তরুণ-তরুণী বর্তমানে যেসব সমস্যায় ভুগছে, সেসবের সমাধানস্বরূপ ‘সময়মতো বিয়ে’ –কে অনেকেই সমাধান হিশেবে দেখছেন। গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের ট্রেন্ড থেকে তরুণ-তরুণী বের হয়ে সেই বয়সে হালাল সম্পর্ক স্থাপন করলে তারা অনেকগুলো পাপাচার থেকে রক্ষা পেয়ে যায়। তাছাড়া, মিডিয়ার অশ্লীলতার প্রচারের ফলে তরুণ-তরুণীদের নৈতিক অধঃপতন হচ্ছে, শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ থাকলে তারা হারাম উপায়ে সেটা করছে, সুযোগ না থাকলে নিজেই নিজেকে ধর্ষণ করছে।
এমনসব সমস্যার সবচেয়ে সেরা সমাধান হিশেবে ‘সময়মতো বিয়ে’ ব্যাপারটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেক্ষেত্রে ইসলামি নিয়মে বিয়ের খরচ কমানোর ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণা চলছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সময়মতো বিয়ের এমন প্রচার-প্রচারণাকে এপ্রিশিয়েট করি।
‘সময়মতো বিয়ে’ ক্যাম্পেনের প্রচারণা যেমন করেছি, নিজে সময়মতো বিয়ে করে সেই সুফলও পাচ্ছি, আলহামদুলিল্লাহ; ভবিষ্যতেও সময়মতো বিয়ের প্রচারণায় অংশগ্রহণ করবো।
তবে, সময়মতো বিয়ে ক্যাম্পেইনগুলোতে বাস্তবতা বিবর্জিত কিছু ফ্যান্টাসি কাজ করে। বিয়ের পূর্বে বেশিরভাগই সেই ফ্যান্টাসির সাগরে ডুবে থাকে। যার ফলে, সময়মতো বিয়ের ক্যাম্পেনের বড়ো প্রচারক হওয়া সত্ত্বেও অনেকেই নিজেই সময়মতো বিয়ে করতে পারে না। আর বিয়ে করলেও যখন সে ফ্যান্টাসির জগৎ থেকে চোখ ডলতে-ডলতে বাস্তবতায় আসে, তখন সে কূল খুঁজে পায় না। এ যেনো বৈঠাহীন নৌকায় তীরে যাবার প্রয়াস!
স্বপ্ন আর বাস্তবতাকে একসাথে নিয়ে চলতে শিখেছি, চলার চেষ্টা করি। যার ফলে, প্রি-ম্যারেজ এবং পোস্ট-ম্যারেজ এমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি; যেটাকে ‘ফ্যান্টাসি’ বলছি। বাস্তবতাকে মাথায় রেখেই প্ল্যান করেছিলাম বলে স্বপ্নকে ফ্যান্টাসিতে পৌঁছতে দেইনি। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সাহায্য করেছেন। ভুক্তভোগী হতে হয়নি।
যারা ‘সময়মতো বিয়ে’ ক্যাম্পেইনের প্রচারক, অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক, তারা যেনো কিছু বিষয় মাথায় রাখেন। নতুবা, তাদের ভুক্তভোগী হবার সম্ভাবনা খুব বেশি। তাদের জন্যই আজকে কিছু কথা শেয়ার করবো। আল্লাহ তাওফিকদাতা।
১. বিয়ে করতে চাইলে সর্বপ্রথম কী লাগে?
টাকা, বাড়ি-গাড়ি, স্ট্যাটাস, রূপ?
