এখন বর্ষাকাল। বর্ষাকালে বৃষ্টি পরবে এটাই তো স্বাভাবিক। এইতো বাইরে কাঠফাটা রোদ। ঘরে ঢুকতেই শুনা যাচ্ছে মেঘের গর্জন। বের হয়ে দেখি মেঘ এসে সূর্যকে গ্রাস করে ফেলেছে। অন্ধকার করে ফেলেছে চারিদিক। কে বলবে, কিছুক্ষণ আগে বাইরে কাঠফাঁটা রোদ ছিলো। এভাবেই অতিবাহিত হয় বর্ষার মৌসুম।
বর্ষাকালে এই রোদ এই বৃষ্টি। আবার লাগাতার কয়েকদিন ঝুম বৃষ্টি। অনেক জায়গায় বন্যার পানিতে একাকার হয়ে যায়। কৃষকদের অবস্থা তখন কাহিল হয়ে যায়। রোদ দেখে ধান শুকাতে দেয়। মুহূর্তেই শুনতে পায় মেঘের গর্জন। কৃষক বেচারা সব কাজ ফেলে দৌড়ে এসে ধান ভরতে।
কারণ, বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেলে সমস্যা। দুই মিনিট ঝুম বৃষ্টির পর আবারো রোদ। কৃষক শেষমেশ কপাল কুঞ্চিত করে বলে, কী দরকার দুই মিনিট ঝুম বৃষ্টির?
এতে কোন লাভ আছে?
পথঘাট সব নষ্ট করে ফেলছে। আরো কতো কথা !
পাশের বাসার আন্টি বাইরে প্রখর রোদ দেখে ছাতা নিয়ে বের হয়নি। ভেবেছিলো, যে কড়া রোদ পড়ছে, বৃষ্টি আসবে বলে মনে হয়না। বাজারে ঢুকতেই ঝুম বৃষ্টি। কোনমতে দোকানের ভিতর ঢুকে নিজেকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করলো। বোরকা থেকে পানি ঝরাতে ঝরাতে বলল, বৃষ্টির আসার কোন টাইম-টেবিল নেই। যখন-তখন চলে আসে।
উপরের ভাড়াটিয়া ভাইয়াটা আজ দেখা করতে যাবে তার প্রিয় ব্যক্তির সাথে। রাত থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে। মন অস্থির হয়ে আছে। প্রথম দেখা করতে যাচ্ছে। কেমন যেন ভয় ও আনন্দ মিশ্রিত অনুভূতি কাজ করছে। কোন রঙের জামা পরে যাবে? ফোন করে জিজ্ঞাসা করে, তুমি কোন রঙ পছন্দ করে? দু’জনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে লাল রঙের জামা পরে আসবে। কিন্তু, কপালে আর দেখা জুটলো না। সকাল থেকেই ঝুম বৃষ্টি।
ভেবেছিলো, ঘন্টা দুয়েক পর বৃষ্টি থেমে যাবে। বৃষ্টি তো নাছোড়বান্দা; সারাদিনে এক মুহূর্তের জন্য থামেনি। দুজনের দেখাও আর হয়নি। এখন বৃষ্টিকে গালাগাল দিতে শুরু করলো। আপনারাই বলুন, বৃষ্টির কোন দোষ আছে। বৃষ্টি তো আল্লাহর হুকুমেই বর্ষিত হচ্ছে।
এভাবেই আমরা আমাদের অজান্তে কুফরি বাক্য উচ্চারণ করে ফেলি। কারণ, আল্লাহ বলেন,
তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।
[সূরা বাকারাহ ২১৬]
আপনার কাছে দু’মিনিট বৃষ্টি বিরক্তিকর হতে পারে, বস্তুত সেখানেই রয়েছে কল্যাণ। কেননা, মেঘ-বৃষ্টি-রোদ সব আল্লাহর ইশারায়। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।