বদনজরে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা রুকইয়াহ

প্রথম পদ্ধতি

বদনজরের গোসল করা

(যার নজর লেগেছে তার অযুর ব্যবহৃত পানি দ্বারা আক্রান্ত ব্যাক্তিকে গোসল করানো)
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: كَانَ يُؤْمَرُ الْعَائِنُ فَيَتَوَضَّأُ ثُمَّ يَغْتَسِلُ مِنْهُ الْمَعِينُ
(১)আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তির বদ-নজর অন্যের উপর লাগতো, তাকে উযূ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হতো। এরপর ঐ পানি দিয়ে তাকে গোসল করানো হতো, যার উপর বদ-নজর লাগতো।
(সুনানে আবু দাউদঃ ৩৮৪০)

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، قَالَ مَرَّ عَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ بِسَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ وَهُوَ يَغْتَسِلُ فَقَالَ لَمْ أَرَ كَالْيَوْمِ وَلاَ جِلْدَ مُخَبَّأَةٍ ‏.‏ فَمَا لَبِثَ أَنْ لُبِطَ بِهِ فَأُتِيَ بِهِ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقِيلَ لَهُ أَدْرِكْ سَهْلاً صَرِيعًا ‏.‏ قَالَ ‏”‏ مَنْ تَتَّهِمُونَ بِهِ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا عَامِرَ بْنَ رَبِيعَةَ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ عَلاَمَ يَقْتُلُ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مِنْ أَخِيهِ مَا يُعْجِبُهُ فَلْيَدْعُ لَهُ بِالْبَرَكَةِ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ فَأَمَرَ عَامِرًا أَنْ يَتَوَضَّأَ فَيَغْسِلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ وَرُكْبَتَيْهِ وَدَاخِلَةَ إِزَارِهِ وَأَمَرَهُ أَنْ يَصُبَّ عَلَيْهِ ‏.‏ قَالَ سُفْيَانُ قَالَ مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ وَأَمَرَهُ أَنْ يَكْفَأَ الإِنَاءَ مِنْ خَلْفِهِ ‏.‏
(২)আবূ উমামা ইবনে হুনাইফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমের ইবনে রবীআ (রাঃ) সাহল ইবনে হুনাইফ (রাঃ)-র নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি তখন গোসল করছিলেন। আমের (রাঃ) বলেন, আমি এমন খুবসুরত সুপুরুষ দেখিনি, এমনকি পর্দানশীন নারীকেও এরূপ সুন্দর দেখিনি, যেমন আজ দেখলাম। অতঃপর কিছুক্ষণের মধ্যেই সাহল (রাঃ) বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেলেন। তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট নিয়ে যাওয়া হলো এবং তাঁকে বলা হলো, ধরাশায়ী সাহলকে রক্ষা করুন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কাকে অভিযুক্ত করছো?

তারা বললো, আমের ইবনে রবীআকে। তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ বদনজর লাগিয়ে তার ভাইকে কেন হত্যা করতে চায়?
তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের মনোমুগ্ধকর কিছু দেখলে যেন তার জন্য বরকতের দোয়া করে। অতঃপর তিনি পানি নিয়ে ডাকলেন, অতঃপর আমেরকে উযু করতে নির্দেশ দিলেন। তিনি তার মুখমন্ডল, দু’ হাত কনুই পর্যন্ত, দু’ পা গোছা পর্যন্ত এবং লুঙ্গীর আভ্যন্তরীণ অংশ ধৌত করলেন। তিনি আমেরকে পাত্রের (অবশিষ্ট) পানি সকলের উপর ঢেলে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। তিনি সাহলের পেছন দিক থেকে পানি ঢেলে দেয়ার জন্য আমেরকে নির্দেশ দেন।
(ইবনু মাজাহ ৩৫০৯)

