Table of Contents
রোগ ব্যাতীত হঠাৎ অসুস্হ
রোগ ব্যাতীত হঠাৎ অসুস্হ হওয়া: (বেহেশতী জেওর ৯\৫০)
عن أبي حرب، عن محجن، عن أبي ذر، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “إن العين لتولع الرجل بإذن الله، حتى
يصعد حالقا ثم يتردى منه “
আবু যর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সঃ) বলেছেন: “কোন ব্যক্তির যখন নজর লাগে তখন এত বেশি প্রভাবিত হয় যে, সে যেন কোন উচু স্থানে চড়ল অতঃপর কোন নযর দ্বারা হঠাৎ করে নীচে পড়ে গেল”।
(মুসনাদে আহমাদ ২১৩০২)
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ أَنَّهُ قَالَ رَأَى عَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ سَهْلَ بْنَ حُنَيْفٍ يَغْتَسِلُ فَقَالَ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ وَلَا جِلْدَ مُخْبَأَةٍ فَلُبِطَ سَهْلٌ
আবূ উসামা ইবন সাহল (রহঃ)-এর রেওয়ায়ত, ‘আমির ইবনে রবী’আ সাহল ইবনে হানীফকে গোসল করিতে দেখিয়া বলিলেন, আজ আমি যেই সুন্দর মানুষ দেখিলাম, এই রকম কাহাকেও দেখি নাই, এমন কি সুন্দরী যুবতীও এত সুন্দর দেহবিশিষ্ট দেখি নাই। (আমিরের) এই কথা বলার সাথে সাথে সাহল সেখানে লুটাইয়া পড়িল।
(মুয়াত্তা ইমাম মালিক ১৭৪৬)
قال ابن الأثير – رحمه الله تعالى -: يقال: أصابت فلانا عين،
إذا نظر إليه عدو، أو حسود، فأثرت فيه، فمرض بسببها؛
ইবনে আসীর (রহিঃ) বলেন, বলা হয় অমুককে চোখ লেগেছে এটা তখন বলা হয়, যখন কারো প্রতি কোন শক্র অথবা হিংসুক দৃষ্টিপাত করে, আর এর ফলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।” (আন নিহায়াঃ ৩/৩২)
বদনযরের প্রভাবে জ্বর হতে পারে:
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَاهُ يَقُولُ اغْتَسَلَ أَبِي سَهْلُ بْنُ حُنَيْفٍ بِالْخَرَّارِ فَنَزَعَ جُبَّةً كَانَتْ عَلَيْهِ وَعَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ يَنْظُرُ قَالَ وَكَانَ سَهْلٌ رَجُلًا أَبْيَضَ حَسَنَ الْجِلْدِ قَالَ فَقَالَ لَهُ عَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ وَلَا جِلْدَ عَذْرَاءَ قَالَ فَوُعِكَ سَهْلٌ مَكَانَهُ وَاشْتَدَّ وَعْكُهُ فَأُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأُخْبِرَ أَنَّ سَهْلًا وُعِكَ وَأَنَّهُ غَيْرُ رَائِحٍ مَعَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَأَتَاهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ سَهْلٌ بِالَّذِي كَانَ مِنْ أَمْرِ عَامِرٍ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَامَ يَقْتُلُ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ أَلَّا بَرَّكْتَ إِنَّ الْعَيْنَ حَقٌّ تَوَضَّأْ لَهُ فَتَوَضَّأَ لَهُ عَامِرٌ فَرَاحَ سَهْلٌ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ بِهِ بَأْسٌ
(১)আবূ উমামা ইবনে সহল ইবনে হুনাইফ (রহঃ) বলেন, (জুহফার নিকটবর্তী) হেরার নামক স্থানে আমার পিতা আবু সাহল (ইবনে হানীফ) গোসল করার মনস্থ করিয়া জুব্বা খুলিয়া ফেলিলেন। আমির ইবনে রবীয়া দেখিতেছিলেন। আমার পিতা সাহল সুন্দর ও সুদর্শন লোক ছিলেন। আমির বলিলেন, আজিকার মতো আর কোনদিন আমি এত সুন্দর মানুষ দেখি নাই, এমন কি এত সুন্দর দেহবিশিষ্ট কোন যুবতীও দেখি নাই। (আমিরের এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই) তৎক্ষণাৎ সাহলের গায়ে জ্বর আসিল এবং জ্বরের বেগ ভীষণ হইল। অতঃপর এক ব্যক্তি আসিয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের কাছে বলিল, সাহলের জ্বর আসিয়াছে এবং সে আপনার সঙ্গে যাইতে পরিবে না।
তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহলের নিকট আগমন করিলেন, সাহল আমিরের সেই কথা নকল করিয়া শোনাইলেন। ইহা শুনিয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, কোন মুসলমান নিজের ভাইকে কেন হত্যা করে। অতঃপর আমিরকে বলিলেন, তুমি ‘বারাকাল্লাহ’ বলিলে না কেন? বদ নজর (কুদৃষ্টি) সত্য। সহলের জন্য ওযু কর। আমির সহলের জন্য ওযু করিলেন। অতঃপর সহল ভাল হইয়া গেলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে গেলেন, আর তাহার কোন অসুবিধা তখন ছিল না।
