নমনীয়তা ও কোমলতার ফজিলত কঠোরতা ও নির্লজ্জতার পরিণতি
আল্লাহ্ তা”আলা কোমলতা পছন্দ করেন,
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ: রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘আল্লাহ কোমল, তিনি কোমলতাকে ভালবাসেন। আর তিনি কোমলতার প্রতি যত অনুগ্রহ করেন, কঠোরতা এবং অন্য কোন আচরণের প্রতি তত অনুগ্রহ করেন না’।
মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে,
একদা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আয়েশা (রাঃ)-কে বলেন, ‘কোমলতা নিজের জন্য বাধ্যতামূলক করে নাও এবং কঠোরতা ও নির্লজ্জতা হতে নিজেকে বাঁচাও। কারণ যাতে নম্রতা ও কোমলতা থাকে তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়। আর যাতে কোমলতা থাকে না, তা দোষণীয় হয়ে পড়ে’
(মুসলিম, মিশকাত হা/৫০৬৮)।
উপদেশ হাদীস নং ২০০
হাদিসের মান: সহীহঃ
জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জারীর (রাঃ) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘যাকে কোমলতা ও নম্রতা হতে বঞ্চিত করা হয়, তাকে যাবতীয় কল্যাণ হতে বঞ্চিত করা হয়’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫০৬৯)
উপদেশ হাদীস নং ২০১
হাদিসের মান: সহীহঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যাকে নম্রতার কিছু অংশ প্রদান করা হয়েছে তাকে দুনিয়া ও আখেরাতের বিরাট কল্যাণের অংশ দেওয়া হয়েছে। আর যাকে সেই কোমলতা হতে বঞ্চিত করা হয়েছে তাকে উক্ত ইহকাল ও পরকালের বিরাট কল্যাণ হতে বঞ্চিত করা হয়েছে’।
শরহু সুন্নাহ মিশকাত হা/৫০৭৬)।
উপদেশ হাদিস নং ২০৮
হাদিসের মান: সহিহ হাদীস
বস্তুত: নমনীয়তা ও নরম ব্যবহার উত্তম চরিত্রেরই ফল এবং তারই পরিণতি। বলা হয়ে থাকে যে, সবচেয়ে প্রজ্ঞাপূর্ণ কাজ হচ্ছে, প্রতিটি বস্তুকে যথাস্থানে প্রয়োগ করা। কঠোরতার জায়গায় কঠোরতা এবং কোমলতার স্থানে কোমলতা, যেখানে তলোয়ার উত্তোলন করা দরকার সেখানে তলোয়ার উঠানো, আর যেখানে লাঠি উঠানো দরকার সেখানে লাঠি উঠানো। সুতরাং যাবতীয় চরিত্রে যেমন মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা উত্তম, তেমনি কঠোরতা ও কোমলতা উভয়টির মধ্যেও মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা উত্তম।
কিন্তু যেহেতু মানব স্বভাব কঠোরতার প্রতিই বেশি ধাবিত হয় তাই মানুষকে কোমলতা অবলম্বন করার প্রতি বেশি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। আর এ জন্যই কঠোরতার চেয়ে কোমলতা অবলম্বনের অধিক প্রশংসা করা হয়েছে।
সত্যিকার পূর্ণ তো সে-ই, যে ব্যক্তি কোথায় কঠোরতা করতে হবে এবং কোথায় কোমলতা অবলম্বন করতে হবে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে।
ফলে যেখানে যা করা দরকার সেখানে সে তাই করে। যদি কোন ব্যক্তির দূরদর্শিতা কম হয়, অথবা কোন ঘটনার পিছনে কি হিকমত আছে, তা না জানে, তাহলে তার জন্য কোমলতা অবলম্বন করা উত্তম। কারণ, অধিকাংশ সময় কোমলতার মধ্যেই সফলতা নিহিত থাকে।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যে কোনো কিছুতে কোমলতা অবলম্বন করা সেটার সৌন্দর্যকে নিশ্চিত করে। আর কোন কিছু থেকে কোমলতা তুলে নেয়া সেটাকে কলঙ্কিতই করে থাকে
[ সহীহঃ মুসলিম হাদীস নং / ২৫৯৪]
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে এমন লোকের সংবাদ দিব না? যার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যায়; আর আগুনও তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। এমন প্রত্যেক ব্যক্তি যার মেজায নরম, স্বভাব কোমল, মানুষের নিকটতম (মিশুক) এবং আচরণ সরল সহজ’
(আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৫০৮৪)।
উপদেশ হাদিস নং ২১৫
হাদিসের মান: সহীহঃ
মহান আল্লাহ্ তা”আলা আমাদের কোমল হওয়ার তৌফিক দান করুন,
আমীন।