শবে বরাতে আমাদের করনীয় কি কি ?
শবে বরাত কি ?
আসলে শবে বরাত কথাটা এটা কোন হাদিসে আসে নেই এবং কোরআনেও আসে নেই। শবে বরাত এটা ফার্সি শব্দ এর বাংলা অর্থ ভাগ্য রজনী, নিসফে মিন শাবান এর বা মধ্য শাবান এর রাতটি ভাগ্য রজনী এ নিয়ে কোরআন হাদীসে কোথাও নেই, সূরা আদ দোখান এর যে আয়াতটা
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ
আমি একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী।
সূরা আদ দোখান
আয়াত নং ০৩
فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ
এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।
সূরা আদ দোখান
আয়াত নং ০৩
এই যে বিষয়টা বলা হয়েছে, ইমাম কাতাদাহ তিনি শুধু মাত্র বলেছেন যে, নাশফে শাবানের ব্যাপারে বলেছেন। বিশ্বের সকল মুফাসসের গন বলেছেন এইটা লাইলাতুল কদর এবং সেইটাই শুদ্ধ।
ইবনু কাসীর, তাবারীসহ প্রায় সব মুফাসসিরের মতে, কুরআন নাযিল ও ভাগ্য বন্টনের রাত হলো লাইলাতুল কদর এবং এইটা নিশ্চিত যে এইখানে বলা হয়েছে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে।
তাহলে লাইলাতুল কদর এই বন্টনের বিষয়টা আছে তাও সেটা প্রতি বছর এর ভাগ্য নাকি প্রতি দিনের ভাগ্য এই বিষয় গুলু নিয়ে অনেক মতামত এবং কথা বার্তা আছে। কিন্তু নিসফে শাবান এর রাত্রি নিয়ে কোন সহিহ রেওয়ায়েতে হাদিসে আসে নি, যে এই দিন ভাগ্য বন্টন করা হয়।
এ দিনের কোন বিশেষ আমলের ব্যপারে কোন সহিহ হাদিস আসে নি, যে এই দিনের কোন বিশেষ নামায, সেটা ৬ রাকাত পড়ুন বা ৮ রাকাত পড়ুন অথবা ১০০ রাকাত সালাত, যেমন কেউ কেউ চালু করেছে আস সালাতুল আল ফিয়া। আলফিয়া আরবি শব্দ এর অর্থ হচ্ছে মিলিনিয়াম। কোন কোন দেশে প্রচলিত হয়েছে নিসফে শাবান উপলক্ষে এই গুলুর পক্ষে সহীহ কোন দলিল নেই। ফলে এই ধরনের কোন চল করা যাবে না।
শবে বরাত এর নামাজ ?
তাহলে কি কোন সালাত বা নামাজ কি পড়বে না ?
হ্যাঁ, পড়বে।
মাগরিবের নামাজ পড়বে, এশার নামাজ পড়বে, সেই সাথে তাহাজ্জুদের নামাজও পড়বে, যেটা তিনি অন্য সময় পড়ে থাকেন।
আল্লাহ্ তায়ালার পক্ষ থেকে ক্ষমার সম্পর্কে একটা হাদিসের কথা এসেছে, ৮টা রেওয়ায়েত ইমাম আল বানি কোনটাকে হাসান আবার কোনটাকে যইফ বলেছেন।
যাই হোক তার মুল বক্তব্য হচ্ছে, এই রাত্রে আল্লাহ্ মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দেন, আর যারা মুশরেক এবং বিদ্বেষী, হিংসা, হানাহানি, যারা বিদ্বেষ পোষণ করে থাকেন আল্লাহ্ এই দুই শ্রেণীকে ক্ষমা করেন না। কিন্তু এইখানে কোন আনুষ্ঠানিক এর কথা বলা হয় নাই।
ফলে নিসফে মিন শাবান উপলক্ষে বিশেষ কোন নামাজ, বিশেষ কোন রোজা, বিশেষ কোন খাবার, বিশেষ কোন ভুরি ভোজ কোন কিছুই আসলে নেই। যেমন যদি বলা হয়, যে আজকে যারা এই অফিসে অবস্থান করবে প্রত্যেককে এক হাজার করে টাকা দেয়া হবে। তাহলে তারা অবস্থান করলেই যথেষ্ট, তাদের আর কোন কিছুই করতে হবে না। অতএব সহিহ হাদীস, কোরআনের কোন আয়াতে এই সম্পর্কে যেহেতু কোন প্রমাণ আমরা পাচ্ছি না তাহলে আল্লাহ্র ক্ষমা পাওয়ার জন্য তার রাত্রে অবস্থানটাই যথেষ্ট আর কোন বিশেষ আমল করতে হবে না।
শবে বরাত বা শাবান মাসের রোজা ?
আর তিনি যদি কোন কিছু করতেই চান, তাহলে তাকে সুন্নাহ এর পথেই করতে হবে। অর্থাৎ তাহাজ্জুদ যেহেতু সুন্নাহ নিত্যদিনকার সে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে পারেন। নিসফে মিন শাবান (শবে বরাত) এর বিশেষ কোন রোজা না রেখে তিনি আইয়ামুল বীয এর রোজা রাখতে পারেন, সেটা হল ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখের রোজা এ ছাড়া আর কোন বিশেষ আমল নেই।
আর আপনি ইচ্ছে করলে শাবান মাসের রোজা রাখতে পারেন, তবে শবে বরাত বা ভাগ্য রজনী নিয়তে নয়।
‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে (এত অধিক) সওম পালন করতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর সওম পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশি) সওম পালন না করা অবস্থায় একাধারে কাটাতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) সওম পালন করবেন না। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে রমাযান ব্যতীত কোন পুরা মাসের সওম পালন করতে দেখিনি এবং শা‘বান মাসের চেয়ে কোন মাসে অধিক (নফল) সওম পালন করতে দেখিনি।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
হাদিস নং ১৯৬৯
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসে পরিপূর্ণ মাস রোযা পালন করেন নি। তবে শাবান মাসের অধিকাংশ সময় রোযা পালন করেছেন এ পক্ষের জোড়ালো প্রমাণ পাওয়া গেছে।