চলে যাবার পর আবার ফিরে আসে, তাহলে সে পূর্বের জায়গায় বসার অধিক হকদার। একটা কমিউনিটি সেন্টারে আপনি বিয়ের দাওয়াত খেতে গেলেন। বর আসতে দেরী হচ্ছে। বর না আসা পর্যন্ত খাবার দেওয়া হবে না। প্রায় আধঘন্টা ধরে চেয়ারে বসে আছেন, উঠে গেলে আর জায়গা পাওয়া যাবে না।
অবশেষে বর আসলো, আস্তে আস্তে খাবার দেওয়া শুরু হলো। প্লেট আর গ্লাস ধোয়া হয়েছে, কিন্তু আপনার মনের মধ্যে একটা খুঁত থেকে গেছে। ঠিকমতো ধোয়া হয়েছে তো?
প্লেট-গ্লাস হাতে নিয়ে পাশের চেয়ারের একজনকে বললেন, “ভাই, জায়গাটি একটু দেখো, আমি আসছি।” বেসিনে গেলেন প্লেট-গ্লাস আবার ধুতে।
ফিরে এসে দেখলেন আপনার জায়গায় আরেকজন বসে পড়ছেন! এটা দেখেই তো আপনার শরীর জ্বলবে। এতো কষ্ট করে জায়গা রাখলেন, এখন সেখানে আরেকজন এসে বসে পড়বে? ভদ্রভাবে বললেন, “ভাই, এটা আমার চেয়ার, আমি প্লেট-গ্লাস ধুতে বেসিনে গিয়েছিলাম। পাশেরজনকে জিজ্ঞেস করে দেখুন…।”
পাশেরজন মাথা নেড়ে সায় দিলেন। কিন্তু, যে আপনার চেয়ারে এসে বসলেন, তিনি বেঁকে বসলেন। “কই, চেয়ারের কোথাও তো আপনার নাম লিখা নেই?
এটা আপনার জায়গা হবে কিভাবে?”
বিয়ে খেতে এসে কী ঝামেলায় পড়লেন! ভদ্রভাবে বলার পরও লোকটা কথা শুনছে না, উড়ে এসে সে জুড়ে বসলো! ঐ লোকটিও ছাড় দিচ্ছে না, আপনিও ছাড় দিচ্ছেন না। আপনি আপনার ন্যায্য দাবি থেকে সরে আসছেন না, আর সে বলছে ‘আমি জায়গা পেয়েছি, আমি বসেছি’।
প্রথমে ঝগড়া হলো, একটু পর একজনের কটু কথা শুনে আরেকজন ঘুষি মারলো। শুরু হয়ে গেলো মারামারি।
এরকম ঘটনা অহরহ ঘটে। শুধু বিয়ে বাড়িতেই নয়, ক্লাসে বসতে গেলেও এমন হয়, মসজিদে গেলেও এমন হয়। এমন বিশৃঙ্খলা এড়াতে ইসলাম কি কোনো সমাধানের কথা বলে?
ইসলাম কার পক্ষে বলে?
যে আগে বসেছে তার পক্ষে নাকি যে পরে এসে বসলো তার পক্ষে?
নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যদি কোনো ব্যক্তি বৈঠক থেকে চলে যাবার পর আবার ফিরে আসে, তাহলে সে পূর্বের জায়গায় বসার অধিক হকদার।”
[সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৫৩]
অর্থাৎ, যে এতোক্ষণ ধরে একটা জায়গায় বসেছিলো, কোনো কারণে সে যদি উঠে চলে গিয়ে আবার ফিরে আসে, তাহলে সে তার আগের জায়গায় বসার অধিক হকদার। বিয়ে খেতে এসে অনেক্ষণ ধরে যে এক জায়গায় বসলো, তার জায়গায় আরেকজন এসে জুড়ে বসবে; ইসলাম এমনটা সমর্থন করছে না।
ইসলামের সৌন্দর্য (দ্বিতীয় পর্ব)