্ধু বানিয়ে নিন। তিনি আপনার সব কথা শুনবেন। তিনি কখনো বিরক্ত হবেন না।
সালাত ও দুয়া
৩) সালাত ও দুয়া
সালাতে আপনার স্পেশাল দুয়াগুলো করুন। আপনার টাকার সমস্যা, বাজার নাই, কিছু খেতে ইচ্ছে হচ্ছে, বুয়া লাগবে, বাচ্চা জ্বালায় বেশি, জামাইর সাথে ঝগড়া, এটা চাই, ওটা চাইনা ইত্যাদি সব আল্লাহ তা’আলাকেই বলুন।
তিনিই সব ঠিক করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।
বাচ্চা নিয়ে সালাতে সমস্যা?
সালাম ফিরিয়ে বাচ্চাকে নিয়ে বাচ্চার হাত নিজ হাতের উপর রেখে মুনাজাত করুন। দেখেন কি সুন্দর জান্নাতি অনুভূতি হয় সুবহানাল্লাহ!!
রিযা বিল কাযা
৪) রিযা বিল কাযা
যদি দুয়া কবুলে দেরী হয় তবে ভাববেন তিনি আরো কিছুদিন আপনার ডাক শুনতে চান। কারণ আপনার ডাক তিনি সুবহানাহু ওয়া তাআলার বেশি পছন্দ। তাই সর্বাবস্থায় আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিনের উপর তাওয়াক্কুল রাখবেন।
এমনকি আপনি অসুস্থ হলেও খুশি হবেন। সবসময় ভাববেন আল্লাহ আপনাকে ভালো রেখেছেন, আল্লাহ আপনাকে উনার বিশেষ রহমত দিয়ে ঘিরে রেখেছেন, তিনি আপনাকে অনেক ভালোবাসেন। এই ভাবনার মাঝেই সকল সুখের চাবি আছে।
সবসময় ভাববেন আপনি অত্যন্ত ভালো আছেন। আপনার চাইতে যারা খারাপ হালাতে আছে, যাদের হাত নাই, পা নাই, যারা দিন মজুর, তাদের কথা ভাববেন।
কিছু ছোটো কিন্তু ফযিলতপূর্ণ দুয়া নিজেই খুজে নিন।
যাতে আমার ভালোবাসার বোনদের খুব বেশি কষ্টসাধ্য মনে না হয়ে যায়…
দুয়া ও ভালোবাসা সকলের প্রতি।