মুমিনের সাপ্তাহিক ঈদ জুমাবার

আমরা প্রতি সপ্তাহে জুমার পবিত্র দিনটিতে একত্রিত হ‌ই,খুতবা শুনি এবং পরস্পরের সাথে সাক্ষাৎ করি যদিও আমরা অনেকেই এই পবিত্র দিনটির মহিমা সম্পর্কে অবগত ন‌ই, অবগত ন‌ই খুতবা শুনার গুরুত্ব এবং অন্যান্য দিনের উপরে জুমার দিনের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে।
আমরা কমবেশি সকলেই এই দিনে একত্রিত হয়ে জুমার সালাত আদায়ের অভ্যাস তৈরি করেছি কিন্তু এই দিনে আল্লাহ পাক নামাজের পাশাপাশি আপনার আমার জন্য যেসকল বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা রেখেছেন সেগুলো সম্পর্কে না জানার কারণে এই অভ্যাস সত্বেও আমরা আল্লাহ প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধাগুলোকে পরিপূর্ণ কাজে লাগাতে পারি না।

নবীজী ﷺ বলেন,
“সূর্যোদয়ের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম।”
আর সেই জুমার দিন কোনটি,সেই জুমার দিন হচ্ছে শুক্রবার। কিন্তু কেন জুমার দিন‌ই কেন সর্বোত্তম?

এ ব্যাপারে নবীজী ﷺ বেশ কিছু কারণ দেখিয়েছেন, তিনি বলেন,
“এ দিনে আদম (আ.) কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এ দিনে তাকে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে।”
[সহীহ মুসলিম, ১৮৬২]

এমনকি অপর এক বর্ণনায় এরকম ও বলা হয়েছে এই সেই দিন যেদিন আল্লাহ পাক আদম আঃ কে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।আদম আঃ কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চেয়েছিলেন আর এই দিনের মহত্বে আল্লাহ পাক আদম আঃ কে মাফ করে দিয়েছিলেন।

এমনকি নবীজী ﷺ এ ও বলেছেন,
“আর কিয়ামত জুমুআর দিনেই সংঘটিত হবে।”
[সহীহ মুসলিম, ৮৫৪]

উপরের প্রতিটি বিষয়‌ই গুরুত্বপূর্ণ আর প্রতিটি বিষয়‌ই জড়িয়ে আছে জুমার দিনের সাথে।
জুমার দিন সম্পর্কে সমগ্র উম্মাহকে নিয়ে নবীজী ﷺ এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস আছে।

নবীজী ﷺ বলেছেন,
“আমরা উম্মত হিসেবে সবার শেষে এলেও কেয়ামতের দিন সব সৃষ্টির আগে থাকব।”
কিভাবে?

এর ব্যাখ্যা এক‌ই হাদীসে নবীজী ﷺ দিয়েছেন। তিনি সা বলেছেন,
“আমাদের পূর্ববর্তী উম্মতকে জুমার দিন সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা অজ্ঞ রেখেছেন। ইহুদিদের ফজিলতপূর্ণ দিবস ছিল শনিবার। খ্রিষ্টানদের ছিল রোববার। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দুনিয়ায় পাঠালেন এবং জুমার দিনের ফজিলত দান করলেন। সিরিয়ালে শনি ও রোববারকে শুক্রবারের পরে রাখলেন। দুনিয়ার এই সিরিয়ালের মতো কেয়ামতের দিনও ইহুদি খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের পরে থাকবে।”
[সহীহ মুসলিম, ১৪৭৩]

সুবহানাল্লাহ!
আসলেই তো শুক্রবার সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে হিসাবে শেষতম দিন হিসেবে আসে কিন্তু মর্যাদার হিসাবে তা সর্বপ্রথম দিনে উপনীত হলো।এক‌ইভাবে আমরা উম্মাহ হিসেবে সবার শেষে আসলেও আল্লাহ পাক কিয়ামত দিবসে আমাদের সিরিয়ালে আগে দাঁড় করিয়ে দিবেন,অন্যান্য জাতির থেকে আমাদের অগ্রগামী করবেন।
অপর এক হাদীসে নবীজী ﷺ বলেছেন,
“জুমার দিন দিবসসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত।”
[সহীহ ইবনে মাজাহ, ১০৮৪]