না। বিয়ে করতে চাইলে সর্বপ্রথম নিজের সাথে এই কমিটমেন্ট করতে হবে- আমি দায়িত্বগ্রহণে প্রস্তুত। বিয়ে করতে যাওয়া মানে একজন মানুষের দায়িত্ব নেওয়া। ‘দায়িত্ব নেওয়া’ মানে শুধু এই না যে, ঐ মানুষের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা কিংবা স্বামীর জন্য রান্না করা, কাপড় ধুয়ে দেওয়া। দায়িত্ব নেওয়া মানে হলো- আর্থিকভাবে, মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে তথা সর্বাত্মকভাবে আরেকজনের পাশে থাকার ওয়াদা করা।
২. কোনো সমস্যা থেকে স্রেফ মুক্তি পাওয়াটা বিয়ের উদ্দেশ্য না। যেমন ধরুন, পর্নোগ্রাফি-মাস্টারবেশন সমস্যায় যুব সমাজ খুব মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। এই সমস্যা থেকে সমাধানের রুচিসম্মত উপায় হলো বিয়ে, তবে বিয়ের আগে তার মধ্যে যদি দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত না হয়, তাহলে সে বিয়েকে দেখবে শুধুমাত্র শারীরিক আনন্দলাভের ফ্যান্টাসি হিশেবে। তার ফ্যান্টাসি অনুযায়ী স্ত্রী/স্বামী পাওয়াটা এককথায় অসম্ভব। যার ফলে বিয়ের পরও সে আগের সমস্যাগুলোতে থেকে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।
৩. আমাদের সমাজব্যবস্থা একজন বেকার, টিউশন পড়ানো, ফ্রিল্যান্সার ছাত্রের কাছে বিয়ে দিতে এখনো প্রস্তুত না। ছেলেপক্ষ যেমন প্রস্তত না, মেয়েপক্ষও তেমন প্রস্তুত না। শুধুমাত্র ‘দ্বীনদার’ যোগ্যতাটি সমাজের কাছে বিয়ের জন্য যথেষ্ট না। সমাজ চায় প্রতিশ্রুতি। সমাজ বলবে- “আমরাও তো দ্বীনদার, আমরাও তো নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, কুরআন তেলাওয়াত করি, দান-সদকা করি। তুমি এমন কোন দ্বীনদার যে, তোমার কাছে বিয়ে দেবো?
বা ঐ মেয়েকেই বিয়ে করতে হবে? তোমার মধ্যে কী এমন ম্যাজিক আছে?”
সমাজের এই প্রশ্নের জবাবে আপনি তো বলতে পারবেন না- আমি তাহাজ্জুদ পড়ি, নফল রোজা রাখি…। ‘আমি দ্বীনদার, আমার কাছে বিয়ে দিন’ বিয়ের বাজারে এই আবদার মেনে নেবার মতো তো না, উল্টো হাস্যকর।
৪. আপনি বিয়ে করতে চাইলে এই কথাটি সবার আগে নিজের পরিবারকে বুঝাতে হবে। ফেসবুকে ১০০০ টি স্ট্যাটাস দিয়েও কোনো লাভ নেই, কারণ বেশিরভাগের পরিবার ফেসবুকে তার সাথে কানেক্ট না। পুরো দুনিয়াবাসীও যদি জানে আপনি বিয়েতে আগ্রহী, কিন্তু আপনার পরিবার সেটা জানে না, তাহলে পুরো দুনিয়াবাসীকে জানিয়ে, ক্যাম্পেইন করে লাভ নাই। যাদেরকে জানানো দরকার, তাদেরকেই জানাতে হবে।
৫. নিজের পরিবারের কাছে কোনো মাধ্যম দ্বারা বা সরাসরি নিজে যখন বিয়ের কথা তুলবেন, তখন একটি ভাইভার জন্য প্রস্তুতি নিন। পৃথিবীর সবাইকে বুঝানো সহজ, নিজের পরিবারকে বুঝানো সহজ না। তারা আপনার কথা কেনো মেনে নিবে? তারা তো এখনো আপনার চেহারার দিকে তাকালে আপনার ছোট্টবেলার উলঙ্গ ছবিটি ভেসে উঠে!
