শীতে কাচমাচু হয়ে আপনার রুমমেট ঘুমাচ্ছে কিন্তু আপনি জাগ্রত, হাড়কাঁপানো ঠান্ডা পানি দিয়ে অজু করছেন, ফজরের সালাতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন-মনে রাখবেন আপনার এই জেগে ওঠা এবং সালাত আদায় করতে পারা একটি নিআমত। হতে পারতো আপনিও ঘুমে বুঁদ হয়ে আছেন, ফজরের ওয়াক্ত ছুটে যাচ্ছে কিন্তু আপনি শয়তানের গিঁট খুলতে পারেননি-অতএব আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করুন ফজরের সালাতের জন্য।
দুপুরে সবাই যখন দুনিয়ার কাজে ব্যাস্ত তখন আপনি কাজের ফাঁকে মসজিদে হাজির হয়েছেন, জামাতের সাথে সালাত আদায় করছেন-এটিও আল্লাহর একটা নিয়ামত।কে জানে আপনিও কাজ ছেড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে পারতেন না,অতএব পুনরায় শুকরিয়া আদায় করুন যোহরের সালাতের জন্য।
বিকেলে একটু ক্লান্ত অনুভব করছেন,ঘুম ধরছে কিন্তু আপনি নিজেকে বিরত রাখলেন,ভাবলেন এইতো একটু পর আসরের সালাত।এই যে আপনার যে অনুভূতি আর তার কাজে পরিণত হওয়া এটিও আল্লাহর নিয়ামত।অতএব এর জন্যে ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে আর আপনি মাঠে খেলাধুলায় মত্ত, কিন্তু মাগরিব আসন্ন। আযান দেওয়ার ক্ষাণিক আগেই আপনি মাঠ ছাড়লেন,”হাইয়া আলাস সালাহ্” এর ডাকে সাড়া দিলেন অথচ আপনার বন্ধুরা তখনও মাঠে! এই মাগরিবের ওয়াক্তও আপনার জন্য নিয়ামতের স্বীকৃতি পেল,অতএব আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।
আগামীকাল পরীক্ষা,পড়ার ভীষণ চাপ।এক মুহুর্ত সময় নেই পড়া ছেড়ে উঠে যাওয়ার, কিন্তু এশার সালাতের আযান শুনে আপনি আর টেবিলে থাকতে পারেননি,পনের মিনিট সময় সালাতের জন্য নিয়ে নিলেন এবং এই পনের মিনিট সময়ও আপনার জন্য নিয়ামত কেননা আপনি মিথ্যামিথ্যি অজুহাত দাঁড় করাননি, সালাতের উপর পড়াশুনাকে গুরুত্ব দেননি, আপনার অন্তর ব্যস্ততার মধ্যেও আল্লাহর প্রতি আহ্বানে ঝুকে পড়েছে অতএব এর জন্যে ও হতে হবে আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।
অর্থাৎ,প্রতি ওয়াক্তের প্রতিটি সালাত আদায় করতে পারার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা আপনার আমার কর্তব্য। আমরা এমন এক সময়ে আছি যখন ঈমান ধরে রাখা জ্বলন্ত আঙ্গার হাতের মুঠোয় ধরে রাখার সমতুল্য,এই সে সময় যখন মানুষ সকালে মুমিন থাকে কিন্তু বিকালে কাফের হয়ে যাচ্ছে কিংবা দুনিয়ার বিনিময়ে ঈমানকে বিক্রি করে দিচ্ছে।
এবং এই সময়ে আপনি আমি যে, পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের অংশ হতে পারছি,সেই ফরজ ইবাদত পালন করতে পারছি যা ঈমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী।অতএব সালাত আদায়ের তৌফিক দান করায় আল্লাহর প্রতি যদি কৃতজ্ঞ হওয়া বান্দা হিসেবে আমাদের কর্তব্য।
স্মরণ করুন মূসা আঃ এর কাওমের প্রতি আল্লাহর ঘোষণা,
“যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।”
[সূরা ইবরাহিম:আয়াত ০৭]
আর আমরা তো চাইই আল্লাহ পাক আমাদের উপর তাঁর নিয়ামত বাড়িয়ে দিক,যে ২/৩ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে তাকে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের তৌফিক দিক,যে ঘরে সালাত আদায় করে তাকে মসজিদে সালাত আদায়ের তৌফিক দিক,যে মসজিদে নিয়মিত যায় তাকে সালাতের খুযুখুশু সহ তা আঁকড়ে ধরে রাখার তৌফিক দিক।তাই প্রতিটি সালাত আদায় করেও হই আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ ও ক্ষমাপ্রার্থী।