এখানে আরবীতে ব্যবহার করা হয়েছে ‘সায়্যিদ’ শব্দটি যার অর্থ অনেকটা এরকম দাঁড়ায় যে,জুমা হচ্ছে অন্যান্য দিনের নেতা,অন্যান্য দিনের থেকে সেরা, সর্বাধিক আকর্ষণীয়। এমনকি ইবনে মাজাহর বর্ণনামতে জুমার দিনকে দুই ঈদের থেকেও উত্তম বলা হয়েছে।
এই বিষয়টা নিয়ে যদিও আলেমদের মধ্যে মতভেদ আছে তবুও ঈদের দিনের মতো এই দিনটিকে মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞাত করা হয়। এমনকি খোদ নবীজী ﷺ বলেছেন,
“জুমার দিনকে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন বানিয়েছেন।”
[সহীহ ইবনে মাজাহ, ৯০৮]

ঈদ শব্দের দুটো অর্থ আছে,
১. পুনরাবৃত্তি করা,যেমনটা জুমুআ প্রতি সপ্তাহে আমাদের জীবনে একবার করে আসে এবং
২. আনন্দ,যার সাথে আমরা সবাই সম্পৃক্ত।তাই জুমুআকে ঈদের দিনের মতো গুরুত্ব দিয়ে দেখতেও কোনো সমস্যা নেই বরং উত্তম।

এবার আরেকটা বিষয় নিয়ে ভাবা যাক, জুমার দিনের যে ইতিহাস নবীজী ﷺ বর্ণনা করেছেন তাতে বুঝা যায় প্রতিটি নতুন সূচনার সূত্রপাত হয়েছে জুমার দিন থেকে-
আদম আঃ কে সৃষ্টি করা হয়েছে অর্থাৎ সৃষ্টির সূচনা,আদম আঃ কে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে অর্থাৎ প্রথম মানুষের জান্নাতে প্রবেশ,আদম আঃ কে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ পৃথিবীর বুকে মানুষের প্রথম পথচলা এবং কিয়ামত দিবসের সূত্রপাত এই দিনে হবে অর্থাৎ পরকালীন জীবনের চিরস্থায়ী সূচনা- এই প্রতিটি ঘটনাই এক একটা নববিপ্লব যার সূত্রপাতের সাথে জুমার দিন জড়িয়ে আছে।

অর্থাৎ,জুমার দিন হচ্ছে নব সূচনার মাইলফলক। আমাদের একটা বিষয় স্পষ্টত মাথায় রাখতে হবে,জুমার দিন আমাদের জন্য প্রথম দিন, শেষ দিন নয়। আমাদের জন্য অগ্রগামী দিন জুমুআ আর তাই আমাদের সপ্তাহের গণনা এখান থেকেই শুরু আর এর‌ই সাথে আমাদের ও প্রতি সপ্তাহের এই দিনটিতে বিগত দিনগুলোর কথা চিন্তা করে নিজেকে শুধরে নিতে হবে, একদম নতুন করে সুন্দর ভাবে চলার জন্য ওয়াদা করতে হবে, যেমনটা আদম আঃ নতুন জীবনের সুযোগ পেয়েছিলেন তেমনটা আমাদের ও এই সুযোগ নিতে হবে এবং কাজে লাগাতে হবে।

এখন অনেকেই জানতে চান জুমুআকে জুমুআ বলা হয় কেন,এর উত্তরে বিভিন্ন মতামত আছে।তার মধ্যে একটি হচ্ছে এই যে এই দিন আল্লাহ পাক আদম আঃ কে সৃষ্টির জন্য মাটি জড়ো করেন, যেখান থেকে এসেছে জামা’আ এবং পরবর্তীতে জুমুআ।আরেকটা অর্থ হচ্ছে একত্রিত করা যেমনটা আমরা জুমুআর নামাজকে কেন্দ্র করে একত্রিত হয়ে থাকি।আর এই জুমার দিনটিকে আল্লাহ পাক কুরআনুল কারীমে উল্লেখ করেছেন, আল্লাহ পাক বলেন,