একটি ভাইভা বোর্ডে যেমন কিছু ডকুমেন্ট দেখাতে হয়, বিয়ের কথা তোলার পর নিজের পরিবারকেও এটা বুঝাতে হবে যে- আই অ্যাম সিরিয়াস। পরিবার জানতে চাইবে- “এখনো তোর হাত খরচের টাকা আমাদের কাছ থেকে নিতে হয়, বিয়ের আয়োজন কিভাবে করবি, দেন-মোহর কিভাবে দিবি, বিয়ে করে বউকে কি খাওয়াবি?”
আপনি যদি সত্যিই বিয়ে করতে আগ্রহী থাকেন, তাহলে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর অবশ্যই দিতে হবে। টিউশনের জমানো টাকা, বা কোনোভাবে উপার্জিত টাকা আপনার হাতে অবশ্যই রেখে তারপর পরিবারের কাছে যেতে হবে। হতে পারে সেটা মোটামুটি একটা এমাউন্টের টাকা যেটা দেন-মোহরের জন্য বরাদ্দ। ধরুন সেটা ৫০ হাজার, ১ লক্ষ।
ইসলামি নিয়মে যেহেতু বিয়ে করতে চাচ্ছেন, তাহলে দেন-মোহরের ব্যাপারেও তো আপনাকে সজাগ থেকে আগাতে হবে। নাকি এটাও বাবা-মায়ের উপর রেখে আগাতে যাবেন?
৬. বিয়ে পরবর্তী খরচগুলো কে বহন করবে? অর্থাৎ, আপনার স্ত্রীর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর জন্য যে টাকা লাগবে, সেই টাকার জন্য কি আপনি বাবা-মায়ের কাছে হাত পা তবেন? এই প্রশ্নের সুস্পষ্ট একটি জবাব আপনার কাছে থাকতে হবে। দায়িত্বগ্রহণের মানসিকতা না থাকলে অন্যের কাঁধে বন্দুক রেখে আর যাই হোক বিয়ের ব্যাপারে আগানো যায় না।
নিজে যদি দায়িত্ব নেবার আগ্রহ না রাখেন, তাহলে শুধুশুধু ‘বাবা আমার বিয়ের ব্যবস্থা করুন’ বলে আস্ফালন করে লাভ নাই।
৭. বিয়ে হলো সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়ো অনুষ্ঠান। কাগজে-কলমে বিয়ে হলো ‘Individual decision’ কিন্তু বাস্তবে বিয়ে হলো ‘Collective decision’। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় বর-কনের সিদ্ধান্ত নেবার সুযোগ সবক্ষেত্রে সমান থাকে না। কারো ক্ষেত্রে বেশি, কারো ক্ষেত্রে কম; কারো ক্ষেত্রে তো একেবারেই নেই।
‘সময়মতো বিয়ে’ (২০-২৪ বছরের মধ্যে বিয়ে) করার জন্য যারা ফেসবুকে লেখালেখি করেন, তারা অনেকাংশে সমাজকে উপেক্ষা করার মানসিকতা লালন করেন। সমাজের সাথে বোঝাপড়ায় না গিয়ে সমাজকে উপেক্ষা করে আপনি সামাজিই কোনো কাজ করতে পারবেন না, ব্যক্তিগত কাজ হয়তো করতে পারেন।
যেমন: আমাদের সমাজব্যবস্থা তরুণদের দাঁড়ি রাখা, ইসলামি নিয়ম মেনে চলা, তরুণীদের ইসলামি পর্দা (নট সামাজিক পর্দা) মেনে চলায় অনুৎসাহিত করে, কখনোবা জোর প্রয়োগ করে। তবুও সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দ্বীন পালন করা যায়, কারণ এটা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
যারা সমাজের র ক্ তচক্ষু উপেক্ষা করে দ্বীন পালন করেন, তারাই আবার চিন্তা করেন সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিয়েও করতে পারবেন। অর্থাৎ, ‘কমবয়সে বিয়ে’, ছাত্রাবস্থায় বিয়ে, দ্বীন মেনে বিয়ে।
বাস্তবে দেখা যায়, নিজেদের পরিবারই এক্ষেত্রে এত্তো বাধা দিচ্ছে যে, প্রেম করতে গেলে পরিবার ঠিকই মেনে নিচ্ছে।
এক্ষেত্রে সমস্যাটা কী?
