আমাদের পরিচয় কেবল ‘মুসলিম‘। সুতরাং ‘মুসলিম’ ছাড়া আর কোনো পরিচয় দেয়া কি দোষণীয়?
আমাদের বৃহত্তর পরিচয় ‘মুসলিম‘ এতে কোনো সন্দেহ নাই। যখন মুসলিম আর কাফির ছাড়া আর কোনো দল-উপদল থাকবে না তখন মানব জাতির পরিচয় দুটির যে কোনো একটি: কাফির অথবা মুসলিম। মক্কায় যখন মুসলিম আর কাফির ছাড়া আর কোনো কিছু ছিলো না তখন মুসলিমদের আলাদা কোন পরিচয়ও ছিলো না। কিন্তু হিজরতের পরে মুসলিমদের আলাদা দুটি পরিচয় দেখা দিল, একটি হল, মুহাজির অপরটি আনসার।
এছাড়াও বিশেষ পরিচয়ের স্বার্থে মুসলিমদের মাঝে কিছু নতুন নতুন নামের আবির্ভাব হল। যেমন আলহুসুস সুফফা, আহলে বদর, আহলে বাইয়াতে রিযওয়ান, হাদিসে যারা কুরআন মুখস্থ করে, পাঠ করে ও আমল করে তাদেরকে বলা হল, আহলুল কুরআন, আলহুলুল্লাহ..এমন বহু উদাহরণ রয়েছে।
যাহোক, যখন মুসলিম নাম দিয়ে বহু দল-উপদল বের হবে তখন কেবল ‘মুসলিম’ পরিচয় দেয়াই যথেষ্ট নয়। খাওয়ারেজ, আহলুর রায়, জাহমিয়া, মুরজিয়া, কাদরিয়া, মুতাযিলা, শিয়া-রাফেযী (যারা সকলেই নিজেদেরকে মুসলিম বলে পরিচয় দেয়) ইত্যাদি অসংখ্য-অগণিত ফিরকা ও মতবাদের ভিড়ে আপনাকে অবশ্যই এমন কিছু বলা উচিৎ যা দ্বারা নিজেদেরকে এ সকল ফিরকা ও মতবাদ থেকে আলাদা করা যায়।
আর এ প্রয়োজন থেকেই আমাদের পূর্ববর্তী আলেমগণ নিজেদেরকে ‘আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ,’ ‘আহলুল হাদিস’ ইত্যাদি বলে আখ্যায়িত করেছিলে। পূর্ববর্তী বড় বড় আলেমদের লিখিত আকীদার কিতাব খুললেই দেখতে পাবেন, আলসুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত এর মত এই….ফিরকায়ে নাজিয়া, আহলুল হাদিস….ইত্যাদি।
আর এ প্রয়োজন এখন শেষ হয়ে যায় নি। বরং বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ দিন দিন নব নব ফিরকা ও মতবাদের উদ্ভব হয়েই চলেছে।
সুতরাং বিদআত পন্থীদের বিপরীতে সুন্নাহ পন্থীগণ নিজেদেরকে ‘আহলুস সুন্নাহ’ (সুন্নতের অনুসারী) বা ‘আহলুল হাদিস’ (হাদিসের অনুসারী), সালাফী (সালাফ তথা নবী ও সাহাবীদের অনুসারী) বলে পরিচয় দিতে কোন ধরণের আপত্তি থাকতে পারে না।
এর অর্থ ‘মুসলিম’ নাম থেকে দুরে সরে যাওয়া নয় বরং মুসলিম নামধারী বাতিল ও বিদআত পন্থী থেকে নিজেদেরকে আলাদা করা উদ্দেশ্য।
আল্লাহু আলাম।