ইসলামি শরিয়তে ‘শবে মেরাজ’ উপলক্ষে বিশেষ নামাজ-রোজা ও ইবাদত-বন্দেগির ভিত্তি কতটুকু? ‘শবে মেরাজ’ এর জন্য নির্দিষ্ট কোনও নামাজ-রোজা আছে কি? এ উপলক্ষে আমাদের সমাজে যে সব কার্যক্রম করা হয় শরিয়তে সেগুলোর ভিত্তি কতটুকু?
নিম্নে এ বিষয়ে অতিসংক্ষপে আলোকপাত করা হল। তৎসঙ্গে এ সময়ের সাড়া জাগানো কয়েকজন বাংলাভাষী শাইখদের বক্তব্যও উপস্থাপন করা হল।
শবে মেরাজ উপলক্ষে বিশেষ কোন নামাজ, রোজা, মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা, লোকজন জমায়েত, ভোজ অনুষ্ঠান, কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন খতম, শব বেদারি (নিশী জাগরণ), দুআ মাহফিল, হালকায়ে জিকির, নাতে রাসূল ও ইসলামি গজল সন্ধ্যা, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মসজিদ ইত্যাদি আলোকসজ্জা করা ইত্যাদি কোন কিছুই করা শরিয়ত সম্মত নয়। কারণ হাদিসে এ মর্মে কোন কিছুই আসেনি। সাহাবায়ে কেরাম কখনো এ উপলক্ষে কোনও আয়োজন-অনুষ্ঠান, রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি ইত্যাদি করেছেন বলে হাদিসের কিতাবগুলো প্রমাণ করছে না।
ইবনুল কাইয়েম জাওযিয়া রহ. বলেন,
قال شيخ الإسلام ابن تيمية – رحمه الله -: ولا يعرف عن أحد من المسلمين أن جعل لليلة الإسراء فضيلة على غيرها، لاسيما على ليلة القدر، ولا كان الصحابة والتابعون لهم بإحسان يقصدون تخصيص ليلة الإسراء بأمر من الأمور ولا يذكرونها، ولهذا لا يعرف أي ليلة كانت
“ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, পূর্ববর্তী যুগে এমন কোন মুসলিম পাওয়া যাবে না যে, শবে মেরাজকে অন্য কোন রাতের উপর মর্যাদা দিয়েছে। বিশেষ করে শবে কদরের চেয়ে উত্তম মনে করেছে এমন কেউ ছিল না। সাহাবায়ে কেরাম এবং তাদের একনিষ্ঠ অনুগামী তাবেঈনগণ এ রাতকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন কিছু করতেন না এমনকি তা আলাদাভাবে স্মরণও করতেন না। যার কারণে জানাও যায় না যে, সে রাতটি কোনটি।”
[উৎস: আল বিদা’ আল হাওলিয়া পৃষ্ঠা ২৭৪]
ইবনুল হাজ্জ বলেন,
ومن البدع التي أحدثوها فيه أعني في شهر رجب ليلة السابع والعشرين منه التي هي ليلة المعراج
“রজব মাসে যে সকল বিদআত আবিষ্কৃত হয়েছে সগুলোর মধ্যে সাতাইশ তারিখের লাইলাতুল মেরাজ (শবে মেরাজ) অন্যতম।” [আল মাদখাল, ১ম খণ্ড, ২৯৪পৃষ্ঠা]
মোটকথা, আমাদের দেশে কথিত শবে মেরাজ উপলক্ষে ঘটা করে যে সব কার্যক্রম করা হয় তা দীনের মধ্যে নবসৃষ্ট বিদআত। আর বিদআত মানেই ভ্রষ্টতা। ভ্রষ্টতা মানেই জাহান্নামের পথ। সুতরাং প্রতিটি মুসলিমের জন্য দীনের মধ্যে নব আবিস্কৃত সকল বিদআতি কার্যক্রম থেকে দূরে থাকা ফরজ।
আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন। আমিন।