জীবনের যে কোন সময়ের চেয়ে সাধারণত যুবক বয়সটাই সেরা। এই সময়টাই নির্ধারণ করে দেয় বাকি জীবনের প্রায় সব হিসাব। আপনি যদি কোটিপতি হতে চান তাহলে এই যৌবন বয়সেই আপনাকে পরিকল্পনা করতে হবে। যদি হতে চান এই সময়ের সেরা মানুষ তাহলে কাজ শুরু করতে হবে যুবক বয়সেই। প্রায় প্রতিটি সফল বা ব্যর্থ মানুষের পিছনে তার যৌবনের কার্যাবলী দায়ী। শেখ সাদী রহ. বলেছেন,
“দুনিয়া ও পরকালের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তা এ যৌবন কালেই সংগ্রহ কর”
টগবগে একজন তরুণ বেশির ভাগ সময়ে কামনা, বাসনা, ধন-সম্পদ, বাড়ী-গাড়ী ও চাকচিক্যময় জীবন-যাপন নিয়েই চিন্তায় বিভোর। যৌবন বয়সে তার সবচেয়ে বেশি আল্লাহ ভীরুতার অবক্ষয় ঘটে। কখনও মনে হয় পৃথিবীটা তার এক হাতের মুষ্টির খেলা। কেউ কেউ ভাবে ইবাদতের বয়স এখনো পরে আছে।
সময়টা এখন ফুর্তির। তাওবা পড়বো বার্ধক্যে গিয়ে। কিন্তু এই যুবদের জন্য আসছে এক কঠিন সময়। যখন মন তার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। হাত চলবে না তার নির্দেশে। কেয়ামতের দিন ৫টি প্রশ্নের উত্তর দেয়া ব্যতীত মানুষকে এক কদম নড়তে দেয়া হবে না; তার মধ্যে একটি হলো-
“সে তার যৌবনকাল কোন পথে ব্যয় করেছে”
[জামে তিরমিযী : ৪/২৪১৬]
এই রমাদান আমাদের যৌবনের সেরা সৌভাগ্যপূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। গড়ে তুলতে পারি একজন শ্রেষ্ঠ যুবক হিসেবে। একটা মানুষের সারা জীবনের ইবাদতের চেয়ে যৌবনের ইবাদত আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়। এই যৌবন ফুরিয়ে গেলে কখনই এ সুবর্ণসুযোগ ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
কেয়ামতের দিন আল্লাহ্র (রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত শ্রেণীর ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। এই সাত শ্রেণীর মধ্যে দ্বিতীয় নাম্বার হলো, সে যুবক, যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে।
[সহিহ বুখারী: ৬৬০]
আল্লাহর কাছে একজন যুবকের ইবাদত এতোটাই প্রিয়। তাহলে বুঝে নিন এই বরকতময় রমাদানে একজন যুবকের ইবাদত আল্লাহর কাছে কতটা প্রিয় হতে পারে। হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন, “যৌবনের ইবাদত বৃদ্ধ বয়সের ইবাদতের চেয়ে অনেক বেশি দামী। আবার বৃদ্ধ বয়সের পাপ যৌবনের পাপের চেয়ে অনেক বেশি জঘন্য”
যৌবনকাল মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। এই সম্পদের সদাচরণ করা জরুরী।
নতুবা এটাই ভবিষ্যতের কাল হয়ে দাড়াতে পারে। যেমনি একটি বাড়ন্ত গাছ পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হয়ে যায় তেমনি যৌবনের অসদাচরণে ব্যাক্তি ধ্বংস হয়ে যায়। তাই সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগে সংশোধন হওয়া উচিত। এই রমাদান হোক আত্ম পরিচর্যার মাস।
সিরিজ-
রামাদান নিয়ে খুটিনাটি [পর্ব-১৩]
পর্ব- “শ্রেষ্ঠ যুবক“