বিসমিল্লাহ ফজিলত সংক্রান্ত ৭টি ভ্রান্ত ভিত্তিহীন আমল
বিসমিল্লাহ এর ফজিলত সংক্রান্ত ৭টি ভ্রান্ত ও ভিত্তিহীন আমল : সচেতন হোন-সচেতন করুন। নির্দিষ্ট সংখ্যায় “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” পড়ার ফজিলত সংক্রান্ত বেশ কিছু আমল তথাকথিত বিভিন্ন ধর্মীয় বই-পুস্তকে পাওয়া যায় এবং লোকমুখেও প্রচলিত রয়েছে-যেগুলো সব দলিল বর্হিভূত ও ভিত্তিহীন।
দ্বীনি ক্ষেত্রে সচেতনতার উদ্দেশ্যে নিম্নে বিসমিল্লাহ এর ফজিলত সংক্রান্ত ৬টি প্রচলিত ভ্রান্ত কথা ও আমল তুলে ধরা হলো:
১. প্রতি নিঃশ্বাসে নেকি:
“একুশ বার ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পড়ে ঘুমালে প্রতি নিশ্বাসে নেকি লিখা হয়!
২. চুরি ও জ্বিন শয়তানের প্রভাব থেকে আত্মরক্ষা:
কোনো ব্যক্তি ঘুমের আগে একুশ বার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে ঘুমালে, চুরি, জ্বিনের প্রভাব ও হঠাৎ মৃত্যু থেকে রক্ষা পাবে!”
৩. মুশকিল আসান ও প্রয়োজন পূরণ:
১২ হাজার বার বিসমিল্লাহ পড়ার বরকতে মুশকিল আসান হবে এবং প্রয়োজন পূর্ণ হবে!
পড়ার পদ্ধতি হচ্ছে, এক হাজার বার পড়ে, কমপক্ষে একবার দরুদ ও উদ্দেশ্য পূরণের জন্য দোয়া করবে। তারপর উক্ত পদ্ধতিতে আরো এক হাজার বার। এভাবে বার হাজার বার পূরণ করা।
৪. মেধা ও মুখস্থশক্তি বৃদ্ধি:
মেধা বা মুখস্থশক্তি দুর্বল কোনো ছাত্র যদি সাতশ ছিয়াশি বার বিসমিল্লাহ পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে, সূর্য উদয়ের সময় তা পান করে তাহলে তার মেধা ও মুখস্থ শক্তি বৃদ্ধি পাবে!
৫. বালা মুসিবত থেকে ফসল রক্ষা এবং তাতে বরকত লাভ:
যে ব্যক্তি ১০০ বার ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ লিখে ক্ষেতে-খামারের দাফন করে রাখে, আল্লাহ তাআলা সব ধরণের বালা-মুসিবত থেকে ফসলের হেফাজত করেন। ফসলের বরকত বৃদ্ধি করে দেন!
৬. যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ৬শ বার লিপিবদ্ধ করে সঙ্গে রাখবে, আল্লাহ পাক তাঁর বান্দাদের ওপর সে ব্যক্তির প্রভাব সুপ্রতিষ্ঠিত করে দেবেন, কেউ তার ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হবে না!
৭. যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ
লেখা আছে এমন কোনো কাগজের টুকরা আল্লাহ তায়ালার তাজিমের উদ্দেশ্যে হেফাজত করেন, আল্লাহর কাছে তার নাম সিদ্দিকদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয় এবং তার পিতামাতার শাস্তি লাঘব করা হয়, যদিও তারা মুশরিক হয়ে থাকে!
আমাদের সমাজে প্রচলিত তথাকথিত ধর্মীয় বই-পুস্তকে এই জাতীয় বহু ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও বিদআতি আমলের ছড়াছড়ি রয়েছে। দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ লোকেরা এই সকল মিষ্টি মিষ্টি আমল করে সহজে জান্নাতে পৌঁছতে চায়। তারা সঠিক-বেঠিক যাচাই বাছাইয়ের প্রয়োজন অনুভব করে না। আর এই অজ্ঞতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর ধর্মব্যবসায়ী এসব সস্তা ও কুসংস্কার পূর্ণ বই লিখে এবং তাবিজ বিক্রয় করে টু-পাইস কামিয়ে নিচ্ছে!
কিন্তু এখন সময় এসেছে, এ সকল স্বার্থান্বেষী ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর, যারা অজ্ঞ লোকদের কে দীনের সঠিক জ্ঞান শিক্ষা দেয়ার পরিবর্তে তাদের অজ্ঞতাকে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছে।
الله المستعان
মহান আল্লাহ এসকল জাহিলদের কে হেদায়াত করুন।
আমীন।