পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে ফজরের নামাজ গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের দিনের শুরু হয় ফজর এর নামাজ দিয়ে। নিম্নে ফজরের নামাজ পড়ার ১০টি ফজিলতের ফজিলত এবং আল্লাহু সুবাহানুহু তায়ালা আমাদের এই ফজরের ১০টি গুরুত্ব বুঝার তওফিক দান করেন। আমীন।
১/ ফজরের নামাজ মুনাফিকদের জন্য কঠিন হয়। ইমানদারদের জন্য সহজ হয়। অতএব ফজরের নামাজে শামিল হওয়া ঈমানদারের পরিচয়।
কেননা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের জন্য ফজর সালাত আদায় কষ্টকর! (বুখারি হাদিস: ৬৫৭, ৬৪৪, ২৪২০, ৭২২৪; মুসলিম হাদিস ৬৬১)।
২/ ফজরের সালাতে হাজির হলে তার জিম্মাদারি আল্লাহ্ সুবহানাহু তায়ালা ঐ দিনের জন্য জিম্মাদারি নেন। আল্লাহ্র নিরাপত্তার ভিতরে প্রবেশ করে যদি সে ফজরের নামাজ আদায় করে।
রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করে, সে ব্যক্তি ওইদিন আল্লাহর জিম্মায় চলে যায়। অর্থাৎ স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা ওই ব্যক্তির দায়িত্ব নেন। (সহিহ মুসলিম, তিরমিজি ২১৮৪)।
৩/ ফেরেশতারা আল্লাহ তায়ালার কাছে ঐ ব্যক্তির পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। সে সলাত আদায় করছে, ভাল কাজ করছে।
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করবে, আল্লাহর ফেরেশতারা আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তিকে ভালো মানুষ হিসেবে সাক্ষী দেবে। (বুখারি, মুসলিম)।
৪/ যে ফজর এর সালাত জামাতের সঙ্গে আদায় করে, আল্লাহু সুবহানাহু তায়ালা তাকে সারা রাত দাড়িয়ে তাহাজ্জুদের নামাজ পরার সওয়াব নফল নামাজ পড়ার সওয়াব দেন।
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজর সালাত জামাতের সঙ্গে আদায় করে, আল্লাহ তায়ালা তার আমলে দাঁড়িয়ে সারারাত নফল নামাজ আদায়ের সওয়াব দিয়ে দেন! (সহিহ মুসলিম: ১০৯৬)।
৫/ ফজরের নামাজ যদি কেউ জামাতের সঙ্গে পড়ে, আলো আধারিতে কষ্ট করে মসজিদে আসে নিয়মিত তো আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তার বিনিময়ে কিয়ামতের দিন তাকে পরিপূর্ণ আলোর ব্যবস্থা করেন। স্পেশাল তার জন্য আলোর ব্যবস্থা করেন কিয়ামতের দিন।
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ভোরে হেঁটে হেঁটে ফজরের সালাত আদায়ের জন্য মসজিদে প্রবেশ করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার জন্য পরিপূর্ণ আলো দান করবেন। (আবু দাউদ: ৪৯৪)।
৬/ আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালাকে দেখা জান্নাতিদের সবচেয়ে বড় পুরস্কার, এই পুরস্কারটি সে পাবে তা নয় পূর্ণিমার চাঁদ যেমন মানুষ দেখতে পরে পূর্ণিমার রাতে, আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালাকে সে এমন পরিষ্কার ভাবে দেখতে পারবে। এবং সে নয় এবং জান্নাতিরা কেউ বির করবে না দেখার জন্য।
যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের সবচেয়ে বড় নিয়ামত দান করবেন। অথাৎ সে আল্লাহর দিদার লাভ করবে, এবং জান্নাতি ওই ব্যক্তি আল্লাহকে পূর্ণিমার রাতের আকাশের চাঁদের মতোই স্পষ্ট দেখবে। (বুখারি: ৫৭৩)।
৭/ জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরওয়ানা পাওয়া যাবে। ঐ ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না, যে ব্যক্তি আসর এবং ফজর নামাজের যত্ন করবে। নবী (সা.) পরামর্শ দিয়েছেন, চেষ্টা করো আসর এবং ফজরের নামাজ কখনো যেন না ছুটে তোমাদের।
যে ব্যক্তি নিয়মিত ফজরের সালাত আদায় করবে, সে কখোনোই জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। (সহিহ মুসলিম: ৬৩৪)
৮/ সকালের সময়ের জন্য নবী (সা.) বরকতের দোয়া করেছেন। তো এই ফজরের সময়টা নবী (সা.) বরকতের দোয়া করেছেন, কেউ যদি ফজরের নামাজ পড়ে, উঠে আল্লাহর ইবাদত করে তাহলে সে নবী (সা.) কেমন যেন বরকতের বাগীদার হয়ে গেল। এই সময়ে যে কাজ করবে সে কাজ এর বরকত হবেই।
ফজরের সালাত আদায়কারী, রাসূল (সা.) এর বরকতের দোয়া লাভ করবেন। (সুনানে আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)।
৯/ ফজর নামাজ এর দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করা দুনিয়া এবং দুনিয়ার মধ্যবর্তী সব কিছুর মালিক হওয়ার চাইতে সর্ব শ্রেষ্ট ব্যক্তি হয়ে গেল।
ফজরের দুরাকাত সুন্নত সালাত, দুনিয়া ও তার মাঝে যা কিছু আছে তারচেয়ে উত্তম। (জামে তিরমিজি: ৪১৬)।
১০/ ফজরের নামাজ যদি জামাতের সঙ্গে আদায় করেন তাহলে মনটা ফুরফুরে, প্রফুল্ল, হাঁসি খুশি, নির্ভার বা পাতলা হয়ে যাবেন।
ফজরের সালাত আদায়ের ফলে ব্যক্তির মন ফুরফুরে, প্রফুল্ল হয়ে যায়। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)।
১১/ সম্পুরক ফজিলত, দুনিয়াবি ফজিলত তা হলো স্ব্যাস্থের দিক হতে একজন মানুষ যদি ফজরের নামাজে উঠে অনেক রোগ বালাই থেকে আল্লাহ্ তায়ালা তাকে হেফাজত করেন। যেই ব্যক্তি সকালে ঘুমিয়ে থাকে ঐ ব্যক্তির চাইতে যে ব্যক্তি সকালে উঠে ঐ ব্যক্তি স্বাস্থ গত অনেক ভাল থাকে।
একটা প্রবাদ আছে,
সকাল বেলার হওয়া এটা হাজার হাজার রোগের মেডিসিন।