আপনি হাঁটছেন। রাস্তার মধ্যে একটি কলার খোসা পড়ে থাকতে দেখলেন। আপনি চাইলে সেটা ইগনোর করে পাশ কেটে চলে যেতে পারেন।
রাস্তায় একটি ডাল পড়েছে। গাড়ি চলতে পারবে না। কয়েকজন ডালটি ধরে রাস্তার পাশে রাখতে পারলে তবেই গাড়ি চলতে পারে। মানুষ খোঁজা হচ্ছে। আপনি দেখেও না দেখার ভান করে চলে যেতে পারেন।
একজনের মানিব্যাগ চুরি হয়ে গেছে। বাসে উঠার পর হাত দিয়ে দেখে প্যান্ট কেটে চোর মানিব্যাগ নিয়ে গেছে। সে খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে৷ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, কারো কাছে হাত পাততে পারছে না, তার আত্মসম্মানবোধ আছে। আপনি সেটাও চাইলে না দেখে চলে যেতে পারেন?
অথবা? অথবা আপনি কী করতে পারেন?
রাস্তা থেকে কলার খোসা হাতে নিয়ে ডাস্টবিনে ফেলতে পারেন। কারণ, অসাবধানতার ফলে কেউ পা পিছলে পড়ে যেতে পারে।
রাস্তায় গাছের ডাল পড়ায় মানুষের ভোগান্তি হতে পারে। রোগী নিয়ে কেউ এই রাস্তা দিয়ে যেতে পারে। সাথে একাধিক পুরুষ না-ও থাকতে পারে।
চোর মানিব্যাগ চুরি করার ফলে লোকটি সময়মতো বাসায় যেতে পারবে না। বাসায় হয়তো তার স্ত্রী-সন্তান অপেক্ষা করছে৷ বাবা আসছেন না দেখে সন্তানরা দুশ্চিন্তা করতে পারে।
এমনিতে হয়তো আপনি বছরে অনেক টাকা দান করেন। কিন্তু, ঐদিন যদি অপরিচিত লোকটির হাতে ১০০ টাকার একটি নোট দিয়ে বলেন, “ভাই, ভাড়াটা দিয়ে বাসায় যান।”
তাহলে সে কতো খুশি হবে একবার ভেবে দেখেছেন?
ইসলাম আমাদেরকে মানবিক মূল্যবোধ শেখায়, অন্যকে নিয়ে ভাবতে শেখায়। ইসলাম শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আমল-চর্চার ধর্ম না। ইসলাম সামাজিক ধর্মও বটে। আপনি সমাজ নিয়ে ভাববেন, রাষ্ট্র নিয়ে ভাববেন। রাস্তায় কাঁটা পড়ে থাকলে মানুষের কষ্ট হবে কি-না এটা নিয়ে ভাবতে ইসলাম আপনাকে উৎসাহ দেয়।
আপনি হয়তো মনে করছেন কাজগুলো খুবই ছোটো। অথচ এই ছোটো কাজগুলো আপনার জান্নাত লাভের উসীলা হতে পারে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“আমি একটি গাছের কারণে একজনকে জান্নাতে আনন্দ-ফুর্তি করতে দেখেছি। একটি গাছ (রাস্তায় পড়ে থাকায়) মানুষের কষ্ট হতো। (মানুষের কষ্ট দূরীকরণে) লোকটি রাস্তা থেকে গাছটি সরিয়েছিলো। (এর বিনিময়ে আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করেন)।
[সহীহ মুসলিম: ৬৫৬৫]