সমস্যা হলো সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন না করে সামাজিক সিদ্ধান্তকে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত মনে করা। এই সমাজ বলতে আমরা কি বুঝি?
সমাজ হলো আমি, আপনি, আমার-আপনার মা-বাবা, ফুফু-খালা, চাচা-চাচী, দাদা-দাদী, নানা-নানী, পাড়া-মহল্লার মানুষজন। আপনি বই পড়ে, লেকচার শুনে দ্বীনের কিছু বুঝ সঞ্চয় করেছেন, কিন্তু বাকিরা তো করেনি।
আপনি যখন বলবেন- বিয়েটা হবে পর্দা মেনে, আমার বউকে নন-মাহরাম কেউ দেখতে পারবে না, বরযাত্রী হয়ে ১০০ জন মানুষ যেতে পারবে না, আমি কনের বাড়ি থেকে ফার্নিচার আনবো না…তখন সবার আগে আপনার পরিবার, আপনার ফুফু-খালা, চাচারা আপনার দিকে তেড়ে আসবে! তারা বলবে- এসব কোথায় পেয়েছো? আর কেউ বিয়ে করেনি?
আমরা বিয়ে করিনি?
প্রথমত, সমাজের চোখে আপনি প্রতিষ্ঠিত হবার আগেই বিয়ে করতে চাচ্ছেন, তারউপর বিয়ের ব্যবস্থার ব্যাপারে আর্থিকভাবেও খুব বেশি অবদান রাখার সুযোগ পাচ্ছেন না। যার ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অপশনগুলোও আপনার কমে আসছে। পরিবারের উপর বই পড়া জ্ঞান নিয়ে কথা বলতে পারবেন না৷
দ্বিতীয়ত, আমাদের সমাজ যাদেরকে দ্বীনদার মনে করে (অর্থাৎ আলেম সমাজ), তাঁরাও কিন্তু সমাজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে ছেলে-মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন; এমনটা খুব কম দেখা যায়। তাদের ছেলেমেয়ের বিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে হয়, কনেপক্ষ বরের বাড়িতে ফার্নিচার পাঠায়। দু-চারটি ব্যতিক্রমী ঘটনা বাদে, আমাদের সমাজে বিয়েটা এভাবেই হয়। সর্বোচ্চ এটা করা হয়, সেন্টারে পরপুরুষ কনেকে দেখতে পারে না, মেয়েদের পার্ট আলাদা থাকে, সেখানে কেউ যেতে পারে না।
সদ্য দ্বীনে ফিরে সমাজকে উল্টে দেবার উৎসাহটা বেশিরভাগের এক্ষেত্রে এসে বাধাগ্রস্ত হয়।
একটা সমাজ দ্বীনদার না, সেই সমাজে দ্বীনের স্বার্থে একটা অনুষ্ঠান করতে গিয়ে আপনাকে ফরজের সাথে কম্প্রোমাইজ করতে হচ্ছে! প্রশ্ন হলো- আপনি কতোটা প্রজ্ঞার সাথে কম্প্রোমাইজ লেভেল কমিয়ে আনবেন।
আপনার মা-চাচী পরপুরুষের সামনে কথা বলেছেন, বলে যাচ্ছেন। আপনি বিয়ে করার পরই যদি ঘোষণা দেন- ‘আমার বউকে পরপুরুষ দেখতে পারবে না’ সেক্ষেত্রে আপনার এই সিদ্ধান্ত সরাসরি আপনার মা-চাচীর ইগোতে লাগবে।
বিয়ের আগে এসব প্রশ্নের সদুত্তর প্রস্তুত না করে ফেসবুকের আর্লি ম্যারেজ ইভেন্টগুলোকে এ কারণেই আমি ‘ফ্যান্টাসি’ বলছি।
