ইমাম মাহদির আগমনের আলামত হিসেবে “আরব দেশে তুষারপাত হবে” এ কথাটা কি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত?
ইমাম মাহদির আগমণের আলামত হিসেবে নয় বরং কিয়ামতের আলামত প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে যে, আরব উপদ্বীপ নদ-নদী এবং গাছপালায় পূর্ণ হয়ে যাবে। ‘তুষারপাত হবে’ এমন কথা আসে নি। তবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, প্রচুর বরফপাত হলে বরফ গলে নদী প্রবাহিত হয়।
নিম্নে এ সংক্রান্ত হাদিসগুলো দেখুন:
১. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَعُودَ أَرْضُ الْعَرَبِ مُرُوجًا وَأَنْهَارًا
‘‘ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা যে পর্যন্ত না আরব উপদ্বীপ গাছপালা ও নদী-নালায় পূর্ণ হবে’’।
[মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুয যাকাত।]
হাদীসের প্রকাশ্য বর্ণনা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আরব দেশসমূহে কিয়ামতের পূর্বে পানির অভাব হবে না। বরং প্রচুর নদ-নদী প্রবাহিত হবে। ফলে গাছ-পালা ও নানা উদ্ভিদ উৎপন্ন হবে এবং বন-জঙ্গলে ভরে যাবে।
২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন:
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُمْطَرَ النَّاسُ مَطَرًا لَا تُكِنُّ مِنْهُ بُيُوتُ الْمَدَرِ وَلَا تُكِنُّ مِنْهُ إِلَّا بُيُوتُ الشَّعَرِ
‘‘ততদিন কিয়ামত হবেনা যতদিন না আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এতে মাটির তৈরি ঘরগুলো ভেঙ্গে পড়বে এবং পশমের ঘরগুলো রক্ষা পাবে’’।
[মুসনাদে আহমদ, আহমদ শাকের সহীহ বলেছেন]
৩. তিনি আরও বলেন:
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُمْطَرَ النَّاسُ مَطَرًا عَامًّا وَلَا تَنْبُتَ الْأَرْضُ شَيْئًا
‘‘ততদিন কিয়ামত হবেনা যে পর্যন্ত না ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে। কিন্তু জমিনে কোন ফসলই উৎপন্ন হবেনা’’।
[মুসনাদে আহমদ, ইমাম হায়সামী মাজমাউয্ যাওয়াদে বর্ণনা করেছেন, (৭/৩৩০)। ইমাম ইবনে কাসির রাহ. বলেন: হাদীছের সনদ খুব ভাল। নেহায়া, (১/১৮০)]
স্বাভাবিক নিয়ম হল বৃষ্টির মাধ্যমে জমিনে ফসল উৎপন্ন হবে। কিন্তু কিয়ামতের পূর্বে স্বাভাবিক অবস্থা পরিবর্তন হয়ে যাবে।
উপরের আলোচনা থেকে প্রতিভাত হল যে, আরব দেশে বৃষ্টিপাত ও নদ-নদী প্রবাহিত হওয়ার হাদিসগুলো কিয়ামতের আলামত প্রসঙ্গে এসেছে ; ইমাম মাহদির আগমনের আলামত প্রসঙ্গে নয়। কিন্তু এটা ঠিক যে, ইমাম মাহদির আগমনও কিয়ামতের একটি অন্যতম আলামত। সুতরাং এ দৃষ্টিকোণ থেকে কিয়ামত-ইমাম মাহদির আগমন-আরব দেশে নদ-নদীর প্রবাহিত হওয়া ইত্যাদি একই সূত্রে গাঁথা।
আল্লাহু আলাম।