(মুয়াত্তা ইমাম মালিক ১৭৪৫)
قَالَ سَمِعْتُ عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ، يَقُولُ أَتَى جِبْرَائِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَهُوَ يُوعَكُ فَقَالَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ حَسَدِ حَاسِدٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ
(২)উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জিবরাঈল (আ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জ্বরাক্রান্ত অবস্থায় তাঁর নিকট আসেন। তিনি তাকে ঝাড়ফুঁক করে বলেনঃ
بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ حَسَدِ حَاسِدٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ
“আমি আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি এমন প্রতিটি জিনিস থেকে যা আপনাকে কষ্ট দেয়, হিংসুকের হিংসা থেকে এবং সকল বদনযর থেকে, আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন”।
(ইবনু মাজাহ ৩৫২৭)
সুনানে ইবনু মাজাহের অপর রেওয়ায়েতে অতিরিক্ত বর্নিত হয়েছে যে, তিনি অজ্ঞান হয়েছিলেন
فَمَا لَبِثَ أَنْ لُبِطَ بِه
অতঃপর কিছুক্ষণের মধ্যেই সাহল (রাঃ) বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেলেন।
(ইবনে মাজাহ ৩৫০৯)
শরীর দুর্বল হওয়া
جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ رَخَّصَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لآلِ حَزْمٍ فِي رُقْيَةِ الْحَيَّةِ وَقَالَ لأَسْمَاءَ بِنْتِ عُمَيْسٍ ” مَا لِي أَرَى أَجْسَامَ بَنِي أَخِي ضَارِعَةً تُصِيبُهُمُ الْحَاجَةُ ” . قَالَتْ لاَ وَلَكِنِ الْعَيْنُ تُسْرِعُ إِلَيْهِمْ . قَالَ ” ارْقِيهِمْ ” .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাযম পরিবারকে সাপের ছোবলে আঘাতপ্রাপ্ত রোগীকে ঝাড়ফুঁক করার অনুমতি দেন এবং আসমা বিনতু উমায়স (রাযিঃ) কে বললেন, আমার ভাই জাফার (রাযিঃ) এর ছেলে-মেয়েদের কি হলো যে, তাদের শরীর আমি দুর্বল দেখতে পাচ্ছি? তাদের কি অভাব দেখা দিয়েছে? তিনি (আসমা) বললেন, না কিন্তু তাদের উপর তাড়াতাড়ি বদনযর লেগে যায়। তিনি বললেন, তুমি তাদের ঝাড়-ফুঁক কর।
(মুসলিম ২১৯৮\ ৫৬১৯)
চেহারা বহুদর্শী হওয়া
চেহারা বহুদর্শী হওয়া অর্থাৎ মলিন, কালচে বা হলুদ হওয়া (বেহেশতী জেওর ৯\৫০)
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِجَارِيَةٍ فِي بَيْتِ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَأَى بِوَجْهِهَا سَفْعَةً فَقَالَ “ بِهَا نَظْرَةٌ فَاسْتَرْقُوا لَهَا ” . يَعْنِي بِوَجْهِهَا صُفْرَةً
উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রী উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ) এর গৃহে একটি বালিকার মুখমণ্ডলে (কালো বা হলুদ) দাগ লক্ষ্য করে বললেন, তার বদনযর লেগেছে, তার জন্য ঝাড়ফুঁক করো। অর্থাৎ তার চেহারায় হলুদ দাগ পড়ার কারণে।
(মুসলিম ২১৯৭\৫৬১৮)
শিশুবাচ্চা অধিক কান্নাকাটি করা:
عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ حَدَّثَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ بَيْتَ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي الْبَيْتِ صَبِيٌّ يَبْكِي فَذَكَرُوا لَهُ أَنَّ بِهِ الْعَيْنَ قَالَ عُرْوَةُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلَا تَسْتَرْقُونَ لَهُ مِنْ الْعَيْنِ
উরওয়া ইবন যুবাইর (রহঃ) বর্ণিত, নবী-পত্নী উম্মে সালমা (রাঃ)-এর ঘরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করিলেন। তখন ঘরে একটি বাচ্চা ক্ৰন্দন করিতেছিল। লোকেরা আরয করিল, বাচ্চাটির উপর বদনজর লাগিয়াছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, বদনজরের জন্য ঝাড়ফুক করাইতেছ না কেন?
(মুয়াত্তা ইমাম মালিক ১৭৪৮)
এছাড়াও অভিজ্ঞতার আলোকে বিশেষজ্ঞগন বলেন বদনযরের প্রভাবে নিম্নবর্ণিত উপস্বর্গ দেখা দিতে পারে