ছোট বোন মাত্র ৯ বছর বয়স

আমার এক বন্ধুর ছোট বোন, মাত্র ৯ বছর বয়স।
একটা পরিবারের কতই না স্বপ্ন থাকে একটা বাচ্চাকে নিয়ে। কতই না স্মৃতি জমা করে বেড়ে ওঠা শুরু করে পরিবারের মাঝে। সেই কোল থেকে নতুন হাটা শেখা, ছোটাছুটি করা পুরো ঘর ধরে, হাসা হাসি, ব্যাগ কাধে নিয়ে বাবার হাত ধরে স্কুলে যাওয়া, স্কুল থেকে ফেরার পথে এটা ওটা কেনার বায়না করা, কখনো না পেলে গাল ফুলিয়ে অভিমান। কখনো হয়ত বাসায় এসে মায়ের কাছে স্কুলে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার খাতা খুলে বসা। গভীর রাতে বাথরুমে যেতে ভয় পেয়ে বাবা বা মাকে ডেকে তোলা।


এতসব স্মৃতি রেখে কিভাবে বাবা কাধে তুলে নিবে সেই সন্তানের লাশের খাট! কিভাবে শেষ বিদায় দিবে মা তার ছোট্ট বাচ্চাটির লাশকে। কিভাবে বাবা রেখে আসবে সেই অন্ধকার ছোট্ট কবরে একাকী!
ইয়া রব্ব, তুমি এই পরিবারকে ধৈর্য্য ধারণ করার তাওফিক দান করো।

২৮ ডিসেম্বর, রাত ১১ টার দিকে বন্ধু যখন এই ছবিটা ম্যাসেঞ্জারে পাঠালো, বুকের মধ্যে কি একটা আটকে গেল যেন এক মুহুর্তের জন্য।
হারিয়ে ফেলেছিলাম সব ভাষা। আদোও কি স্বান্তনা দেয়ার মত কোনো কথা এখানে আছে?
আজকে ৩০ ডিসেম্বর, বন্ধুর সাথে তার বোনের কবর জিয়ারত করতে গিয়েছিলাম। সে তার বোনের কবরের এক পাশে দাঁড়িয়ে, বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
দোস্ত, কবরের ওপরের মাটি গুলা খুঁড়ে আমার বোনটারে একবার দেখা যাবে না?”


কি হয় এর উত্তর?
আমার জানা নেই।
অনেক কষ্টে বুক চিড়ে বলেছিলাম,
দোস্ত ওকে নিয়ে কেন কষ্ট পাচ্ছিস?
এমন নিষ্পাপ অবস্থায় রব্বের সামনে কয়জন দাড়াতে পারে? ও তো মরে গিয়েই বেচে গেল। হাসতে হাসতে হয়ত এখন জান্নাতের বাগানে ছুটে বেড়াচ্ছে।”
আল্লাহু আলাম।

কত ঠুনকো এই পৃথিবী, কবর নামক ওই স্থানটি তো বয়স বোঝে না, যাকে পায় তাকেই অন্ধকারে তলিয়ে নেয়।
বয়স কত হলো?
৯ থেকে বিয়োগ দেই তো। আমাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা তো ওই বাচ্চা মেয়েটার চেয়ে ১১ বছর বেশি এই দুনিয়ার সব নিয়ামত ভোগ করার সুযোগ দিয়েছেন। পেরেছি কি আমি আমার কবরের আলোর ব্যবস্থা করতে?
কি বলে আমার আমল নামা?
হায়!

লিখেছেন মৃত্যুর কোনও বয়স নেই গ্রুপ এর
আকিব আবদুল্লাহ ভাই

Exit mobile version