কিছুদিন আগে মসজিদে নামায পড়তে যাই। অযু বানিয়ে তড়িঘড়ি করে মসজিদে ঢুকলাম। ঢুকে দেখি ইমাম সাহেব সূরা বাকারাহ থেকে পড়ছেন। ভেবেছিলাম সূরা বাকারাহ’র প্রথম পৃষ্ঠা পড়ে রুকুতে চলে যাবেন। কিন্তু, আমার ভাবনা ভুল ছিলো। প্রথম পৃষ্ঠা শেষ করে দ্বিতীয় পৃষ্ঠা পড়া শুরু করলেন। খুব বিরক্ত হলাম।
আরেকদিনের ঘটনা। মাগরিবের নামায পড়তে গেলাম। অযু বানানোর নিমিত্তে জুব্বার হাত কনুইয়ের উপর তুলেছিলাম। তড়িঘড়ি করে হাত বেঁধে ফেললাম। মনে করেছিলাম ইমাম সাহেব রুকুতে চলে যাবেন। কিন্তু, যায়নি। লম্বা একটি সূরা ধরলেন।
মাগরিবের ওয়াক্ত হলো সংক্ষিপ্ত। এই সংক্ষিপ্ত সময়ে নামায শেষ করে ফেলতে হয়। যদি লম্বা সূরা পড়তে পড়তে ওয়াক্ত শেষ করে ফেলি, তাহলে নামায বরবাদ হয়ে যাবে। রাসূল সা. মাগরিবের নামায সংক্ষিপ্ত করে পড়তেন। ছোট ছোট সূরা দিয়ে নামায শেষ করতেন।
আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসরের সালাত সংক্ষিপ্ত করতেন। আর মাগরিবের সালাত কিসারে মুফাস্সাল দ্বারা আদায় করতেন। আর ইশার সালাত আওসাতে মুফাস্সাল দ্বারা আদায় করতেন। আর ভোরের সালাত অর্থাৎ ফজর তিওয়ালে মুফাস্সাল দ্বারা আদায় করতেন।
[সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৯৮২]
কিসারে মুফাসসাল, আওসাতে মুফাসসাল, তিওয়ালে মুফাসসাল মানে কী? অনেকে হয়তো এই শব্দগুলোর সাথে নতুন পরিচিত হচ্ছেন। আবার অনেকে শুনলেও বিস্তারিত কিছু জানেন না। তবে এই শব্দগুলো মাদ্রাসার ছাত্রদের কাছে খুব পরিচিত। তাহলে চলুন, সবাই পরিচিত হয়ে নিই।
সূরা হুযুরাত থেকে সূরা বুরুয পর্যন্ত তিওয়ালে মুফাসসাল। সূরা বুরুয থেকে নিয়ে সূরা বায়্যিনাহ পর্যন্ত আওসাতে মুফাসসাল। সূরা বায়্যিনাহ থেকে নিয়ে সূরা নাস পর্যন্ত কিসারে মুফাসসাল হিশেবে গণ্য হয়।
বিশেষ করে মসজিদের ইমাম সাহেবরা এগুলো খেয়াল করা উচিত। অবহেলা করা মোটেও উচিত নয়। আমাদের নামাযও হোক রাসূলের মতো।