“লুঙ্গীর আভ্যন্তরীণ অংশ” এর ব্যাখ্যা:
واختلف في داخلة الإزار فقيل المراد موضعه من الجسد وقيل المراد مذاكيره ، وقيل المراد وركه إذ هو معقد الإزار .
قال القاضي ابن العربي : الظاهر والأقوى بل الحق إنه ما يلي الجسد من الإزار” (عارضة الأحوذي (۲۱۷/۸) .
লুঙ্গীর আভ্যন্তরীন অংশ নিয়ে আলেমগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেন, তা দ্বারা শরীরের অংশ বুঝানো হয়েছে। আর কেউ এটাও বলেছেন যে, এর অর্থ লজ্জাস্থান। এটাও বলা হয়েছে যে, কোমর।
কাজী ইবনুল আরবী বলেন এর দ্বারা লুঙ্গীর নিম্নের সংশ্লিষ্ট অংশ বুঝানো হয়েছে।
(আরিদ্বতুল আহওয়াযি ৮\২১৭)

বদনযরকারীর অযুর পানি সংগ্রহের পদ্ধতি:
قال ابن شهاب الزهري رحمه الله تعالى : الغسل الذي أدركنا علماءنا يصفونه : أن يؤتى للرجل العائن بقدح فيدخل كفه فيه فيمضمض ، ثم يمجه في القدح ، ثم يغسل وجهه في القدح ثم يدخل يده اليسرى فيصب على كفه اليمنى في القدح ، ثم يدخل يده اليمنى فيصب بها على كفه اليسرى صبة واحدة ثم يدخل يده اليسرى فيصب على مرفقه الأيمن ، ثم يدخل يده اليمنى فيصب على مرفقه الأيسر ، ثم يدخل يده اليسرى فيصب بها على قدمه اليمنى ثم يدخل يده اليمنى فيصب بها على قدمه الأيس ثم يدخل يده اليسرى فيصب بها على ركبته اليمنى ثم يدخل يده اليمنى ويصب بها على ركبته اليسرى ، كل ذلك في قدح ثم يدخل داخلة إزاره في القدح ولا يوضع القدح في الأرض ، فيصب على رأس الرجل الذي أصيب بالعين من خلفه صبة واحدة
ইবনে শিহাব যুহরী বলেন, গোসলের পদ্ধতি যা আমরা আমাদের উলামাদের নিকট থেকে শিখেছি তা হলঃ যে ব্যক্তির পক্ষ হতে নজর লেগেছে তার সামনে এক পাত্র পানি দেয়া হবে। এরপর সেই ব্যক্তি পানি নিয়ে পাত্রে কুলি করবে। এরপর পাত্রে নিজের মুখ ধুবে। বাম হাতে ঢেলে ডান হাতের কজি ও ডান হাতে ঢেলে বাম হাতের কজি পর্যন্ত একবার করে ধৌত করবে, তারপর বাম হাত দিয়ে ডান কুনুই এবং ডান হাত দিয়ে বাম কনুইয়ে ঢালবে। এরপর বাম হাতে ডান পায়ে আর ডান হাতে বাম পায়ে ঢালবে। এরপর বাম হাতে ডান পায়ের হাঁটু আর ডান হাতে বাম পায়ের হাঁটুতে ঢালবে। আর সব যেন পাত্রে হয়। এরপর লুঙ্গী বা পায়জামার ভেতরের অংশ পাত্রে ধৌত করবে নিচে রাখবে না। অতঃপর এই পানি বদনযরে আক্রান্ত রোগীর শরীরে পিছন দিক থেকে এক সাথে ঢেলে দিবে।
(সুনানে কুবরা বায়হাকী ৯\৫৯১, হাদীস নং ১৯৬১৭)

দ্বিতীয় পদ্ধতি

রুকইয়াহ বা ঝাড়ফুঁক করা:

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَأَى فِي بَيْتِهَا جَارِيَةً فِي وَجْهِهَا سَفْعَةٌ فَقَالَ ‏ “‏ اسْتَرْقُوا لَهَا، فَإِنَّ بِهَا النَّظْرَةَ ‏”‏‏
উম্মু সালামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে একটি মেয়েকে দেখলেন যে, তার চেহারা মলিন। তখন তিনি বললেনঃ তাকে ঝাড়ফুঁক করাও, কেননা তার উপর নযর লেগেছে।
(বুখারী ৫৭৩৯)

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُنِي أَنْ أَسْتَرْقِيَ مِنَ الْعَيْنِ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বদ নযর থেকে (রক্ষার জন্য) ঝাড়-ফুঁক করার হুকুম করতেন।
(মুসলিম ৫৫৩৪ ইফাবা)

বদনযরের রুকইয়াহ বা ঝাড়ফুঁকের পদ্ধতি:
(“নিম্নোক্ত দোয়াসমূহ তিনবার পাঠ করে আক্রান্ত ব্যাক্তির উপর, তার গোসলের পানিতে ও খাবার পানিতে ফুঁক দিয়ে গোসল করানো ও খাওয়ানো”)
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ جِبْرِيلَ، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ اشْتَكَيْتَ فَقَالَ ‏ “‏ نَعَمْ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ ‏.‏
(১)আবী সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, জিবরীল (আলাইহিস সালাম) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, ইয়া মুহাম্মদ! আপনি কি অসুস্থতা বোধ করছেন?
তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি (জিবরীল) বললেনঃ
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
“আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি- সে সব জিনিস থেকে, যা আপনাকে কষ্ট দেয়, সব প্রাণের অনিষ্ট কিংবা হিংসুকের বদনযর থেকে আল্লাহ আপনাকে শিফা দিন; আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি”।
(মুসলিম ৫৫১২)

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعَوِّذُ الْحَسَنَ وَالْحُسَيْنَ وَيَقُوْلُ إِنَّ أَبَاكُمَا كَانَ يُعَوِّذُ بِهَا إِسْمَاعِيْلَ وَإِسْحَاقَ أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
(২)ইবনু ‘আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান এবং হুসাইন (রাঃ)-এর জন্য নিম্নোক্ত দু‘আ পড়ে পানাহ চাইতেন আর বলতেন, তোমাদের পিতা ইবরাহীম (আঃ) ইসমাঈল ও ইসহাক (আঃ)-এর জন্য দু‘আ পড়ে পানাহ চাইতেন।

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
"আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক বদনজরের অনিষ্ট হতে পানাহ চাচ্ছি"।
(বুখারী ৩৩৭১)

سَمِعْتُ عُثْمَانَ يَعْنِي ابْنَ عَفَّانَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ قَالَ بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ، ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، لَمْ تُصِبْهُ فَجْأَةُ بَلَاءٍ، حَتَّى يُصْبِحَ، وَمَنْ قَالَهَا حِينَ يُصْبِحُ ثَلَاثُ مَرَّاتٍ، لَمْ تُصِبْهُ فَجْأَةُ بَلَاءٍ حَتَّى يُمْسِيَ،
(৩)আবান ইবনু উসমান (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, এবং তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবেঃ

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ،
‘‘আল্লাহর নামে যাঁর নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।’’ সকাল হওয়া পর্যন্ত তার প্রতি কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না। অর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার উপর কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না।
(আবু দাউদ ৫০৮৮)

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَتَعَوَّذُ مِنَ الْجَانِّ وَعَيْنِ الإِنْسَانِ حَتَّى نَزَلَتِ الْمُعَوِّذَتَانِ فَلَمَّا نَزَلَتَا أَخَذَ بِهِمَا وَتَرَكَ مَا سِوَاهُمَا
(৪)আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুআওওযাতাইন (সুরা ফালাক, নাস) নাযিল না হওয়া পর্যন্ত জীন এবং বদ নযর থেকে পানাহ চাইতেন। পরে সুরাদ্বয় নাযিল হওয়ার পর এই দু’টিকেই গ্রহণ করেন তা ছাড়া অন্য সব ছড়ে দেন।
(তিরমিযি-২০৬৪)

