কবরস্থান

বিবিসির একটা প্রতিবেদন দেখছিলাম, শিরোনাম
ঢাকা শহরে কবর দিতে কি করতে হবে? খরচ কতো?”
কোটি কোটি মানুষের এই শহরে মৃত্যুর পরেও এক টুকরো “সাড়ে তিন হাত” মাটির মূল্য কতো তা নিয়েই মূল আলোচনা। কতো দিন পর মৃতের চিহ্ন মুছে যাবে, যদি বছরকে বছর চিহ্ন ধরে রাখতে হয় তবে কতো টাকা খরচ করতে হবে, দাফন করতে ও “বখশিশ” দিতে হয় কিনা ইত্যাদি। দেখছিলাম আর এলোমেলো চিন্তায় ঘুরপাক খাচ্ছিলাম।

কতোটা তুচ্ছ আমি যে এই মাটিতে সরকারিভাবে দাফন হলে মাত্র বছর দুয়েক হয়তো আমার কবরের অস্তিত্ব থাকবে, এরপর জং ধরা এপিটাফের স্তুপে পরিচয়টা হারিয়ে যাবে চিরতরে! কতো তুচ্ছ আমি যে জায়গা সংকুলান না হলে হয়তো কবরস্থান ঘুরে ঘুরে বেড়াতেও হতে পারে! কতোটা তুচ্ছ আমি যে আমার দাফনের বাঁশ, কাপড় নিয়েও সুযোগ বুঝে বাণিজ্য হয়, বখশিশের জন্য মুলামুলি হয়। এই সব জায়গাতেই “আমি” কিন্তু শুধু আমি না আমরা সবাই, কারণ মৃত্যুর স্বাদ সবাইকেই নিতে হবে।

যেই দেহ তার পরিচয় পরিবর্তন করে লাশ হলেই মূল্য হারায়, মাটিতে একটু জায়গা পেতেও যাকে এতোটা তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাকে তৃপ্ত রাখতে কতো কিছু‌ই না করি-হোক তা ন্যায় কিংবা অন্যায়। মাটির দেহ মাটির ঘরে ফিরে যাবে যার উপর আছে সেই মাটির সৃষ্টিকর্তার হক, যিনি উত্তম অবয়বে সাজিয়ে গুছিয়ে আমাদের পাঠিয়েছেন তাঁর জমিনে। তবে কেন‌ই বা সে দেহের উপর এতো জুলুম, নফসের উপর এতো অত্যাচার!

অহংকারে শক্ত হয়ে থাকা হৃদয় যে জান্নাতে যাবে না তা জানার পরেও কেন আমাদের অহংকার বিন্দুমাত্র কমতে চায় না! হয়তো এজন্যই যে কবরস্থানে দাফন কাফন ছাড়া আমাদের যাওয়া আসা নাই। নবীজি ﷺ ঠিকই “দুনিয়াবিমুখীতা” অর্জনের জন্য কবর জিয়ারত করতে বলেছেন।একটা বার দু’চোখে কবরগুলো দেখে যদি চোখ বুজে তাদের অবস্থা ও পরিণতির কথা চিন্তা করি তবে আমলনামার চিন্তায় রাতের ঘুম‌ও পালিয়ে যেতে বাধ্য।

লিখেছেন

জেনারেল লাইনে পড়াশোনার ব্যস্ততায় দ্বীনি জ্ঞানার্জনের সুযোগ খুবই কম পেয়েছি তারপরও অনলাইন ভিত্তিক দাওয়াহ এবং ইসলামী ব‌ইয়ের সুবাদে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের সুযোগ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
সেই জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ইসলামের সৌন্দর্যকে উম্মাহর সামনে ফুটিয়ে তোলার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমার এই টুকটাক লেখালেখি।

Exit mobile version