কোন ঈমানদার বা আল্লাহ বিশ্বাসী ব্যক্তি যদি একথা বলে তাহলে এতে কোন সমস্যা নেই। কেননা সে মহান আল্লাহকে সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ কারী ও পরিচালক বলে মনে করে। সে বিশ্বাস করে যে, নদী, সাগর, বাতাস বা প্রকৃতির নিজস্ব কোন শক্তি নেই আল্লাহর শক্তি ছাড়া। এসব কোন কিছুই আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া পরিচালিত হয় না।
প্রমাণ হল, তাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় যে, নদী কি নিজস্ব ক্ষমতায় ঘরবাড়ি ভেঙেছে নাকি আল্লাহর হুকুমে? তাহলে সে অবশ্যই উত্তরে বলবে, একমাত্র আল্লাহর হুকুমেই তা হয়েছে।
প্রকৃত পক্ষে, এভাবে বাক্য ব্যবহার করা ভাষা সাহিত্যের একটি রীতি। আরবি, বাংলা সহ সব ভাষাতেই এমন রূপক বাক্য ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
شيبتني هود والواقعة والمرسلات، وعم يتساءلون، وإذا الشمس كورت
“সূরা হুদ, সূরা ওয়াকিয়াহ, সূরা মুরসালাত, সূরা নাবা ও সূরা কুব্বিরাত (সূরা সমূহের বর্ণিত কেয়ামতের বিভীষিকাময় বর্ণনা) আমাকে বৃদ্ধ বানিয়ে দিয়েছে।”
[তিরমিযী, হা/ ৩২৯৭]
আরবি সাহিত্যে এ জাতীয় বাক্যের প্রচুর ব্যবহার রয়েছে। যেমন:
أنبت الربيع البقل…
أنبت البقل شباب الزمان، وأحيا الأرض الربيع
قال أبو العتاهية:
فيَا لَيتَ الشّبابَ يَعُودُ يَوْماً .. فأُخبرَهُ بمَا فَعَلَ المَشيبُ
এ ধরনের ভাষা ব্যবহারকে আরবি সাহিত্যে মাজায বা রূপক বলা হয়।
কবি নজরুল বলেছেন, “হে দারিদ্র্য তুমি মোরে করেছ মহান।” (কবিতা: দারিদ্র)
আমরাও অনেক সময় বলে থাকি, “কালবোশেখীর ভয়াবহ তাণ্ডব সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষকে ভিখারি তে পরিণত করেছে।”
আল্লাহতে বিশ্বাসী কোন মুমিন ব্যক্তি রূপক অর্থে এই জাতীয় বাক্য ব্যবহার করলে তাতে কোন দোষ নেই ইনশাআল্লাহ।
অবশ্য কোন নাস্তিক বা আল্লাহতে অবিশ্বাসী ব্যক্তি এমন কথা বললে অবশ্যই তা শিরক।
সুতরাং এমন বাক্যকে এককথায় শিরকি বাক্য বলা যাবে না।
তবে প্রাকৃতিক বিপর্যয় যথা ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদিতে আমাদের উচিত, আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, বেশি বেশি ইস্তেগফার করা এবং নিজেদের ভুল ত্রুটিগুলো সংশোধন করে আল্লাহর পথে ফিরে আসা। এ সব অভিমানী গান গেয়ে কোন লাভ নেই। আর তাতে যদি মিউজিকের মিশ্রণ ঘটে তাহলে তা নিঃসন্দেহে হারাম।
আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন।