যখন কোনো ছেলে অথবা মেয়ে হঠাৎ করে নিজের ভুল বুঝতে পেরে, নিজেদের পরিবর্তন করতে মওলার রহমতের আশায় পাপের পথ থেকে ভালো পথে এগোতে শুরু করে।
তখন আমাদের মাঝে কিছু মানুষ তাদের উৎসাহ দেওতা তো দুরের কথা উল্টো এমন তিরস্কার করে নিরুৎসাহীত করে কথা বলে যে তারা মানুষিক ভাবে একদমম ভেঙ্গে যায়।
“ওই তুই তো দেখি হুযুর হয়ে গেছিস”!!!! “
“আরে জুমা জুমা আট দিন হলো নামায শুরু করেছিস, তাতেই বড় বড় কথা”!!!!
“বেপর্দা/ বেনামাযী/ বেহায়া/ ছিলি কয়দিন হলোরে, বাহ আজ বড় বড় কথা!!! আগে নিজে ঠিক হো পরে আসিস আমাকে/ আমাদেরকে ঠিক করতে”!!!
অথচ রহিমু রহমান দয়াময় আল্লাহর দরবার গুনাহগারদের জন্য উন্মুক্ত ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য। গুনাহ অপরাধ বুঝতে পেরে তওবাকারীকে নবীজি আল্লাহর বন্ধু পর্যন্ত বলেছেন।
হয়তো কখনো ভেবে দেখা হয় নি যে তিরস্কার মুলক কথাগুলির পরিণাম কতইনা ভয়াবহ হতে পারে?
আপনার এই টিটকারির কারনে সেই নামাযি ছেলে মেয়ে যদি নামায ছেড়ে দেয়, কে নেবে এর দায়িত্ব?
এই টিটকারি করার কারনে সেই ছেলে যদি দাড়ি কেটে ফেলে, কে নেবে এর দায়িত্ব?
এই টিটকারি করার কারনে সেই মেয়ে যদি বোরখা পরিধান ছেড়ে দেয়, কে নেবে এর দায়িত্ব?
এই টিটকারির কারনে সেই ছেলে মেয়ে আবার ও সেই পাপ রাজ্যে ফিরে যায়, কে নিবে সেই দায়িত্ব…?
এতো এতো গুনাহ থেকে কিভাবে মুক্ত হবেন?
আল্লাহর দোহাই দিয়ে বলছি, এ কাজ বন্ধ করুন। যে দ্বীন মানছে তাকে বাহবা দিন আরোও উৎসাহিত করুন। যাতে সে ইসলামের দিকে আরো এগোতে পারে। আর উৎসাহ না দিতে পারলে কমপক্ষে নিরুৎসাহ করা বন্ধ করুন।
আমরা অযোগ্য সাধারণ মানুষ। আমাদের ক্ষেত্রে সকল পাপ একসাথে ছেড়ে দেয়া যে অনেক কষ্টকর, এ কথা আমরা কেনো বুঝতে চাই না? রাতারাতি সব বদঅভ্যাস ছেড়ে দেয়া সম্ভব তো নয়। সময়তো লাগেবেই। আর আল্লাহ যেইখানে স্রষ্টা হয়ে সময় সুযোগ দিচ্ছেন, সেইখানে বান্দার কি অধিকার না দেওয়ার।
তাই যে দুটি গুনাহ করে সে যখন একটি গুনাহ ছাড়ার সংকল্প করে, তখন তাকে বারবার আরেকটি গুনাহের কথা টিটকারি করে স্মরন না করিয়ে, বরং তাকে একটি গুনাহ থেকে তাওবা করার জন্য উৎসাহ/ বাহবা দিন। এই বাহবা/ উৎসাহ তাকে আরেকটি পাপ করা থেকে দূরে রাখবে এবং এটি আপনারও নেকি অর্জনের একটি উত্তম পন্থা হবে, ইনশাআল্লাহ।
আমরা যেই কাজই করিনা কেনো, মনে মনে নিয়ত করে নি যেন, আমি এ কাজ আমার দয়াময় সৃষ্টিকর্তাকে কে রাজি ও খুশি করার নিয়তে করছি। তাহলে আমাদের জীবন নেকীময় হয়ে উঠবে সুন্দর ভাবে সাজবে। পারলে অন্যের উপকারে আসবো, আর না পারলে নিরব হয়ে সহযোগীতা করবো।
ইনশাআল্লাহ।
লিখাঃ
শায়খ ছৈয়দ মোহাম্মদ মোকাররম বারী