মেডিকেলের পড়াশুনার জগতটা অন্য পাঁচ দশটা পড়াশুনার জগত থেকে ভিন্ন বেশ কয়েকটি দিক থেকে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে- এখানকার পরীক্ষাগুলোতে আপনি হয়তো পাশ করবেন নয়তো ফেল করবেন, মাঝামাঝি কোনো ফলাফল নেই। নম্বর পদ্ধতি আছে তবে পাশ নম্বর ৬০ শতাংশ যা অর্জন করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য এবং বেশ পরিশ্রমের কাজ। আপনি হয় একেবারে পাশ করে পরবর্তী ধাপে চলে যাবেন নতুবা ফেল করে পুনরায় পরীক্ষা দিতে বাধ্য থাকবেন যতক্ষণ না পাশ করছেন।
গত কয়েকদিন যাবৎ এরকমই বেশ কিছু ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা দিতে দিতে একটা ব্যাপার চিন্তা করলাম- আচ্ছা আমরা যে এতো পড়াশুনা করছি,করতে করতে নাওয়া-খাওয়া ভুলে যাচ্ছি, কেউ কেউ তো নিয়মিত আদায় করা ফরজ নামাজটুকু কাজা করে ফেলছি-এর ফলাফল কি?
এর ফলাফল তো ৫০/৫০,হয় পাশ নাহয় ফেল। কিন্তু,এই ফলপ্রাপ্তির পর যদি আমার মৃত্যু হয় তবে আমার পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে কিন্তু আমার আপনার পরকালীন হিসাব শুরু হবে না।আমরা পাশ করেছি বলে আমাদের যেরূপ পুরস্কৃত করা হবে না, তেমনি ফেল করেছি বলে আমাদের তিরস্কার করাও হবেনা। একইভাবে বিষয়টা পার্থিব জীবনের প্রতিটা সাফল্য কিংবা ব্যার্থতার গল্পের সাথে জড়িত।
যেই বিষয়টার অস্তিত্ব দুনিয়াতেই শুরু হয়ে শেষ হয়ে যায় সেই বিষয়টার জন্য সব ঢেলে দিতে গিয়ে নিজের আখেরটাকেই যদি গলাধঃকরণ করে ফেলি তবে দিন শেষে ফলাফল শূন্য বৈ অন্য কিছুই হবে না।তবে হ্যাঁ অবশ্যই নেক নিয়ত নিয়ে,কাজে ইখলাস রেখে যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দুনিয়ার যেকোনো কাজ করি,হোক সেটা পরীক্ষাই তবে এর মধ্য দিয়েও আমার, আপনার জন্য প্রতিদান আসবে। আর সেই প্রতিদানে দুনিয়ার সম্মান যেমন বাড়বে তেমনি আখিরাতে হিসাব সহজ হবে,কেননা তখন আমরা ফরজ তরক করে তো আর আল্লাহর অসন্তুষ্টি কামাবো না, দুনিয়াকে দ্বীনের উপরে প্রাধান্য দিবোনা।