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا نُودِىَ لِلصَّلَوٰةِ مِن يَوۡمِ ٱلۡجُمُعَةِ فَٱسۡعَوۡاْ إِلَىٰ ذِكۡرِ ٱللَّهِ وَذَرُواْ ٱلۡبَيۡعَۚ ذَٰلِكُمۡ خَيۡرٌ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ
” হে মুমিনগণ! জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।”
[সূরা আল জুমুআ:০৯]

এই আয়াতের খেয়াল করার মতো একটা শব্দ হচ্ছে فَاسْعَوْا যার অর্থ ত্বরিত হ‌ওয়া, বেগবান হ‌ওয়া, দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়া আর এই এগিয়ে যাওয়ার প্রকৃতি কিরূপ হবে?
এ ব্যাপারে তাফসিরকারীগণ বলেন,জুমুআর দিকে এই এগিয়ে যাওয়া শুধু শারীরিকভাবেই না বরং মানসিকভাবে এগিয়ে যাওয়াকে বুঝিয়েছে। স্বয়ং নবীজী সা. জুমার দিন নম্র ভদ্র বিনয়ী হয়ে আদবের সাথে মসজিদে আসতে নির্দেশ দিয়েছেন,তবে আল্লাহ পাক কেন তাড়াহুড়োর কথা বললেন?

এই তাড়াহুড়ো আপনার শারীরিকভাবে হৈহুল্লোড় করে,অস্থির হয়ে ছুটে যাওয়ার কথা বলেনি বরং বলা হয়েছে আপনাকে জুমার নামাজের দিকে আত্মিকভাবে অগ্রসর হ‌ওয়ার ব্যাপারে,আপনাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে যে আজ জুমার দিন, আপনার নামাজ আছে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনাকে এজন্য পার্থিব কাজকর্মের উপরে সালাতকে অগ্রগামী করতে হবে, আপনাকে সময় হলেই সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

ইহকালীন জীবনেই শুধু জুমুআ গুরুত্বপূর্ণ না বরং ইহকাল ছাড়িয়ে পরকালের সূচনাতেও দিনটি সমান গুরুত্বপূর্ণ। জুমার দিনের মৃত্যু ও ফজিলতপূর্ণ।
নবীজী ﷺ বলেছেন,
“কোনো মুসলমান শুক্রবারে রাতে কিংবা দিনে ইন্তেকাল করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন।”
[জামে তিরমিজি, হাদীস নং ১০৭৪]

আমরা জুমার দিনের মৃত্যুর জন্য সবাই দুআ করি, এই দিনের মৃত্যু আপনার আমার নাজাতের কারণ হতে পারে। আর এই শুক্রবারের দিন এবং রাত আর এই রাত কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে থেকে‌ই শুরু হয় কেননা আরবি সনে দিন গণনা হয় সন্ধ্যা থেকে।
তাই যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুক্রবার সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত সময়ে মারা যাবে সে ভাগ্যবান, এটা উত্তম মৃত্যুর লক্ষণ বলতে পারেন।

এমনকি জুমার দিন সেই দিন যেদিন আল্লাহ পাক জাহান্নামের আগুনকে উত্তপ্ত হ‌ওয়া থেকে পরিত্রাণ দেন। সপ্তাহের বাকী দিনগুলো জাহান্নামের আগুন উত্তপ্ত থেকে উত্তপ্ততর করা হলেও এই দিনের বিশেষ সম্মানে আল্লাহ পাক জাহান্নামের আগুনকে উত্তপ্ত করেন না। পাশাপাশি আপনি জান্নাতের কথা বলেন, জান্নাতেও জুমার দিনের থাকবে আলাদা মর্যাদা। দুনিয়ার জীবনের মতো এদিনে জান্নাতবাসীরা বিশেষ সুযোগ সুবিধা পাবেন‌। এর মধ্যে একটির ব্যাপারে হাদীসে এসেছে,

