জুমা খুৎবা -২৫/১২/২০২০ইং
তাদের ওয়াজিব লঙ্ঘনের কারণে নামাজ হবে কবিরা গুনাহ, সাথে যদি ভুলেও করে আর যেনে করলে নামাজ বাতিল হতে পারে।
এটা ওয়াজিব, ওয়াজিব লংঘন করা কবিরা গুনাহ এখন আমাদের হানাফী ভাইদের ভিতরে ঝামেলা একটু বেশ, আহলে হাদীসরা এখানে নিরাপদ।
আজকে উলামায়ে কেরাম, নামাজ নিয়ে ফতোয়াবাজি করতে করতে মসজিদ পর্যন্ত আলাদা করে ফেলতেছে।
এমন ফতোয়া মিম্বারে বসে আমি(আবুল কালাম আজাদ বাশার) দিচ্ছি যে আমার ভিন্ন মাসায়ালা যারা আছে তারা আলাদা মসজিদ বানাইতে হবে। যে আমাদের মসজিদে জোরে আমিন বলা চলবে না, যদি কেউ জোরে আমিন বল তারে ধরতে হবে।
এ মসজিদে আসেন না, অন্য মসজিদে করেন, অন্য মসজিদে চলে যান।
জোরে আমিন ওয়ালারা ভাবছে যেহেতু জোরে আমিন বলতে পারিনা। আলাদা মসজিদ লাগবেই, সেটা আলাদা নাম দিয়ে দিচ্ছে আহলে হাদিস মসজিদ।
এমন আছে নাকি নাই।
যার মানে বুঝাইছে জোরে আমিন বলতে কোন অসুবিধা নাই। শরীরে বল আছে, প্রয়োজন হলে দুধ রোজ করে খাইয়া বল আরও বাড়াইয়া, এমন জোরে আমিন কইবা যাতে ছাদ ফাইটা যায়।
এটাকে ফরজ বানিয়ে ছাড়ছে, আমিন বলাই লাগবে জোরে। যেহেতু হানাফী মসজিদে গেলে আমি আমিন জোরে বলতে পারিনা, তাহলে আমার আমিন এর জন্য আরেকটা মসজিদ করাই উচিত। এটা যদি আস্তে বলে নামাজ, না যানি বাতিল হয়ে যায়।
মানে শরীয়তের বিধান গুলোকে নিজের জায়গায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। যদি হাদিসে জোরে আমিন বলার অপশন থাকে আপনি না বলেন, তাকে বলার অধিকার দিতে হবে এটা হাদিস।
আপনাকে কে অধিকার দিলো যে বলবেন মসজিদ থেকে বের হয়ে যাও, মসজিদ কি আপনার নাকি আপনার বাবার?
মসজিদ কার?
আল্লাহর
মসজিদ আল্লাহর, এজন্য মসজিদ ওয়াকফ করা লাগে। ব্যক্তি মালিকানাধীন থাকলে আমরা বলি জুমা পরিও না, ওই মসজিদে সব সময় দু-একটা জুমা হতে পারে। মসজিদের কাজ চলছে বিকল্প জায়গায় নামাজ হয় সেটা ওয়াকফ নয়। আমরা বলি আপাতত পড়ো কিন্তু সব সময় পড়িওনা, ওয়াকফ করে দিতে হবে।
আল্লাহর ঘর আল্লাহর জন্য সঁপে দাও।
তো আপনি বলার কি অধিকার রাখেন মসজিদ থেকে বের করে দিতে হবে। এ না আপনার ভাই!