﴾وَ اِنۡ یَّکَادُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَیُزۡلِقُوۡنَکَ بِاَبۡصَارِہِمۡ لَمَّا سَمِعُوا الذِّکۡرَ وَ یَقُوۡلُوۡنَ اِنَّہٗ لَمَجۡنُوۡنٌ ﴿ۘ۵۱﴾وَ مَا ہُوَ اِلَّا ذِکۡرٌ لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۵۲
(৫)কাফিরেরা যখন কুরআন শ্রবণ করে তখন তারা যেন উহাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়ে ফেলে দিবে এবং বলবে ‘‘এতো এক পাগল’’।কুরআনতো বিশ্ব জগতের জন্য উপদেশ।
(সুরা কলম ৫১-৫২)

قال الحسن البصري : رقية العين هذه الآية
হযরত হাসান বসরী (রহঃ) বলেন, কাহারও উপর বদ নজর লাগিয়া গেলে উক্ত আয়াত পড়িয়া তাহাকে দম করিয়া দিলে বিশেষ ফায়দা পাওয়া যায়।
(ফাতহুল বায়ান ফি মাকাসিদিল কুরআন – সুরা কলম ৫১-৫২ নং আয়াতের তাফসীর, আমালে কুরআনী ৫৩, ফাযায়েলে যিকির ২১-২২ পৃষ্ঠা)
“বদ নজর লাগিয়া থাকিলে উক্ত আয়াতদ্বয় পড়িয়া পানিতে দম দিয়া গোসল করাইয়া কিছুটা পান করিতে দিলে খোদা চাহে ত ভাল হইয়া যাইবে”।
(বেহেশতী জেওর ৯\১৫৩)

ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহিঃ) যাদুল মাআদ কিতাবে লিখেছেন,
ومن جرب هذه الدعوات والتعوذات ، عرف منفعتها ، وشدة الحاجة إليها ، وهي تمنع وصول أثر العائن ، وترفعها بعد وصوله بحسب قوة إيمان قائلها وقوة نفسه و استعداده وقوة توكله ، فإنها سلاح ، والسلاح بضاربه
যে ব্যক্তি উপরোক্ত দু’আগুলো পাঠ করবে সে অবশ্যই ফল পাবে এবং এগুলো যে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তাও বুঝতে পারবে। এগুলো আল্লাহর ইচ্ছায় বদনযর পৌঁছতে বাধা প্রদান করে। বদনযর পৌঁছে গেলেও দু’আ পাঠকারীর ঈমানী শক্তি অনুযায়ী এগুলো বদনযরের প্রভাবকে প্রতিহত করে। ব্যক্তির আভ্যন্তরীণ শক্তি, প্রস্ত্ততি, পরিপূর্ণ তাওয়াক্কুল, অন্তরের দৃঢ়তা অনুযায়ী এগুলোর পাঠক উপকৃত হয়ে থাকে এবং বদনযর হতে নিরাপদ থাকে। কেননা এগুলো হচ্ছে অস্ত্র। আর অস্ত্র যে চালায় তার চালানোর উপরই অস্ত্রের উপকারিতা নির্ভরশীল।

অর্থাৎ শুধু অস্ত্র হাতে থাকলেই অস্ত্র দিয়ে ফায়দা হাসিল করা যায়না, যুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভব হয়না এবং শত্রুর আক্রমণও প্রতিহত করা যায় না। অস্ত্রের সঠিক ব্যবহার এবং তা চালানোর অভিজ্ঞতাই এখানে মূল ধর্তব্য বিষয়।
(মুখতাসারু যাদুল মাআদ ১৯১ পৃষ্ঠা)

Exit mobile version