নবীজী ﷺ বলেছেন,
“জান্নাতে একটি বাজার থাকবে। প্রত্যেক জুমায় জান্নাতি লোকেরা তাতে একত্রিত হবেন। তারপর উত্তরদিকের মৃদুবায়ু প্রবাহিত হয়ে সেখানকার ধূলা-বালি তাদের মুখমণ্ডল ও পোশাক-পরিচ্ছদে গিয়ে লাগবে। এতে তাদের সৌন্দর্য এবং শরীরের রং আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
তারপর তারা নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরে আসবে। এসে দেখবে, পরিবারের লোকদের শরীরের রং এবং সৌন্দর্যও বহুগুণ বেড়ে গেছে। পরিবারের লোকেরা তাদের বলবে, আল্লাহর শপথ! আমাদের কাছ থেকে যাবার পর তোমাদের সৌন্দর্য বেড়ে গেছে।”
[সহীহ মুসলিম: ২৮৩৩, ১৮৮৯]

সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ায় যেই সম্পদ বাদ দিয়ে জুমার সালাতে সাড়া দেই আমরা তার বিনিময়ে আল্লাহ পাক জান্নাতে আমাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন।যেই জুমার দিনে এই প্রচেষ্টা আমাদের সেই জুমার দিনেই এই সম্মান ও নেয়ামত আসবে আল্লাহর তরফ থেকে। মজার ব্যাপার এই যে, নেয়ামতের এই উত্তরোত্তর বৃদ্ধি সময়ের সাথে সাথে চলতেই থাকবে কেননা জান্নাতের জীবন চিরস্থায়ী।

এবার থাকছে জুমার দিনে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের জন্য সবচেয়ে বড় পুরস্কার,এই দিনের সবচেয়ে বড় নেয়ামত যার ব্যাপারে নবীজী ﷺ বলেছেন,
“দুনিয়ার দিন হিসেবে প্রতি জুমাবার তারা তাদের মালিকের (আল্লাহ তায়ালা) সাক্ষাতে আসবে। তাদের জন্য তার আরশ প্রকাশ করা হবে।”
[জামে তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৪৯]

সুবহানাল্লাহ!
যেই সত্ত্বাকে দেখার জন্য প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর অন্তর আকুল হয়ে আছে প্রতি সপ্তাহের জুমাবারে সেই বিশেষ সুযোগ লাভ হবে জান্নাতে।

এই সকল কিছুই হচ্ছে জুমার দিনের বিশেষত্ব, জুমার দিনের ফজিলত ও রহমত এবং মর্যাদা ও নেয়ামত।তবে এইসকল নেয়ামত ও রহমত তারাই পাবে যারা জুমার দিনকে কাজে লাগাবে, দুনিয়াকে আখিরাতের জন্য ত্যাগ করবে, আল্লাহর নির্দেশ মান্য করবে এবং এভাবে নিজেকে যোগ্য করে তুলবে।

আল্লাহ পাক আমাদের তৌফিক দান করুক আমীন।

লিখেছেন

John Doe

জেনারেল লাইনে পড়াশোনার ব্যস্ততায় দ্বীনি জ্ঞানার্জনের সুযোগ খুবই কম পেয়েছি তারপরও অনলাইন ভিত্তিক দাওয়াহ এবং ইসলামী ব‌ইয়ের সুবাদে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের সুযোগ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
সেই জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ইসলামের সৌন্দর্যকে উম্মাহর সামনে ফুটিয়ে তোলার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমার এই টুকটাক লেখালেখি।

All Posts

জেনারেল লাইনে পড়াশোনার ব্যস্ততায় দ্বীনি জ্ঞানার্জনের সুযোগ খুবই কম পেয়েছি তারপরও অনলাইন ভিত্তিক দাওয়াহ এবং ইসলামী ব‌ইয়ের সুবাদে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের সুযোগ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
সেই জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ইসলামের সৌন্দর্যকে উম্মাহর সামনে ফুটিয়ে তোলার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমার এই টুকটাক লেখালেখি।

Exit mobile version