ভাইকে কি বাড়ি থেকে বের করে দেয়, বাড়ি থেকে বের করা যায় না, ভাই আপন জন তার সাথে তিন দিনের বেশি কথা না বলে থাকা যায় না। সে ঝগড়া করলেও আপনার সামনে যেতে হবে এটাকে সেলাহে রেহনি বলে।
এটা হচ্ছে রাসূলের অর্ডার। যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তুমি তার সাথে সম্পর্ক জোড়া লাগাও।
যে জুলুম করে তাকে ক্ষমা করো, যেখানে পারিবারিকভাবেই ভাই কে বের করে দেয়া যায় না। আপনার নিজের ঘর, তারপরও আপনি আপন ভাইকে বের করে দিতে পারবেন না। ইসলাম বলে করোনা এটা।
আর আপনি আল্লাহর ঘরে এসে ফতোয়া দিচ্ছেন জোরে আমিন বলে বের করে দিব। ওই লোকেরা ঠেলায় পড়ে আরেকটা মসজিদ বানাইছে।
এমন ফতোয়া শুরু হইছে নামায কেন্দ্র করে।
যে নামাজ আমাকে ঐক্যের শিক্ষা দেয়, ঐ নামাজ আজ বিভক্ত করে ফেলেছে জাতির মাঝে চরম বিভক্তি। আমরা এটার অবসান চাই আমরা মুসলমানদের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি করব না। মুসলমানের সাথে আমার দ্বন্দ্ব হবেনা, দ্বন্দ্ব হবে কাফেরের সাথে, নামাজি আমার ভাই, আমার মোমেন ভাই।
আমার সাথে দ্বন্দ্ব হবে ইহুদির, খ্রিস্টানে্ নাসারাদের। যদি ধর্মীয় কারনে হয়, একজন মুমিনের সাথে ধর্মীয় কারণে কখনোই দ্বন্দ্ব আরেক মোমেনের হতে পারে না। তোমার ধর্ম এক, তুমি এক ধর্মের লোক, তুমি তার সাথে কিভাবে দ্বন্দ্ব করো।
মাসআলায় গত একতালাফ নতুন কিছু নয়। এটা সাহাবাদের যুগে ছিল। এক সাহাবী একরকম আমল করেছে, আরেক সাহাবী আরেক রকম আমল করেছে। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বারবার হাত তুলেন নাই রাফিয়াদাইন করেন নাই। আবু হুরায়রা করেছে।
আবু হোরায়রা বারবার হাত তুলেছে, রুকুতে যাওয়ার সময় তুলেছে, রুকু থেকে উঠে তুলেছে।
ইবনে মাসউদ তুলে নাই, দুজনে সাহাবী, জলিলে কদর সাহাবী দু’রকম আমল ছিল। এক দুইটা মাসআলায় না শত শত মাসআলায় কিন্তু কোন ঝগড়া ছিল না, দ্বন্দ্ব ছিল না, ফতুয়া দিয়া এরা সরাইয়া দিছে এটা ছিল না।
এজন্য আপনি প্রকৃত অর্থে মমিন হন
مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاء عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاء بَيْنَهُمْ
মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল
সূরা আল ফাতহ
আয়াত-২৯
নবী মোহাম্মদের চরিত্র, তার সঙ্গীদের সঙ্গীদের চরিত্র আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তারা কাফেরদের প্রতি অনমনীয় আর মুমিনদের প্রতি খুবই রহম ওয়ালা। যদি এই চরিত্র আপনার না হয়, তাহলে বুঝতে হবে রাসূলের সঙ্গী হওয়ার উপযুক্ত আপনি নন।
একটি আইডোলজি ঢুকিয়ে দিতে চাই কলিজা পর্যন্ত কলব পর্যন্ত সেটা হচ্ছে, আমরা বিদআতের ব্যাপারে হব আপোষহীন কিন্তু সুন্নতের ব্যাপারে হব উদার।
শরীয়তে যেটা ইবাদত হিসেবে সাব্যস্ত নয়, সেটার নাম হলো বেদআত। এটার সাথে আমরা আপোষ করব না। আমি বিদ’আতী হবোনা না কিন্তু সুন্নতের ব্যাপারে আমি উদার হব।
একটি হাদিস আপনি আমল করছেন আমি আরেকটা আমল করছি যদি প্রমাণ হয়, আপনার পক্ষে হাদিস আছে, আমি এখানে উদার হয়ে যাব।
কাবার ইমামের পিছনে নামাজ পড়ছে, কেউ জোরে আমিন বলে কেউ আস্তে আমীন বলে। যারা হজ্ব করতে গিয়েছেন তারা দেখেছেন আপনার পাশে দাঁড়িয়ে জোরে আমিন বলে গিয়েছে আপনি গুতা মেরেছেন কি তাদের।
আর বাংলাদেশের অবস্থা হলো যদি পাশে দাঁড়িয়ে জোরে আমিন বলে সে নামাজের ভিতরে ফুলতে থাকে নামাজ পড়া ছেড়ে দিয়ে কিছু বলতে পারেনা। নামাজের ভিতরে সে ফুলতে থাকে আইছে কই থেকে যে জোরে আমিন বলে, পারলে নামাজটা ছেড়ে দিয়ে ধরে ফেলে কিনা!!!
কি আশ্চর্য চরিত্র আপনার!!!
ইমাম শাফি রাদিয়াল্লাহু আনহু’ জোরে আমিন এর পক্ষে ছিলেন, আমাদের মসজিদে আমরা জোরে আমিন বলি না। অনেকেই আমরা বলি না, আমি নিজেও বলি না আমিও হানাফী মাযহাবের লোক। কিন্তু ইমাম শাফি মসজিদে নামাজ পড়তো জোরে আমিন বলতেন, তাহলে কি আপনি ওনাকে ধরতেন নামাজ শেষ করে এই মিয়া পাইলেন কই?
কে এই দায়িত্ব আপনাকে দিয়েছে। এজন্য আমি গত জুম্মা বলেছিলাম এই অবস্থার নিরসনের চিন্তায় আমি বইটি লিখেছি হাদিসের পূর্ণাঙ্গ চিত্তে নামাজ অসংখ্য মাসায়েল আছে যেগুলো সুন্নতের খেলাফ আমরা চলছি