নেককার সন্তান পেতে আকাঙ্ক্ষী এমন মুমিন ভাই ও বোনদের উচিৎ ধৈর্য্য ধারণ করা এবং হতাশ না হওয়া। এটা আপনাদের জন্য একটা পরীক্ষা। সুতরাং আল্লাহ সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করবেন না, বা নিরাশ হবেন না।
মনে রাখবেন, বান্দা তার রব্ব সম্পর্কে যে ধারণা পোষণ করে, তার রব্ব তার সাথে সেই রকম আচরণ করেন। সুতরাং আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও আশা রেখে নেক সন্তানের জন্য বেশি বেশি করে দুয়া করতে হবে।
দুয়া কবুলের সময়গুলোতে যেমন ফরয নামাযে তাশাহুদের পর সালাম ফেরানোর পূর্বে, রাতের শেষ তৃতীয়াংশে, যেকোন নামাযের সিজদাতে, নফল-সুন্নত রোযা রেখে রোযা অবস্থাতে, আযান-ইকামতের মাঝখানে দুয়া সমূহ আল্লাহ বেশি কবুল করেন। এই সময়গুলোতে ক্বুরআন সুন্নাহর দুয়াগুলো অথবা, নিজের মনে আবেগ ও ভালোবাসা নিয়ে বেশি বেশি দুয়া করার চেষ্টা করবেন।
দুয়া কবুল হতে দেরী হচ্ছে কেন, আল্লাহ আমার দুয়া কবুল করছেন না, আমি কি দোষ করেছি, দুয়া করেছি কিন্তু আল্লাহ শুনছেন না – এ ধরণের নাফরমানীমূলক, কুফুরী কথাবার্তা বলা থেকে খুব সাবধান (আল্লাহ আমাদেরকে হেফাযত করুন)। বিপদের সময় ধৈর্য ধরতে হবে, আল্লাহর কাছে দুয়া করতে হবে এবং তাক্বদীরের ভাল ও মন্দ; যেকোন অবস্থাতেই আল্লাহর উপর রাজী-খুশি থাকতে হবে।
মহান আল্লাহ আমাদের ও আপনাদের উপর রহম করুন। আমাদের দুয়াগুলো কবুল করুন।
ক্বুরআন ও সুন্নাহ থেকে কয়েকটি দুয়া দেওয়া হলো। আপনারা উত্তম হয় এই দুয়াগুলো আরবী অর্থ বুঝে মুনাজাতে পড়বেন। মুখস্থ করতে না পারলে এই দুয়াগুলোর বাংলা অথবা ইংরেজী অর্থ দিয়ে দুয়া করতে পারবেন। কোন সমস্যা নেই ইন শা আল্লাহ।
Table of Contents
(১) নেককার স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান পাওয়ার জন্য দুয়াঃ
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
উচ্চারণঃ রব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াজিনা ওয়া যুররিয়্যাতিনা ক্বুররাতা আ’ইয়ুন, ওয়াজআ’লনা লিল মুত্তাক্বীনা ইমামা।
অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চক্ষুর শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাক্বীদের জন্যে আদর্শ বানাও।
সুরা আল-ফুরক্বানঃ ৭৪।
(২) সুসন্তান লাভের জন্য দুয়াঃ
رَبِّ هَبْ لِيْ مِنَ الصَّالِحِيْنَ
উচ্চারণঃ রব্বি হাবলী মিনাছ্ ছোয়া-লিহী’ন।
অর্থঃ হে আমার রব, আমাকে নেককার সন্তান দান করুন।
সুরা আস-সাফফাতঃ ১০০
৩) নামাযী ছেলে-মেয়ে পাওয়ার জন্য বা ছেলে-মেয়ে যেন নামাযী হয় তার জন্য দুয়াঃ
رَبِّ اجْعَلْنِيْ مُقِيْمَ الصَّلَاةِ وَمِنْ ذُرِّيَّتِيْ ۚ رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاءِ
উচ্চারণঃ রব্বিজ্বআ’লনী মুক্বীমাছ্ ছলা-তি ওয়ামিন যুররিয়্যাতী, রব্বানা- ওয়া তাক্বাব্বাল দুআ’-।
অর্থঃ হে আমার পালনকর্তা! আমাকে নামায কায়েমকারী বানাও এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও নামায কায়েমকারী বানাও। হে আমাদের পালনকর্তা! আর আমার দুয়া কবুল কর।
সুরা ইব্রাহীমঃ ৪০
(৪) অধিক ধন ও জন চাইতেঃ
اللَّهُمَّ أكْثِرْ مَالِي، وَوَلَدِي، وَبَارِكْ لِي فِيمَا أعْطَيْتَنِي
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আকসির মা-লি ওয়া ওয়ালাদি, ওয়া বারিকলানা ফিমা আ’ত্বইতানি।
অর্থঃ হে আল্লাহ তুমি আমাকে অধিক-সম্পদ ও সন্তান দান কর এবং আমাকে যা দান করেছ তার মাঝে বরকত দান কর।
সহীহ বুখারীঃ ৭/১৫৪
এছাড়া কেউ মুনাজাতে নিজের ভাষাতে বিনীতভাবে আল্লাহর কাছে যে কোন দুয়া করতে পারেন। নামাযের মাঝে সিজদাতে ও সালাম ফিরানোর আগে দুয়া করলে আরবীতে মুখস্থ করে পড়বেন, এটাই উত্তম।
সংগৃহীত