কুরআন আল্লাহ সম্মানিত বাণী সমষ্টি ও দুনিয়ার সবচেয়ে সম্মানিত গ্রন্থ। সুতরাং প্রতিটি মুসলিমের জন্য তার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান বজায় রাখা অপরিহার্য। কোনোভাবে যেন তার মানহানি না হয় সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সর্তকতা অবলম্বন করা জরুরি।
কিন্তু আমাদের অসতর্কতাবশত যদি তাতে কখনো পায়ের স্পর্শ লেগে যায় তাহলে করণীয় হল, এজন্য লজ্জিত অন্তরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। কারণ সম্মানিত জিনিসে পায়ের স্পর্শ লাগাকে তার প্রতি অবমাননা ও বেয়াবদি হিসেবে গণ্য করা হয়।
কিন্তু অনিচ্ছা বশত: কোন ভুল বা অন্যায় আচরণ করে ফেললে দয়াময় আল্লাহ তার গুনাহ লিখেন না। সুতরাং এখানেও তিনি গুনাহ লিখবেন না বলে আশা করা যায়। তারপরও এই অনিচ্ছাবশত: ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে বিনীত ভাবে ক্ষমা চেয়ে নেয়া নি:সন্দেহে উত্তম।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُم
“ভুলক্রমে তোমরা যা করে ফেল সে সম্পর্কে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই। কিন্তু তোমাদের অন্তর যার ইচ্ছা করে তার কথা ভিন্ন।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫]
তিনি আরও বলেন,
رَبَّنا لا تُؤاخِذنا إِن نَسينا أَو أَخطَأناّ
“হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা যদি ভুলে যাই কিংবা হঠাৎ অনিচ্ছাবশত: কোন ভুল করে ফেলি তবে আমাদেরকে ধরিও না।”
[সূরা বাকারা: ২৮৬]
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
«إِنَّ اللَّهَ قَدْ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ ، وَالنِّسْيَانَ ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ»
“আমার উম্মতের হঠাৎ ঘটে যাওয়া ভুল, স্মরণ না থাকার কারণে ঘটে যাওয়া অন্যায় এবং জোরজবরদস্তি করে কৃত অপরাধকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।” [ইবনে মাজাহ: ২০৪৩; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৭১৭৫, বায়হাকি-হাসান]
আর আগামীতে আমাদের চলাফেরার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি যেন, কোনোভাবেই আল্লাহর কালামের প্রতি অসম্মান প্রদর্শিত না হয়।
তবে কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে কুরআনকে পদদলিত বা পদাঘাত করে (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক) তাহলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে বা মুরতাদ বলে পরিগণিত হবে।
ইসলামি আইনে কুরআন অবমাননাকারী শাস্তি মৃত্যুদণ্ড-বিজ্ঞ আলেমদের মাঝে এ বিষয়ে কোনও দ্বিমত নাই। তবে যদি এই অন্যায় কর্মের ব্যাপারে লজ্জিত হয়ে আল্লাহর দরবারে খাঁটিভাবে তাহলে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল।
আল্লাহু আলাম