প্রথম মানুষ আদম আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম থেকে শুরু করে শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সকল নবী ও রাসুলের দীন
ছিল একটি। তা হল ইসলাম। অর্থাৎ সর্বযুগে আল্লাহর দেয়া দীন ইসলামই একমাত্র জীবন আদর্শ।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّـهِ الْإِسْلَامُ ۗ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ۗ
“নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও ওরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ।”
(সূরা আলে ইমরান: ১৯)
প্রত্যেক নবী-রাসূল মানুষকে এক আল্লাহর ইবাদতের দিকে এবং শিরক থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّـهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ
“আমি প্রত্যেক জাতীর মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত (আল্লাহ ছাড়া যা কিছুর ইবাদত করা হয়) থেকে দূরে থাক।”
(সূরা আন নাহল: ৩৬)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
الْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّى وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ
‘‘নবীগণ পরস্পর বৈমাত্রেয় ভাই। তাদের মাতা বিভিন্ন; কিন্তু দ্বীন একটিই।[বুখারি, অধ্যায়: কিতাবুল আম্বিয়া।] এখানে দ্বীন বলতে তাওহীদ উদ্দেশ্য, যা দিয়ে আল্লাহ তা’আলা সকল রাসূল প্রেরণ করেছেন এবং প্রত্যেক আসমানি কিতাবের মূল বিষয় হিসাবে নির্ধারণ করেছেন।
যদিও শাখা গত বিভিন্ন বিষয়ে একেক যুগে ভিন্নতা ছিল। সময় ও মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বিধিবিধানে পার্থক্য ছিল।
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلَكِنْ لِيَبْلُوَكُمْ فِي مَا آتَاكُمْ فَاسْتَبِقُوا الْخَيْرَاتِ
‘‘তোমাদের প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য নির্দিষ্ট শরীয়ত ও নির্দিষ্ট পন্থা নির্ধারণ করেছি। আর আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তবে অবশ্যই তোমাদের সকলকে একই উম্মত করে দিতেন; কিন্তু তিনি এরূপ করেন নি। যাতে তোমাদেরকে যে বিষয় প্রদান করেছেন, তাতে তোমাদের পরীক্ষা নেন। সুতরাং তোমরা কল্যাণসমূহের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও।
(সূরা মায়িদাঃ ৪৮)
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. (شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا) এর ব্যাখ্যায় বলেনঃ এখানে শরীয়ত ও পন্থা বলতে সুন্নাত ও জীবন চলার পথ উদ্দেশ্য। মুজাহিদ, ইকরিমা, হাসান বসরি, কাতাদা, যাহ্হাক, সুদ্দী এবং আবু ইসহাক সুবাই-ঈ থেকেও অনুরূপ কথা বর্ণিত আছে।
মৌলিক বিশ্বাস ও মূলনীতিতে কোন পার্থক্য ছিল না।
কিন্তু মানুষ নিজেরা আল্লাহর দীন থেকে দূরে সরে গিয়ে নিজেরাই বিভিন্ন ধর্ম তৈরি করে দিয়েছে। যেমন: হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন ইহুদি এগুলো মানুষের তৈরি করা ধর্ম। আল্লাহ এ সকল ধর্ম নাযিল করেননি।
মোটকথা, ইসলামই সর্বকালে সর্ব যুগে একমাত্র আল্লাহর মনোনীত ধর্ম। এ ছাড়া পৃথিবীতে যত ধর্ম ও মতবাদ আছে সবই মানুষের তৈরি করা-যা আল্লাহ পছন্দ করেন না।
আল্লাহু আলাম।