কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আল্লাহ তাআলা সমস্ত মখলুকের পুনরুত্থান করবেন। কিয়ামতের দিনটি এত কঠিন ও বিপদময় হবে যে, মানুষের মনে একে অপরের প্রতি তাকাবারও খেয়াল হবে না। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَوْمَ تُبَدَّلُ الْأَرْضُ غَيْرَ الْأَرْضِ وَالسَّمَاوَاتُ
“যে দিন পরিবর্তিত করা হবে এ জমিনকে অন্য জমিনে এবং পরিবর্তিত করা হবে আসমান সমূহকে।”
[সূরা ইবরাহীম: ৪৮]
পৃথিবী ও আকাশ পাল্টে দেয়ার এরূপ অর্থও হতে পারে যে, তাদের আকার ও আকৃতি পাল্টে দেয়া হবে; যেমন কুরআনুল কারিমের অন্যান্য আয়াত ও হাদিসে আছে যে, সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠকে একটি সমতল ভূমিতে পরিণত করে দেয়া হবে। এতে কোন গৃহের ও বৃক্ষের আড়াল থাকবে না এবং পাহাড়, টিলা, গর্ত, গভীরতা কিছুই থাকবে না।
এ অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা’আলা বলেন,
فَيَذَرُهَا قَاعًا صَفْصَفًا- لَّا تَرَىٰ فِيهَا عِوَجًا وَلَا أَمْتًا
“অতঃপর পৃথিবীকে মসৃণ সমতলভূমি করে ছাড়বেন। তুমি তাতে মোড় ও টিলা দেখবে না।”
[সূরা ত্বা-হা: ১০৬ ও ১০৭]
অর্থাৎ গৃহ ও পাহাড়ের কারণে বর্তমানে রাস্তা ও সড়ক বাঁক ঘুরে ঘুরে চলেছে। কোথাও উচ্চতা এবং কোথাও গভীরতা দেখা যায়। কেয়ামতের দিন এগুলো থাকবে না, বরং সব পরিষ্কার ময়দান হয়ে যাবে।
[উৎস: তাফসিরে জাকারিয়া- সামান্য পরিবর্তিত]
সাহল ইবনে সাদ সাঈদ রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে,
يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى أَرْضٍ بَيْضَاءَ عَفْرَاءَ كَقُرْصَةِ نَقِيٍّ لَيْسَ فِيهَا مَعْلَمٌ لأَحَدٍ
“কেয়ামতের দিন সকল মানুষকে একটি চেপটা গোলাকার স্বচ্ছ রুটির ন্যায় (সমতল এবং কিছুটা লালাভ বর্ণের) শুভ্র ভূমিতে একত্রিত করা হবে।”
সাহল (বা অন্য কেউ) বলেছেন, “তাতে কোনও (রাস্তা-ঘাট, পাহাড়-পর্বত, টিলা-উপত্যকা, ঘরবাড়ি ইত্যাদি কোনও কিছুর) চিহ্ন থাকবে না।”
[সহীহুল বুখারি, অধ্যায়: সদয় হওয়া]
قال عياض: (العفر: بياض يضرب إلى حمرة قليلاً، ومنه سمي عفر الأرض وهو وجهها)
আল্লাহু আলাম।