৮. বিয়ের সময় সিদ্ধান্ত থাকে দুজন মিলে একটা ফ্যামিলির। কিন্তু খুবই স্বল্প সময়ে ‘তৃতীয়জন’ নিয়ে প্ল্যান শুরু করতে হয়। অনেকক্ষেত্রে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে এক প্রকার বাধ্য হতে হয়।
ঠিক এই সময়ে মানসিক এবং আর্থিক প্রস্তুতির গুরুত্বারোপ বিয়ের আগে করা হয় না। না খেয়ে, পুরনো কাপড় পরে থাকা যায়। কিন্তু বাধ্যতামূলক হাসপাতাল, ওষুধ খরচের প্রস্তুতি আগে না থাকলে অথৈ সাগরে পড়তে হবে।
Early Marriage ক্যাম্পেইনগুলো যেহেতু ফ্যান্টাসিতে ভরপুর, এটার স্লোগানই হলো ‘বাবা আমার বিয়ের ব্যবস্থা করুন’; সেহেতু এইসব রিয়ালিটি উপেক্ষা করা হয়। কারণ, এইসব ক্যাম্পেইনে বিয়ে করাটাই সফলতা হিশেবে দেখানো হয়।
৯. Early Marriage ক্যাম্পেইনের ফলে ফেসবুকে অনেকগুলো অনলাইন ম্যারেজ মিডিয়া গড়ে উঠেছে। এগুলোর বেশ কিছু ভালো আউটকামের পাশাপাশি নেতিবাচক আউটকামও আছে।
ম্যারেজ মিডিয়াতে সিভি আদানপ্রদান করা হয়। সিভি কারা দেয়? বিয়ে প্রত্যাশী বর নিজের সিভি, বিয়ে প্রত্যাশী কনে নিজের সিভি। বেশিরভাগ মিডিয়াগুলো জানতে চায় না, এই সিভিগুলো তৈরির পেছনে পরিবারের পরামর্শ, অনুমতি নেয়া হয়েছে কি-না।
বিয়ে যেহেতু Communal decision, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র দুজনের সিদ্ধান্তের ফযিলত যতোই বর্ণনা করা হোক না কেনো, পরিবারকে বাদ দিয়ে এটা হতে পারে না।
যারফলে, ম্যারেজ মিডিয়া দুই পক্ষের চাহিদা মিলিয়ে দেয়া সত্ত্বেও দেখা যায় সিভি এক্সচেঞ্জ হয়ে দুই পরিবারে যেতে পারে না। কারণ, পাত্রপাত্রী কারোরই সাহসে কুলোয় না যে অনলাইন সিভি একটা বাপ-মায়ের কাছে নিয়ে যাবে! বিয়ের মতো সেন্সিটিভ বিষয়ে অফলাইন পরিচয়ে যখন এ ত্তো বিশ্লেষণ চলে, সেখানে অনলাইনে কোথাকার কার প্রস্তাব পরিবার আমলে নিবে কেনো?
অনলাইন সিভিতে সামাজিক চাহিদা, সমাজব্যবস্থা, পারিবারিক হুবহু তথ্য উপেক্ষা করা হয়। যার ফলে বিয়ে যেখানে হবার কথা ছিলো দুটো পরিবারের মধ্যে, সেখানে পাত্র-পাত্রীর মধ্যে সিভি ঘুরাফেরা করে।
বিদ্র: মেইনস্ট্রিম মিডিয়া যিনাকে প্রমোট করার পাশাপাশি বিয়েকে কঠিনভাবে উপস্থাপন করে। অন্যদিকে সেটার কাউন্টার হিশেবে Early Marriage ক্যাম্পেইনগুলো বাস্তবতাকে বিবেচনা না করে বিয়েকে ‘পানির মতো সহজ’ করে উপস্থাপন করে৷ যার ফলে অনেকেই হাওয়ায় ভাসে।
এই ৯ টি পয়েন্টের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, হাওয়ায় ভাসার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা চাই। যারা ‘সময়মতো বিয়ে’ করতে চান, আশা করি পয়েন্টগুলো তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।