Writing

কিছু দুরত্ব থাক গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য

-মানুষটাকে এত ভালোবাসার পরেও ছেড়ে দিলেন কেনো?
-আল্লাহর ভয়ে!
-অনুতাপ হয়না একটুও শুধু শুধু একটা জীবন এলোমেলো করে দিলে এভাবে।
-অনুতপ্ত তো হই, যখন চিন্তা করি কেনো আরো আগে ছেড়ে দিলাম না হারাম সম্পর্কটাকেশয়তানের ধোকায় পড়ে কিভাবে আমি পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়ে নিজে গোনাহ করার পাশাপাশি আরেকটা মানুষকেও গোনাহ করতে উৎসাহিত করেছিলাম এত দিন এই কথা ভেবে।
-এ কথা সম্পর্কে জড়ানোর আগে কেনো মনে ছিলো না।

-বলছি তো,শয়তানের ওয়াসওয়াসাতে হারাম সম্পর্কটাকেহালাল মনে হতো কোন অশ্লীল কথা বলতাম না বলে দুজনে।
-তাকে এভাবে কষ্ট দেওয়ার কারণে সে যদি ক্ষমা না করে কখনো?
-তাতে কি?
দিনশেষে তো এ কথা নিজেকে বলতে পারি নিজের নফসকে তৃপ্তি দেওয়ার চেয়ে রবের সন্তুষ্টি-ই আমার কাছে প্রাধান্য পেয়েছে বেশি আলহামদুলিল্লাহ

-যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার পর কষ্ট হয় না?
-হ্যাঁ! কষ্ট হয়, কান্না পায়, চিৎকার আসে। কথা বলতে ইচ্ছেও করে। যখন কথা বলতে ইচ্ছে করে তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবি আল্লাহ আমাকে দেখছে দূর্বল হওয়া যাবে না।
শক্ত হতে পারলেই বিনিময়ে জান্নাত মিলতে পারে। আর এই কষ্টের বিনিময়ে যদি আল্লাহ আমাকে উত্তম প্রতিদান দেয় সেটা কি হারাম বস্তুর থেকে মূল্যবান নয়?

-মাঝে মাঝে খোঁজ নিলেই তো পারো। দুইজনই তো কষ্ট পাচ্ছো। এভাবে আর কতদিন চলবে?
-খোঁজ নিতে চাওয়াও শয়তানের একটা ধোকা। মানুষটাকে আল্লাহর জন্যেই ছেড়ে দিয়েছি আল্লাহই বিচার করুক না। আর মানুষটা যদি আমার জন্য কল্যাণকর হয় তাহলে তাকেই যেন আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে আল্লাহ কবুল করে তার জন্য তো তাহাজ্জুদে দোয়া করতেই থাকি। দেখি না অপেক্ষার ফল কেমন হয়।

আমি না হয় শক্ত হয়ে আল্লাহর ফয়সালার জন্যেই অপেক্ষা করি। নিশ্চয়ই আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী।

আমি যা চাই সেটা যদি আমার জন্য কল্যাণকর না হয় সেটা আল্লাহ আমাকে দিবে না। আর আমার চাওয়া বস্তুটি যদি না পাই তবুও আমি খুশি কারণ একটাই এ আমার আল্লাহর ইচ্ছের ফলাফল যাতে আমার জন্য কোন অকল্যাণ নেই।
আর আমি হতাশ নই, নিজেকে নিজে সান্ত্বনা যে দিতে পারে তার আর কাউকে লাগে না আল্লাহ ব্যতিরেকে!

-কিভাবে এত শক্তি পাও?

মন খারাপ লাগলেই নিচের দুইটি হাদিস পড়ি।

আপনি যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোন কিছুকে ত্যাগ করেন, তাহলে আল্লাহ তার পরিবর্তে আপনাকে এমন কিছু দান করবেন যা পাওয়ার কথা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না!
আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনে বলেছেন:

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّمَن فِي أَيْدِيكُم مِّنَ الأَسْرَى إِن يَعْلَمِ اللّهُ فِي قُلُوبِكُمْ خَيْرًا يُؤْتِكُمْ خَيْرًا مِّمَّا أُخِذَ مِنكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে নবী, তাদেরকে বলে দাও, যারা তোমার হাতে বন্দী হয়ে আছে যে, আল্লাহ যদি তোমাদের অন্তরে কোন রকম মঙ্গলচিন্তা রয়েছে বলে জানেন, তবে তোমাদেরকে তার চেয়ে বহুগুণ বেশী দান করবেন যা তোমাদের কাছ থেকে বিনিময়ে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া তোমাদেরকে তিনি ক্ষমা করে দিবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
(সূরা আনফাল:৭০)


“যদি আল্লাহ তোমাদের অন্তরসমূহে কোন কল্যাণ আছে বলে জানেন, তাহলে তোমাদের থেকে যা নেয়া হয়েছে, তার চেয়ে উত্তম কিছু দেবেন”।
(সূরা আনফাল:৭০)

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“তুমি যদি আল্লাহর ভয়ে কোন কিছু ত্যাগ করো, তবে আল্লাহ তোমাকে তার চাইতে উত্তম কিছু প্রদান করবেন।”
(শুআবুল ইমান : ৫৩৬৪)

লেখাটা তাদের জন্য যারা হারাম রিলেশনশিপ থেকে বের হয়ে আসার পর নিজের মনোবল ধরে রাখতে পারছেন না।

আপনি ইচ্ছা করলে হিদায়াত যেভাবে হারিয়ে যায় লিখাটাও পড়ে দেখতে পারেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture