Table of Contents
মাহরাম কি ?
ইসলামী পরিবার গঠনে মাহরাম-গায়ের মাহরামের জ্ঞান থাকাটা অত্যাবশ্যক। নিচের ছবির মাধ্যমে একজন পুরুষেরর এবং নারীর মাহরাম দেখিয়েছি।
মাহরাম কি?
যে সকল পুরুষের সামনে নারীর দেখা দেওয়া, কথা বলা জায়েজ এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন সম্পূর্ণ হারাম তাদের কে শরীয়তের পরিভাষায় মাহরাম বলে।
মাহরাম কারা?
-সূরা আন নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নারীর মাহরাম নির্ধারিত করে দিয়েছেন।
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
সূরা আন-নূর – Surah An-Nur
আয়াত নং-৩১
গায়রে মাহরাম কি?
যে সকল পুরুষের সামনে যাওয়া, নারীর জন্য শরীয়তে জায়েজ নয় এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন বৈধ তাদের কে গায়রে মাহরাম বলে।
বস্তুতঃ গায়রে মাহরামের সামনে একান্ত অপারগ হয়ে যদি যাওয়াই লাগে তবে নারী পূর্ণ পর্দা করে সামনে যাবে।
গায়রে মাহরাম কারা?
-মাহরাম বাদে সমস্ত বিশ্বে-মহাবিশ্বের যত পুরুষ আছে সব গায়রে মাহরাম!!!
নিজ পরিবারে চাচাত/খালাত/মামাত/ফুপাত সব ভাই, নিজ দুলাভাই, দেবর, ভাসুর, ইত্যাদি সবাই একজন মেয়ের জন্য গায়রে মাহরাম, যাদের সামনে পর্দা করা ফরজ।
তাদের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করা আল্লাহর হুকুমের অবাধ্যতা করা।মাহরাম ছাড়া সকল পুরুষের সামনে পর্দা করতে হবে এবং করতেই হবে।
নিচের চার্টের মধ্যে একজন মহিলার জন্য, মাহরাম ও গায়রে মাহরামের পার্থক্য উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্রঃ সবুজ চিহ্নিত জায়গা গুলো মাহরাম বুঝানো হয়েছে।
আর লাল চিহ্নিত জায়গা গুলো গায়রে মাহরাম বুঝানো হয়েছে।
এক নজরে মাহরাম পুরুষ –
১. স্বামী (দেখা দেওয়া, সৌন্দর্য প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে মাহরাম)
২. পিতা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
৩. শ্বশুর, আপন দাদা ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
৪. আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরসজাত পুত্র সন্তান এবং আপন মেয়ের স্বামী।
৫. স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।
৬. আপন ভাই, সৎ ভাই
৭. ভাতিজা অর্থাৎ আপন ভাইয়ের ছেলে এবং সৎ ভাইয়ের ছেলে।
৮. ভাগ্নে অর্থাৎ, আপন বোনের ছেলে এবং সৎ বোনের ছেলে।
৯. এমন বালক যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই।
১০. দুধ সম্পর্কীয় পিতা, দাদা, নানা, চাচা, মামা এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
১১. দুধ ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান।
১২. দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, তার ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান। এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী।
(বুখারী হাদীস নং ৫০৯৯, মুসলিম শরীফ হাদীস নং ১১৪৪)
১৩. আপন চাচা, সৎ চাচা।
১৪. আপন মামা, সৎ মামা। (সূরা নিসা-২৩)
পুরুষের মাহরাম কারা?
পুরুষদের ১৪ জন মাহরাম হলেন,
মায়ের মতো (৫ জন):
(১) মা
(২) খালা
(৩) ফুফু
(৪) শাশুড়ী
(৫) দুধ-সম্পর্কীয় মা
বোনের মতো (৫ জন):
(৬) আপন বোন
(৭) দাদী
(৮) নানী
(৯) নাতনী
(১০) দুধ-সম্পর্কীয় বোন
মেয়ের মতো (৪ জন):
(১১) মেয়ে
(১২) ভাই এর মেয়ে
(১৩) বোনের মেয়ে
(১৪) ছেলের বউ।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে পর্দার হুকুম যথাযথভাবে মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।