ডাক্তারি পেশা হিসেবে নেয়া
অনেকেই ছোটোবেলায় ‘Aim in Life’ রচনা লিখতে গিয়ে ডাক্তার হওয়াকে বেছে নেন। সামাজিকভাবে ডাক্তারের মর্যাদা অনেক বেশি। তাছাড়া মানবসেবা সংক্রান্ত যেসব পেশা আছে, ডাক্তারি পেশায় সেটার সুযোগ অনেক বেশি। আর্থিক দিক থেকেও সাধারণত ডাক্তাররা অবস্থাসম্পন্ন থাকেন।
এসব নানান দিক বিবেচনায় অনেকেই জেনে বা না জেনে ছোটবেলা থেকেই ডাক্তার হওয়াকে সম্মানজনক মনে করেন। তাছাড়া, ক্লাস নাইনে সাইন্স/আর্টস নেবার ক্ষেত্রে অনেকেই সাইন্স নেন ডাক্তারি বিদ্যার্জনের জন্য। কাউকে যদি বলা হয় ‘সে সাইন্সে পড়ে’ তাহলে তিনি ভাবেন, সে তো ডাক্তার হবে।
একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ডাক্তার সমাজের মানুষকে সুরক্ষা দেন, চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষকে সুস্থ করে তোলেন। মোটকথা, মানুষকে বাঁচানোর ভূমিকা পালন করেন। এই পেশার ফলে যেমন তিনি আর্থিক ফি পাচ্ছেন, তেমনি বৃহত্তর মানবসেবার কাজেও তিনি অবদান রাখছেন।
আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন:
“কেউ যদি কোনো মানুষের জীবন রক্ষা করে, সে যেনো সব মানুষেরই জীবন রক্ষা করলো।”
[সূরা মায়িদাহ: ৩২]
ইমাম আশ-শাফে’ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
“জ্ঞানের হলো দুটো শাখা। একটি দ্বীনি শাখা, আরেকটি দুনিয়াবী। দুনিয়াবী বিদ্যা হলো ডাক্তারী বিদ্যা।”
[মানাকিবু ইমাম আশ-শাফে’ঈ, পৃষ্ঠা ২৪৪]
ইমাম আশ-শাফে’ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) এমন কোনো শহরে থাকতে নিরুৎসাহিত করেছেন, যে শহরে কোনো আলেম নেই এবং কোনো ডাক্তার নেই। তাঁর সময়ের মুসলিমদের চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনাগ্রহ দেখে তিনি আক্ষেপ করে বলতেন:
“মুসলিমরা জ্ঞানের এক-তৃতীয়াংশ ইহুদি-খ্রিস্টানদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে।”
ইমাম গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ) জ্ঞানকে দুইভাগে ভাগ করেন। দুনিয়াবী জ্ঞানের মধ্যে কয়েকভাগ করেন এবং তারমধ্যে একভাগকে ‘ফরজে কেফায়া’ বা সমাজের মানুষের উপর ফরজ বলে উল্লেখ করেন। তারমধ্যে এক প্রকার জ্ঞান হলো- চিকিৎসা বিদ্যা।
[ইহইয়া উলুমুদ্দীন: ১/১৬]
ডাক্তার হবার জন্য আমরা দেখতে পাই যে, পূর্ববর্তী আলেমগণ উৎসাহিত করেছেন।
ইসলামের সৌন্দর্য (চল্লিশতম পর্ব)