আমাকে দ্বীনদার মা দাও আমি তোমাদের দ্বীনদার জাতি উপহার দেব
“আমাকে একজন দ্বীনদার মা দাও, আমি তোমাদের একটি দ্বীনদার জাতি উপহার দেব।”
একবার এক মেয়ের টি শার্ট আর হাফ প্যান্ট পরা ছবি দেখে আমার এক ফ্রেন্ডকে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম মানুষ এমন কুরুচিপূর্ণ ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে কিভাবে?
সে ঝটপট উত্তর দিয়েছিলো, “আরেহ ওর মা ই তো জিন্স আর টি শার্ট পরে ওর সাথে দেখা করতে আসে। তার মেয়ে আর কি হবে?”
এক ছেলে বহু মেয়ের সাথে একসাথে ফ্লার্টিং করতো। সেসব মেয়েদের মধ্যে এক মেয়ে যখন সে ছেলের মা কে এ ব্যাপারে জানালো তখন তার মা মুখ হাসি হাসি করে উত্তর দিয়েছিলো, “ছেলেরা এ বয়সে এমন হয়েই থাকে। এতে দোষের কিছুই নেই।”
ক্লাস থ্রি পড়ুয়া এক বাচ্চাকে যখন দেখলাম সে অনবরত অন্য বাচ্চাদের গীবত করেই যাচ্ছে তখন আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম। পরে যখন দেখলাম সে বাচ্চার মা বাচ্চার সামনেই সাতপাঁচ না ভেবেই অনবরত গীবত করছে। তখন আমি মনে মনে বলেছিলাম, অহ আচ্ছাহ।
এক মা তার ছেলে সম্পর্কে বলছে, আমার ছেলেটার ভাবি টাকা-পয়সা, খাওয়া-দাওয়া, আড্ডা, খেলাধুলা কোনো কিছুরই নেশা নেই। ওর শুধু মোবাইল আর টেলিভিশন হলেই হলো। সে ছেলেকে দেখলাম বিকেল পাঁচটা থেকে রাত বারটা পর্যন্ত একটানা টেলিভিশনে হিন্দি মুভি দেখতে। আমি নিজে মাগরিবের আজানের সময় অনেক বলাতেও সে ছেলে টেলিভিশন অফ করে নাই।নামাজের সময়টা বাদে তার মা ও তার সাথে হিন্দি সিনেমা দেখায় অংশগ্রহণ করেছে।
যে মা জিন্স টি শার্ট পরে ঘুরে বেড়াবে তার মেয়ে পর্দা শেখা তো দূরে থাক। শালীনতাটাই বা শিখবে কি করে?
যে মায়ের ছেলে মেয়েদের সাথে ফ্লার্টিং করাতেও তার মা হেসে হেসে বলে এতে দোষের কিছুই নেই সে ছেলে দৃষ্টির পর্দা, মাহরাম-নন মাহরাম বুঝবে কি করে?
যে মা বাচ্চার সামনে অনবরত গীবত করেই যায় সে বাচ্চা গীবতই শিখবে। অন্যের প্রশংসা তার মুখে আসবে কি করে?
আজানের সময়ও যে ছেলে হিন্দি সিনেমা দেখে সে ছেলে সালাত শিখবে কি করে?
আবার এই একই সমাজে আমরা এমন বাচ্চাও দেখি, যে বাচ্চা ছোট ছোট হাত মেলে ধরে মায়ের সাথে মোনাজাত করে।
মায়ের হিজাব টা নিজেও জড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
মা রোজা রেখেছে বলে সেও রোজা রাখার চেষ্টা করে।
বাচ্চারা অনুকরণপ্রিয়। আর তারা যেহেতু ছেলেবেলার অধিকাংশ সময় মায়ের সাথে কাটায় তাই সেটাই তারা শিখে ফেলে যা তার মা করে। অধিকাংশ জিনিস তারা মায়ের থেকে আয়ত্ত করে
ঠিক এ কারণেই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বাচ্চাদের আচরণ মায়েদের সাথে হুবহু মিলে যায়।
এজন্যই নেপোলিয়ন যেমন বলেছিলেন,
“আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব।”
সে সুরেই সুর মিলিয়ে আমিও বললাম,
“আমাকে একজন দ্বীনদার মা দাও, আমি তোমাদের একটি দ্বীনদার জাতি উপহার দেব।”